ঘেরাও থেকে বাদ গেল না ফোর্ড, জেনারেল মোটর্স কারখানার গেট। শ্রমিক বিক্ষোভ ঠেকাতে পারল না বিশ্বখ্যাত আরেক গাড়ি নির্মাতা সংস্থা জিপ। ধর্মঘটে শামিল প্রায় ১৩ হাজার শ্রমিক।
শুরু করেছেন ডেট্রয়েট কেন্দ্রিক মোটর গাড়ি কারখানার শ্রমিকরা। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের পর পর শহরে চলছে বিক্ষোভ। সাম্প্রতিক সময়ে শীর্ষ স্তরের তিন কারখানার শ্রমিক প্রতিনিধিরা বেতন চুক্তি প্রত্যাখ্যান করলেন এক সঙ্গে। পর্যবেক্ষকরা বলছেন, ৮৮ বছরে এমন একজোটে বিক্ষোভের চেহারা দেখেনি আমেরিকার গাড়ি শিল্প।
বাজারে মন্দার কারণ দেখিয়ে বারবার শ্রমিকদের ন্যায্য পাওনা থেকে বঞ্চিত করার অভিযোগে সরব শ্রমিক ইউনিয়ন। ট্রেড ইউনিয়নের প্রতিনিধিরা বলছেন, মুনাফার খাতা দেখলে মোটা অঙ্কের হদিসই মিলছে। লভ্যাংশ হিসেবে মোটা টাকা ঘরে তুলছেন বিনিয়োগকারীরা। সিইও-দের বেতনও আকাশছোঁয়া। সঙ্কট মনে পড়ে কেবল শ্রমিকরা দাবি জানালে!
ওয়েন্টজভিলে জেনারেল মোটরসের সরঞ্জাম অ্যাসেম্বলি কারখানায় ঘেরাও করেন শ্রমিক ইউনিয়নের কর্মীরা। ডেট্রয়েটের কাছে মিশিগানে ওয়েনে ফোর্ড কারখানার গেটেও এক দৃশ্য। ওহিও’তে স্টেলানটিস জিপ কারখানাতেও ভেঙে পড়ে শ্রমিকদের বিক্ষোভ।
শুক্রবারই শেষ হয়েছে চার বছরের বেতন চুক্তি। নিয়ম অনুযায়ী নতুন চুক্তি চূড়ান্ত হওয়ার কথা। শ্রমিকরা বলেছেন, ইউনিয়নের তরফে যে দাবি পেশ করা হয়েছে মালিকপক্ষ তার ধারেকাছেও যাচ্ছে না।
গাড়ি শিল্প বিশারদদের একাংশ বলছেন সময় খুব গুরুত্বপূর্ণ। কারণ জীবাশ্ম জ্বালানি ছেড়ে পুনর্বীকরণযোগ্য জ্বালানিতে নিতে হবে গাড়ি শিল্পকে। পেট্রোল-ডিজেল-গ্যাস ছেড়ে ব্যাটারিচালিত গাড়ির উৎপাদন কয়েকগুন বাড়ানোর লক্ষ্য রয়েছে সব সংস্থার। এই সময়ে ধর্মঘট করার দিকে শ্রমিকদের যেতে বাধ্য করা হলো। সামনের বছর রাষ্ট্রপতি নির্বাচনের আগে জো বাইডেনের পক্ষে এই ঘটনা ভালো নয়।
৬০টি ইউনিয়নের ফেডারেশন এএফএল-সিআইও’র সভাপতি লিজ শুলার বলেছেন, ‘‘সার বিশ্ব দেখছে এখানে কী হচ্ছে। একসঙ্গে তিন সংস্থার শ্রমিকরাই ধর্মঘটে গিয়েছেন।’’ এই ফেডারেশনের সব সংগঠন মিলিয়ে সদস্যের সংখ্যা ১ কোটি ২৫ লক্ষ।
ডেট্রয়েট কেন্দ্রিক অটো নির্মাতা সংস্থার শ্রমিকদের ইউনাইটেড অটো ওয়ার্কার্স ইউনিয়নের শন ফেন বলেছেন, ‘‘গাড়ির দাম এক পয়সা না বাড়িয়েও আমাদের মজুরি দ্বিগুন করা যায়। তারপরও শয়ে শয়ে কোটি ডলার মুনাফা করা যায়।’’
সব ইউনিয়ন দাবি করেছে, মজুরির সঙ্গে জীবনমান খরচ বাবদ প্রাপ্য বাড়াতে হবে। অতি সম্প্রতি মারাত্মক মূল্যবৃদ্ধিতে জেরবার হতে হয়েছে আমেরিকার শ্রমিকদের। এখন দাম খানিক কম হলেও ফের বাড়বে।
Comments :0