বৃহস্পতিবার মেদিনীপুরের সভা সেরে হেলিকপ্টারে পুরুলিয়ায় সরকারি পরিষেবা প্রদান অনুষ্ঠানে যান রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা ব্যানার্জি। সভায় মাঠ ভরাতে নিয়ে আসা হয় জেলার বিভিন্ন প্রান্তের স্কুল পড়ুয়া ছাত্রছাত্রীদের। বাসে চাপিয়ে তাদেরকে এনেই মাঠ ভরালো প্রশাসন। এদিন ছাত্র-ছাত্রীদের এনে মাঠ ভরিয়ে ৪৬টি প্রকল্পের শিলান্যাস অনুষ্ঠান সারলেন মমতা ব্যানার্জি! করোনার সংক্রমণের কারণে টানা দু’বছর বিদ্যালয়ের মুখ দেখতে পারেনি ছাত্র-ছাত্রীরা। পরিস্থিতি স্বাভাবিক হওয়ার পর চালু হয়েছে পঠনপাঠন। জানুয়ারি মাস থেকে সবে শুরু হয়েছে নতুন শিক্ষাবর্ষ। তারমধ্যেই মমতা ব্যানার্জির সভা ভরাতে স্কুল থেকে ছেলেমেয়েদের তুলে নিয়ে যাওয়া হলো মমতা ব্যানার্জির সরকারি সভায়। এদিন মাত্র এক ঘন্টা কুড়ি মিনিট ছিলেন মুখ্যমন্ত্রী।
তার জন্য তৈরি করা হয়েছিল রাজকীয় মঞ্চ। মাত্র কিছুক্ষণের সভার জন্য ব্যয় হয়ে গেল প্রায় কোটি টাকা। নিট ফল শূন্য। চর্চিত কথাই আরেকবার বলে গেলেন রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী। ভাষণ দিতে দিতে বলেই ফেললেন জীবনানন্দ দাশ রূপসী বাংলা কবিতা লিখেছিলেন পুরুলিয়াকে দেখে। জীবনানন্দ দাশ আদৌ কোন দিন পুরুলিয়া আসেননি। বক্তব্যের শেষে তিনি বলে উঠলেন এক মিনিটের মধ্যে জাতীয় সংগীত গাইতে হবে। সাধারণ মানুষের প্রশ্ন জাতীয় সংগীত গাইবার জন্য কত সময় নির্ধারিত সেটা কি রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী জানেন না।
মুখ্যমন্ত্রীর সভার রাজকীয় মঞ্চ
মেদিনীপুর থেকে আকাশ পথে মুখ্যমন্ত্রী এসে পৌঁছেছিলেন পুরুলিয়া দু নম্বর ব্লকের হুটমুড়া ময়দানে। জেলার বিভিন্ন প্রান্ত থেকে স্কুল পড়ুয়া ছাত্র-ছাত্রী, স্বনির্ভর দলের মহিলা সদস্যদের, বিভিন্ন সমবায় সমিতির প্রতিনিধিদের নিয়ে এসে সভাস্থল ভরানো হয়েছিল। মঞ্চ থেকে এদিন তিনি জেলার ৪৯টি প্রকল্পে উদ্বোধন করেন যার ব্যয় হয়েছে ১৭২ কোটি ৭৫ লক্ষ টাকা। পাশাপাশি ৪৬টি প্রকল্পের শিলান্যাস করেন মুখ্যমন্ত্রী। ভাষণ জুড়ে ছিল তিনি সব করে দিয়েছেন ধ্বনি। তার জন্যই নাকি পলাশ ফুল থেকে আবির তৈরি হচ্ছে পুরুলিয়া জেলায়। মাধ্যমিক, মাদ্রাসা পরীক্ষা শুরু হবে তাই তড়িঘড়ি তিনি পরিষেবা দিতে এসেছেন। তিনি যদি না আসতেন তাহলে সবুজ সাথী সাইকেল কিংবা লক্ষ্মীর ভান্ডার পরিষেবা আটকে যেত।
মুখ্যমন্ত্রী ঘোষণা করেন পুরুলিয়াতে কুড়মি ভবন হবে। তার দাবি মানুষের সেবা তারাই করছেন। বিজেপির সমালোচনা করে তিনি বলেন ওরা লোক ভাড়া করে দাঙ্গা বাধায়। কেন্দ্রীয় সরকারের টাকা দিচ্ছে না তাই গরিব মানুষ ঘর পাচ্ছেন না। জেলার শিল্পায়ন প্রসঙ্গে তিনি পুরনো কথাই ফের একবার ঘোষণা করে গেলেন রঘুনাথপুরে ৭২ হাজার হাজার কোটি টাকার জঙ্গলসুন্দরী কর্মনগরী গড়ে তোলা হবে। প্রচুর শিল্প নাকি সেখানে আসছে। কিন্তু কোন কারখানার চিমনি থেকেই আর ধোঁয়া ওড়ে না।
Comments :0