MD SALIM PANCHAYAT VOTE

অভিষেকের সংবিধান বহির্ভূত
ক্ষমতায় ক্ষোভ সেলিমের

রাজ্য জেলা

MD SALIM PANCHAYAT VOTE সোমবার ইসলামপুরে সিপিআই(এম)’র কর্মীসভায় বলছেন মহম্মদ সেলিম।

বিশ্বনাথ সিংহ (ইসলামপুর) ও অনিন্দিতা দত্ত (শিলিগুড়ি)

মুখ্যমন্ত্রী বা নির্বাচন কমিশনার বলছেন না। তা’হলে অভিষেক ব্যানার্জি কী করে পঞ্চায়েত নির্বাচন ঘোষণা করছেন। সোমবার ইসলামপুরে সংবাদমাধ্যমের প্রশ্নে এ কথা বলেছেন সিপিআই(এম) রাজ্য সম্পাদক মহম্মদ সেলিম। 

শিলিগুড়িতে সেলিম বলেছেন, ‘‘বিজেপি আর তৃণমূলকে হটাতে কাকদ্বীপ থেকে কোচবিহার মানুষ ঐক্যবদ্ধ হচ্ছেন। গণতন্ত্রকে বাঁচাতে, চোর তাড়াতে, লুটেরাদের রাজত্ব শেষ করতে মানুষ প্রস্তুত। কেন্দ্র ও রাজ্য দুই সরকারের মিথ্যে ভাঁওতা, চুরি, দুর্নীতি ও দুষ্কৃতীরাজের বিরুদ্ধে লড়াই করতে তৈরি মানুষ। নিজেদের প্রাপ্য বুঝে নিতে গ্রামের পর গ্রাম জাগছে। বাংলায় সম্প্রীতি তৈরি হচ্ছে।’’ বামপন্থীদের স্লোগানের উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘‘চ্যালেঞ্জ দিচ্ছি, চ্যালেঞ্জ নাও। পঞ্চায়েতের তারিখ দাও।’’

তৃণমূল সাংসদ এবং মুখ্যমন্ত্রীর ভাইপো অভিষেক ব্যানার্জির ‘নবজোয়ার যাত্রা’ গিয়েছে উত্তরবঙ্গের ওপর দিয়ে। তিনিই ঘোষণা করেছেন তৃণমূলের এই দলীয় কর্মসূচি মিটলে হবে পঞ্চায়েত নির্বাচন। অথচ সরকারি পরামর্শ অনুযায়ী এই নির্বাচনের দিনক্ষণ জানানোর কথা নির্বাচন কমিশনের। অভিষেক সরকারি পদাধিকারী নন। 

এই প্রসঙ্গেই তিনি বলেন, ‘‘সংবিধান বহির্ভূত ক্ষমতা ভালো নয়। পঞ্চায়েত নিরবাচন কবে হবে নির্বাচন কমিশন জানালো না। কমিশন বলছে সরকার জানায়নি। মুখ্যমন্ত্রীও কিছু বলছেন না। তা’হলে অভিষেক ব্যানার্জি জানাচ্ছেন কী ক’রে। একেই বলে সংবিধান বহির্ভূত ক্ষমতা। এই ক্ষমতা ভালো নয়। জরুরি অবস্থার সময় প্রধানমন্ত্রী ইন্দিরা গান্ধী হলেও সরকারি সিদ্ধান্ত ঘোষণা করতেন তৎকালীন কংগ্রেস নেতা সঞ্জয় গান্ধী। ফল ভালো হয়নি। পতন হয়েছিল ইন্দিরা গান্ধী সরকারের।’’ 

সেলিম ফের বলেছেন যে বিজেপি এবং তৃণমূল কেউই নির্বাচন চাইছে না। তিনি বলেছেন, ‘‘মুখ্যমন্ত্রীর সঙ্গে বৈঠকের পরই পঞ্চায়েত নির্বাচন পিছাতে আদালতে চলে যান বিজেপি নেতা শুভেন্দু অধিকারী। কিন্তু হাইকোর্ট বা সুপ্রিম কোর্ট স্থগতিদেশ দিতে রাজি হয়নি। তারপরও রাজ্য সরকার নির্বাচন সম্পর্কে কিছু বলছে না। দুই দলই ভোট পিছাতে চাইছে।’’ 

উত্তরবঙ্গে গত কয়েকদিন একাধিক কর্মসূচিতে যোগ দিয়েছেন সেলিম। শিলিগুড়িতে সাংবাদিক সম্মেলনের পর ইসলামপুরে সিপিআই(এম)’র ডাকে কর্মীসভা করেছেন। মুখোমুখি হয়েছেন সংবাদমাধ্যমেরও। 

গত ৬ এপ্রিল রাজ্য বিধানসভার বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারীর মামলা খারিজ করে দেয় সুপ্রিম কোর্ট। হাইকোর্টের দেওয়া স্থগিতাদেশ জারি না করার নির্দেশ বহাল রাখে। কলকাতা হাইকোর্টে শুভেন্দু অধিকারি এর কিছু আগে মামলা দায়ের করেন। ভোটার তালিকা সংশোধন, জাতভিত্তিক সমীক্ষার ভিত্তিতে আসন সংরক্ষণ এবং আইন শৃঙ্খলা পরিস্থিতি উল্লেখ করে আগাম স্থগিতাদেশ জারির আবেদন জানান। উল্লেখ্য, জাতীয় স্তরে বিজেপি জাতভিত্তিক সমীক্ষার বিপক্ষে। গত বছর ২৫ নভেম্বর মুখ্যমন্ত্রী মমতা ব্যানার্জির সঙ্গে অধিকারির বৈঠক নিয়ে আলোড়ন হয় রাজ্যে। 

বামপন্থীদের প্রস্তুতি প্রসঙ্গে প্রশ্ন করা হয় সেলিমকে। তিনি বলেন, ‘‘কেবল সিপিআই(এম) বা বামফ্রন্ট নয়। তার বাইরেও তৃণমূল এবং বিজেপি’র বিরুদ্ধে লড়াইয়ে প্রস্তুত ব্যক্তি এবং বহু গোষ্ঠী একত্রিত হচ্ছে। এই শক্তিগুলির মধ্যে বোঝাপড়ায় সমস্যা নেই। অন্তর্দ্বন্দ্ব দেখা যাচ্ছে বিজেপি এবং তৃণমূলের মধ্যেই।’’   

দু’দলের বোঝাপড়া প্রসঙ্গেই সেলিম বলেছেন, কেন্দ্রের পুলিশ আর রাজ্যের পুলিশের ভূমিকা এক। লালকৃষ্ণ আদবানির পাঠশালার ছাত্র নরেন্দ্র মোদী, অমিত শাহ এবং মমতা ব্যানার্জি। এরা দোষীকে সুরক্ষা দেয়, নির্দোষ প্রতিবাদীদের নিপীড়ন করে। এ রাজ্যে যা হচ্ছে ঠিক তেমন অমিত শাহের পুলিশ করেছে জামিয়া মিলিয়া, জেএনইউ বা আলিগড় মুসলিম বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রছাত্রীদের ওপর। 

সেলিম বলেন, ‘‘কোনও ধর্ষণ, শ্লীলতাহানির বিরোধিতা করতে পারবে না তৃণমূল বা বিজেপি। এমন অপরাধীরা ওদের দলেই থাকে। দিল্লিতে কুস্তিগিররা বিজেপি সাংসদকে দায়ী করছে যৌন নির্যাতনের জন্য। অথচ বিজেপি চুপ।’’    

Comments :0

Login to leave a comment