BAI SANDHYAN — PRODASHKUMAR BAGCHI / 20 SEPTEMBER

বইকথা — ছোট বাঘ বড় বাঘ / নতুনপাতা

ছোটদের বিভাগ

BAI SANDHYAN  PRODASHKUMAR BAGCHI  20 SEPTEMBER

বইকথানতুনপাতা

একটি বাঘিনী ও তার বাচ্চার গল্প

প্রদোষকুমার বাগচী

 
এবার একটা নতুন বইয়ের কথা তোমাদের বলবো। বইটিতে আছে বাঘের গল্প। বাঘের নাম শুনলেই আমাদের যেমন কৌতুহল হয়, আনন্দে নেচে ওঠে মন, তেমনি ভয়ও হয়। ভয় হলেও বাঘের সৌন্দর্য, বাঘের সাহস আর তার শক্তির কথা শুনে কার না কৌতুহল হয়।। কিন্তু আমি যে বাঘের কথা বলবো শুনলে তোমাদের মন ভালো হয়ে যাবে। বইটির নাম ‘ছোট বাঘ, বড় বাঘ’। একটি ছোট বাঘ কি করে একদিন একটি বড় বাঘ হয়ে উঠল সেকথাই অতি সুন্দরভাবে তুলে ধরা হয়েছে। এটি  একটি অপূর্ব বই। আমাদের মায়েরা যেমন আমাদের ভালবেসে আদর করে বড় করে, প্রয়োজনে বকুনি দেয় আবার নিজের কাজ নিজে করার সাহস জোগায় সেভাবে বাঘের মায়েরাও ছোট বাঘকে বড় করে তোলে। সেকথাই বইটিতে লিখেছেন লেখিকা লুই হ্যামিলটন ফুলার।


তিনি লিখেছেন, নদীর ধারে ছায়া ঘেরা এক ঘন বনে এক বাঘিনী আর তার ছোট বাচ্চা থাকতো। রাতের বেলা বাঘিনী যখন শিকারে যেতো তখন বাচ্চাটাও মার সঙ্গে থাকতো। বাঘিনী যেদিন শিকারে যেতো না, সেদিন বাচ্চাটাকে নিয়ে সে খেলা করত। বাচ্চার সঙ্গে মজা করে সময় কাটাতো। বাঘিনী শুয়ে শুয়ে ল্যাজের ডগা নাড়াত আর বাচ্চাটি ঐ ল্যাজের উপর ঝাঁপিয়ে পড়ে মাকে দেখাতো যে সেও মায়ের মতো শিকারী হয়ে উঠছে। সে একটু দুরে সরে গেলে মা মৃদু গরগর আওয়াজ করে বাচ্চাটাকে ডেকে কোলের কাছে নিয়ে আসতো। কিন্তু বাচ্চাটির জঙ্গলে মায়ের কাছে থাকতে ভালো লাগতো না। 

সে একা একা শিকারে বেরোতে চাইত। একদিন সে একটা ব্যাঙ শিকার করতে গিয়ে মায়ের থেকে খানিকটা দূরে চলে গিয়েছিল। ব্যাঙটাকে সে ধরে ফেললেও পিছন ফিরে সে দেখল মা তো নেই। বরং তার মায়ের চেয়েও বড় একটি বাঘ গুঁড়ি মেরে তার দিকে এগিয়ে আসছে। ভয়ে সে চিৎকার করতেও পারলো না, পালাতেও পারলো না। বরং ব্যাঙটিই পালিয়ে গেল। হঠাৎ মা বাঘিনীর জঙ্গল ভেদী গর্জন শোনা গেল।বাঘিনী রু্দ্র রূপ নিয়ে নতুন বাঘের কাছে দাঁড়াতেই সে সরে পড়ল। এভাবেই মা তাকে বিপদ থেকে বাঁচাতো। বনের ছায়ায় মায়ের সঙ্গে সে একসাথে ঘুমাতো, কখনো নদীর জলে সাঁতার কাটতো, কখনো অল্প জলে গা ডুবিয়ে বসে থাকতো। মা বাঘিনী গর্জন করে সবাইকে সাবধান করে দিয়ে যেমন বলতো যে এখানে যেন কেউ তার বাচ্চার ক্ষতি করতে না আসে, তেমনি বাচ্চাটারও  মায়ের মতো গর্জন করতে ভালো লাগতো। কিন্তু কি আশ্চর্য তার গর্জনে বনের কোনও জানোয়ার ভয় পেতো না।

 
তারপর একদিন বাচ্চ বাঘ কিভাবে বড় হয়ে উঠল, কিভাবে শিকার ধরতে শিখল, এই নিয়ে বাকি কথা রয়ে গেছে ওই বইটিতে। তোমরা বইটি হাতে নিলে সেটি আর না পড়ে উঠতেই পারবে না। আর অপূর্ব মন ভোলানো সব ছবিও রয়েছে বইটিতে। একদিন ঐ বাঘটি যেদিন বড়দের মতো গর্জন করতে শিখলো সে দিন থেকে সে কি করতো জানো? নিজের গর্জন নিজে শুনে আনন্দে বড় বাঘের হাসি হাসত। 
বইটি এবার তোমাদের পড়তে নিশ্চয়ই ইচ্ছা করছে। 

ছোট বাঘ বড় বাঘ

লেখিকা লুই হ্যামিলটন ফুলার। ছবি : অনিল ব্যাস। অনুবাদ : প্রণতি চট্টোপাধ্যায়। 

চিলড্রেন্স বুক ট্রাস্ট, নেহরু হাউস, ৪ বাহাদুর শাহ জফর মার্গ, নিউ দিল্লি—১১০০০২। 

২০ টাকা।  

 

Comments :0

Login to leave a comment