SC MANIPUR LAW AND ORDER

ভেঙে পড়েছে আইনশৃঙ্খলা, মণিপুর শুনানিতে সুপ্রিম কোর্ট, তলব পুলিশের ডিজি’কে

জাতীয়

SC MANIPUR LAW AND ORDER

আইন শৃঙ্খলা ব্যবস্থা একেবারেই ভেঙে পড়েছে। মণিপুর মামলার শুনানিতে এমনই কড়া পর্যবেক্ষণ সুপ্রিম কোর্টের। পরিস্থিতি বিশদে জানাতে মণিপুর পুলিশের ডিজি’কে হাজিরা দেওয়ার নির্দেশ দিল সুপ্রিম কোর্ট।

দুই মহিলাকে বিবস্ত্র করে হাঁটানো, ধর্ষণ এবং ভয়ঙ্কর নির্যাতনের ছড়িয়ে পড়া ভিডিও’র ভিত্তিতে এই মামলা দায়ের হয়েছে শীর্ষ আদালতে। সুপ্রিম কোর্টের প্রধান বিচারপতি ডিওয়াই চন্দ্রচূড়ের নেতৃত্বাধীন বেঞ্চে চলছে শুনানি।

তদন্ত চলেছে অত্যন্ত ঢিমেতালে। প্রাথমিক তথ্য থেকে তা বোঝা যাচ্ছে। অপরাধের ঘটনা আর এফআইআর দায়েরেকে মধ্যে সময়ের অনেকটা ফারাক। পরের ধাপে, বয়ান নথিভুক্ত করা এবং গ্রেপ্তারি হয়েছে সামান্যই। আদালতকে বুঝতে হবে তদন্তের ধরন কেমন। তার জন্য রাজ্য পুলিশের ডিরেক্টর জেনারেলকে আসতে হবে আদালতে। শুক্রবার দুপুর দু’টোয় আদালতে হাজির হয়ে তাঁকে বক্তব্য জানাতে হবে। 

একের পর এক মারাত্মক অপরাধের অভিযোগ উঠলেও তা নথিভুক্ত হয়েছে ঘটনার তিন মাস পর। এমন একাধিক নজির দেখে তীব্র ক্ষোভ জানিয়েছে সুপ্রিম কোর্ট। বেঞ্চে রয়েছেন বিচারপতি জেবি পারদিওয়ালা এবং মনোজ মিশ্রও।

কেন্দ্রের সলিসিটর জেনারেল তুষার মেহতা মণিপুর সরকারের পক্ষে সওয়াল করছেন। মঙ্গলবার তিনি আদালতে বলেন যে ৬ হাজার ৫৩২টি এফআইআর নথিভুক্ত হয়েছে। তার মধ্যে মহিলাদের বিরুদ্ধে অপরাধের অভিযোগে দায়ের এফআইআর’র সংখ্যা ১১। 

বিচারপতি চন্দ্রচূড় প্রশ্ন করেন দায়ের এফআইআর’র মধ্যে কতগুলি ‘জিরো এফআইআর’। ‘জিরো এফআইআর’ দায়েরের কতদিন পর সেগুলির ভিত্তিতে এফআইআর হয়েছে। 

কোনও মারাত্মক অভিযোগের ক্ষেত্রে ‘জিরো এফআইআর যে কোনও থানা গ্রহণ করতে পারে। পরে অপরাধ যে অঞ্চলে সেখানকার থানায় তা পাঠানো হয়। তখন নিয়ম অনুযায়ী সেই থানা নিয়মিত এফআইআর হিসেবে অভিযোগকে বিবেচনা করে তদন্তে নামে। দ্রুত ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য ‘জিরো এফআইআর’-র ব্যবস্থা রয়েছে। মণিপুরের মতো পরিস্থিতিতে, যে খানে বাড়িঘর ফেলে হাজার হাজার মানুষকে পালিয়ে যেতে হয়েছে, সেখানে এই ব্যবস্থা অত্যন্ত কার্যকরী। 

কিন্তু সলিসিটর জেনারেল আদালতে জানান যে এই সংক্রান্ত বিশদ তথ্য তাঁর হাতে নেই। 

মণিপুরের যে ভিডিও জুলাইয়ে সামনে আসায় দেশময় তীব্র বিক্ষোভ, সেই অপরাধ মে’র গোড়ার। জুনে দায়ের হয়েছিল এফআইআর। আর গ্রেপ্তারি যেটুকু হয়েছে, তা জুলাইয়ের তৃতীয় সপ্তাহ নাগাদ ভিডিও দেশময় ছড়িয়ে পড়ার পর। রাজ্যে সরকার বিজেপি’র। কেন্দ্রে তাদের সরকার এবং দল সমানে ভয়ঙ্কর জনগোষ্ঠী সংঘর্ষকে আড়াল করছে। কেবল সংসদে মণিপুর নিয়ে প্রধানমন্ত্রীকে মুখ খোলাতে বিরোধীদের আনতে হয়েছে অনাস্তা প্রস্তাব। 

প্রধান বিচারপতি এদিন বলেছেন, ‘‘এমন মারাত্মক ঘটনা দেখাচ্ছে মে থেকে জুলাই পর্যন্ত রাজ্যে কোনও আইনের শাসনই থাকেনি। এরপরও কী বলা যাবে না যে রাজ্যে আইনশৃঙ্খলা একেবারে ভেঙে পড়েছে?’’ 

কড়া ভর্ৎসনা করে সলিসিটর জেনারেলকে তিনি বলেন, ‘‘রাজ্যের পুলিশ তদন্তে অক্ষম। তাদের কোনও নিয়ন্ত্রণ নেই। না হলে ৬ হাজার এফআইআর’র ভিত্তিতে মাত্র ৭ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়?’’ 

প্রধান বিচারপতি মেহতাকে জিজ্ঞেস করেন, ‘‘যে পুলিশকর্মীরা উন্মত্ত ভিড়ের হাতে দুই মহিলাকে তুলে দিয়েছিলেন তাঁদের ডেকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়েছে? পুলিশের ডিজি’কে জেরা করা হয়েছে? ডিজিপি নিজে কী করছেন?’’ তিনি বলেন, পরিষ্কার বোঝা যাচ্ছে দু’মাস ধরে পুলিশের হাতে কোনও নিয়ন্ত্রণ ছিল না।     

Comments :0

Login to leave a comment