বইকথা
যোগীন্দ্রনাথ সরকারের — খুকুমণির ছড়া
প্রদোষকুমার বাগচী
তোমাদের জন্য ছড়ার বই
এতদিন তোমাদের গল্পের বই বিজ্ঞানের বই ইত্যাদি বইয়ের কথা বলেছি। এবার তোমাদের জন্য রইল একটা ছড়ার বইয়ের খবর। ছোটদের মনের গভীরে কত রং, কত কল্পনা। সেই রং আর কল্পনা জগতের খোঁজ যাঁরা রাখেন তাঁরা ছোটদের সেই মনকে আনন্দে ভরিয়ে দিতে তুলে ধরেন নানান ছড়া। তোমাদের কাছে তেমন কয়েকটা ছড়ার কথা বলি। যেমন হনুমানের ছড়া। তোমরা হয়তো এটা শুনেও থাকতে পারো তোমাদের ঠাম্মা, দিম্মার কাছে বা মা মাসি পিসির কাছে। কিরকম? তাহলে শোন-
ও হনুমান কলা খাবি,
জয় জগন্নাথ দেখতে যাবি?
একটা করে পয়সা পাবি।
এবার যেটা বলছি সেটাও হয়তো শুনে থাকবে। ছড়ার নাম বর্গি এলো দেশে।
খোকা ঘুমুল পাড়া জুড়ুল,
বর্গি এল দেশে;
বুলবুলিতে ধান খেয়েছে,
খাজনা দেব কিসে?
অনেকেই তোমরা হয়তো বলবে, শুনেছি, শুনেছি। কেউ কেউ ছড়াটা হয়তো আউড়েও ফেলতে পারো। কিন্তু ছড়াটার পরের অংশ অনেকেরই হয়তো অজানা। যারা জানো তারা অন্যকে বলে দিও। আর যারা জানোনা তারা শুনে নাও— সেটা হচ্ছে-
ধান ফুরুল, পান ফুরুল,
খাজনার উপায় কি?
আর কটা দিন সবুর করো
রসুন বুনেছি।
হ্যাঁ এই ছড়াগুলোই সংগ্রহ করে বাংলার শিশুসাহিত্যে যিনি প্রাণের সঞ্চার করেছিলেন তাঁর নাম যোগীন্দ্রনাথ সরকার। আতাগাছের তোতা পাখি বা হাট্টিমা টিম টিম—এসব ছড়া সকলেই শুনেছেন, তোমরাও শুনেছো। এইসব ছড়া যা লোকমুখে প্রচলিত ছিল সেগুলি সংগ্রহ করে এনেছিলেন ওই যোগীন্দ্রনাথ বাবু। ১৮৯৯ সালে ছোটদের জন্য তিনি এই সব ছড়া সংকলন প্রকাশ করেছিলেন ‘খুকুমণির ছড়া’ নাম দিয়ে। রবীন্দ্রনাথ এই ছড়াগুলোকে বলেছিলেন ‘শৈশবের মেঘদূত’। ছড়া সংকলনের ব্যাপারে তিনি পথপ্রদর্শক। কিন্তু বাংলার বিভিন্ন স্থান থেকে সংগৃহীত প্রথম সংকলনটি যোগীন্দ্রনাথ সরকারের এই ‘খুকুমণির ছড়া’ই। পরে তোমাদের কথা ভেবে ‘ন্যাশনাল বুক এজেন্সি’ (এনবিএ) থেকে এই বইটিকে নতুন করে প্রকাশ করা হয়েছে। নতুন ছবিতে, নতুন বানানে। ছড়াগুলোর সঙ্গে গৌতম চট্টোপাধ্যায়ের মানানসই প্রচ্ছদ ও অলঙ্করণ দেখে তোমাদের ভাল লাগবে। তোমরা একবার বইটির খোঁজ করে দেখতে পারো। রামেন্দ্রসুন্দর ত্রিবেদী প্রথম সংস্করণে যে ভূমিকা লিখে দিয়েছিলেন সেই ভূমিকাটি এনবিএ সংস্করণেও তোমরা পেয়ে যাবে।
খুকুমণির ছড়া।
যোগীন্দ্রনাথ সরকার। এনবিএ সংস্করণ। প্রথম প্রকাশ ২০০৬। ন্যাশনাল বুক এজেন্সি। ১২ বঙ্কিম চ্যাটার্জি স্ট্রিট, কলকাতা—৭৩। ৫৫ টাকা।
Comments :0