প্যালেস্তাইন এনার্জি অথরিটির চেয়ারপার্সন থাফের মেলহেম ‘ভয়েস অফ প্যালেস্তাইন’ রেডিও চ্যানেলকে বুধবার জানিয়েছেন, ‘‘বুধবার বিকেলের মধ্যে গাজার বিদ্যুৎকেন্দ্রটি বন্ধ হতে চলেছে। আমাদের কাছে পর্যাপ্ত জ্বালানী নেই। এরফলে গোটা গাজা ভূখণ্ড আঁধারে তলিয়ে যেতে চলেছে। সমস্ত অত্যাবশ্যকীয় পরিষেবার জন্য বিদ্যুৎ প্রয়োজন। বিদ্যুৎ-বন্ধ হয়ে গেলে অপারেশন থিয়েটারগুলিও স্তব্ধ হয়ে যাবে।’’
গাজার বিদ্যুৎ দপ্তরের বার্তা, ‘‘এই ভয়ঙ্কর পরিস্থিতির জন্য গাজার প্রতিটি বাসিন্দার জীবন আজ সঙ্কটে।’’ একইসঙ্গে ইজরায়েলের এই দখলদারীকে ‘সাম্প্রতিক সময়ের ইতিহাসে নিরস্ত্রত জনগোষ্ঠীর বিরুদ্ধে সংগঠিত জঘন্যতম অপরাধ’ হিসেবেও চিহ্নিত করা হয়েছে এই বার্তায়।
এই বার্তায় আন্তর্জাতিক মহলকে আবেদন জানানো হয়েছে, ‘এই গণহত্যা রোধে উপযুক্ত ব্যবস্থা নেওয়ার’।
গাজা’র স্বাস্থ্যমন্ত্রী মাই আল-কাইলা বুধবার জানিয়েছেন, ‘‘গাজা’র হাসপাতালগুলির জেনারেটরের জ্বালানী বৃহস্পতিবার শেষ হয়ে যাবে। হাসপাতালগুলিতে এখনই ভয়ঙ্কর অবস্থা। আমরা কল্পনাও করতে পারছি না বৃহস্পতিবার থেকে ঠিক কোন পরিস্থিতির মুখোমুখি হতে হবে আমাদের।’’
হামাসের হামলার পালটা জবাব হিসেবে সোমবার থেকে গাজা’র বিদ্যুৎ সংযোগ ছিন্ন করে দিয়েছে ইজরায়েল। ইজরায়েলের প্রতিরক্ষামন্ত্রী ইওয়াভ গ্যালান্ট সোমবার বিবৃতি দিয়ে জানিয়েছিলেন, ‘‘ আমরা গাজাকে সম্পূর্ণ ভাবে অবরুদ্ধ করতে চলেছি। বিদ্যুৎ, খাবার, পানীয় জল, জ্বালানী গ্যাস- কোনও কিছু গাজায় ঢুকতে দেব না!’’
এর প্রতিক্রিয়ায় মঙ্গলবার প্যালেস্তাইন লিবারেশন অর্গানাইজেশন(পিএলও)’র কার্যকরী কমিটির সাধারণ সম্পাদক হুসেন আল-শেখ জানিয়েছেন, ‘‘আমরা আন্তর্জাতিক মহলের কাছে হস্তক্ষেপের আবেদন জানাচ্ছি। এই আগ্রাসন বন্ধ হওয়া প্রয়োজন। আন্তর্জাতিক মহলকে উদ্যোগ নিতে হবে যাতে গাজায় মানবিক প্রয়োজনে ত্রাণ পাঠানো যায়। মানবিক বিপর্যয় ঠেকাতে, ভূখণ্ডের মানুষ যাতে বিদ্যুৎ এবং পানীয় জলের সংযোগ ফিরে পান, সেটাও সুনিশ্চিত করা প্রয়োজন।
২০০৭ সাল থেকে গাজা’কে অবরুদ্ধ করে রেখেছে ইজরায়েল। মাত্র ৩টি সীমান্ত চৌকি হয়ে গাজায় ঢোকা সম্ভব। তারমধ্যে একটি মিশর সীমান্তে অবস্থিত। এই তিনটি পথ দিয়েই গাজায় যাবতীয় পণ্য প্রবেশ করে। সোমবার থেকে এই তিনটি প্রবেশ পথও বন্ধ করে দিয়েছে ইজরায়েল সেনা। একইসঙ্গে ইজরায়েল মিশরকে বার্তা দিয়েছে, গাজায় ত্রাণ পাঠানোর চেষ্টা করলে ‘গুড়িয়ে’ দেওয়া হবে। এক প্রকার গোটা বিশ্বের থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছে এই ভূখণ্ড। তারমধ্যেই অবিরাম বোমা বর্ষণ করে চলেছে ইজরায়েলের বিমান বাহিনী। মৃত্যুর সঙ্গে ঘর করছেন ভূখণ্ডের ২৩ লক্ষ বাসিন্দা, যাঁদের একটা বড় অংশ মহিলা এবং শিশু।
Comments :0