মঙ্গলবার রাত থেকে টানা বৃষ্টিতে বিপর্যস্ত সিকিম। পশ্চিমবঙ্গ এবং সিকিম লাইফলাইন ১০ নম্বর জাতীয় সড়ক বন্ধ সকাল থেকে। একাধিক জায়গায় ধসের খবর মিলেছে। প্রাকৃতিক দুর্যোগের কারণে একাধিক সেনা ছাউনি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। প্রবল বৃষ্টিতে হড়পা বানে ২৩ জন সেনা জওয়ান নিখোঁজ হওয়ার খবর পাওয়া গিয়েছে।
উত্তর সিকিমের লোনাক হ্রদে মেঘভাঙা বৃষ্টিতে জলস্তর বেড়ে ভয়ঙ্কর রূপ নিয়েছে লাচেন উপত্যকার তিস্তা নদী। এর মধ্যেই তিস্তায় তলিয়ে যাওয়া তিনজনের দেহ উদ্ধার করেছে এনডিআরএফ।
সিকিমে প্রাকৃতিক আটকে আছেন বহু পর্যটক। প্রায় দুই সহস্রাধিক পর্যটক আটকে পড়েছেন। পর্যটকদের সুবিধার্থে ০৩৩২২১৪৩৫২৬/১০৭০ এই নম্বরে কন্ট্রোল রুম খোলা হয়েছে।
ভারী বর্ষণে উত্তর সিকিমের চুংথামে ভেঙে পড়েছে জলবিদ্যুৎ প্রকল্পের বাঁধ। বিপত্তির জেরেই হু-হু করে প্রবল বেগে বয়ে চলেছে তিস্তা। উত্তর সিকিমে বন্যা পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়েছে। জলস্তর প্রায় ১৫ থেকে ২০ ফুট বৃদ্ধি পেয়েছে। স্বাভাবিকের চাইতে ৩০—৩৫ ফুট ওপর দিয়ে তিস্তার জল বয়ে চলার আশঙ্কা রয়েছে। দুই-তিনতলা বেশ কিছু বাড়ি ঘর ঝুলছে। গোটা উত্তর সিকিমের বিস্তীর্ণ এলাকা তছনছ হয়ে গেছে। তিস্তা নদীর জলের স্রোতে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে সিকিমের চুঙথাঙ ও মঙ্গন জেলার যোগাযোগের মূল বাঁধটি। জলের তোড়ে সম্পূর্ণভাবে উড়ে গিয়েছে বাঁধটি। সিংটাম, ইন্দ্রেনী ফুটব্রিজও ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।
উত্তর সিকিমের মঙ্গন জেলার পুলিশ সুপার সোনম দেচু জানিয়েছেন, জেলা জুড়ে চরম সতর্কতা জারি করা হয়েছে। নিচু জায়গা সহ নদী তীরবর্তী এলাকার সমস্ত থানাগুলিকে সতর্ক থাকতে বলা হয়েছে। যুদ্ধকালীন তৎপরতায় তিস্তা নদীর পার থেকে নিরাপদ দূরত্বে সরিয়ে নিয়ে যাওয়া হচ্ছে বাসিন্দাদের। সিংটাম এবং রঙপোর নদী তীরের বাসিন্দাদের ইতোমধ্যেই উঁচু জায়গায় সরিয়ে আনা হয়েছে বলে জানিয়েছেন গ্যাঙটকের পুলিশ সুপার তেনজিং লোডেন লেপচা। তিনি জানান, পরিস্থিতির মোকাবিলায় বিপর্যয় মোকাবিলা বাহিনী নামানো হয়েছে। উদ্ধার কার্য এবং ত্রাণ পৌঁছে দেবার কাজ শুরু হয়েছে।
পরিস্থিতির ক্রমাবনতি ঘটায় শিলিগুড়ি থেকে গ্যাঙটক যোগাযোগের নামচি, জোরথাং, টাকভার ও দার্জিলিঙ হয়ে যান চলাচলও প্রশাসনের তরফে বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে।
Comments :0