মতুয়া ভোট ভাগ হচ্ছে। বেগতিক দেখে ঠেলায় পড়ে বনগাঁ গেলেও ঠাকুরনগর মতুয়া ঠাকুরবাড়িতে মঙ্গলবার পৌঁছোলেন না মুখ্যমন্ত্রী মমতা ব্যানার্জি। বিক্ষোভের খবর পেয়ে পিছু হটেছেন। চাঁদপাড়া বাজার থেকে মিছিল নিয়ে চাঁদপাড়া স্টেশন সংলগ্ন ঠাকুরিয়ায় মিছিল শেষ করেছেন।
এদিন ঠাকুরনগরে মুখ্যমন্ত্রীর পদযাত্রার কারণে গাইঘাটার চাঁদপাড়া গার্লস স্কুল দুদিনের ছুটি ছিল। শুধু চাঁদপাড়া নয় বনগাঁর স্কুল ও সোমবার ও মঙ্গলবার বন্ধ ছিল। নবম শ্রেণির সেমিস্টার পরীক্ষা থাকা সত্ত্বেও। এমনকি বেসরকারি স্কুল ও বন্ধ রাখা হয়েছিল।
এদিন মুখ্যমন্ত্রী চাকদা বাসস্ট্যান্ডে সভায় নির্বাচন কমিশনের উদ্দেশ্যে বলেন, কিসের এত তাড়াহুড়ো ? তিনি বলেন, কোন পার্টিকে সন্তুষ্ট করতে বাংলার মানুষকে মৃত্যুর মুখে ঠেলে দেওয়া হচ্ছে। এর পেছনে বাংলা ও বাংলা ভাষার মানুষকে জব্দ করার কৌশল। তিনি বলেছেন, তোমরা ভোটের জন্য টাকাখরচ করবে আর ভোটাররা আমাদের ভোট দেবে। এরপর তিনি চাঁদপাড়া বাজার থেকে রেল স্টেশন পর্যন্ত মিছিল করেন।
এদিন মুখ্যমন্ত্রীর বনগাঁ যাওয়া প্সঙ্গে সিপিআই(এম) নেতা সুজন চক্রবর্তী বলেন, এসআইআর ইস্যুতে মতুয়ারা বিপন্ন। বাংলাদেশি অনুপ্রবেশকারী বলে মমতা ব্যানার্জিই বিজেপি সরকারের কাছে অভিযোগ জানিয়েছিলেন। তখন তিনি বিজেপি’র শরিক। একগাদা কাগজ স্পিকারের উদ্দেশ্যে ছুঁড়ে ফেলছিলেন। ২০০৩ সালের নাগরিকত্ব সংশোধনী আইন যখন পাশ হয়েছিল তখন প্রধানমন্ত্রী অটলবিহারী বাজপেয়ীর মন্ত্রী সভায় উনি ছিলেন মন্ত্রী। এ দায় বিজেপি যেমন অস্বীকার করতে পারে না তেমনই পারে না তৃণমূল। বর্তমানে মতুয়াদের বিপদের দায় দু’দলকেই ঘাড়ে নিতে হবে। চক্রবর্তী বলেন, ভোটের অধিকার ও নিঃশর্ত নাগরিকত্বের দাবিতে আমরা পাশে আছি। আমরা অনশন মঞ্চে একাধিকবার পৌঁছে আশ্বাস দিয়েছি।
সিপিআই(এম) উত্তর ২৪ পরগনা জেলা সম্পাদক পলাশ দাশ বলেন, মতুয়া মহাসংঘের পক্ষ থেকে প্রায় এক পক্ষকাল ধর্না মঞ্চে একাধিক মহাসংঘের প্রতিনিধিরা অনশন করা সত্ত্বেও মুখ্যমন্ত্রী যাওয়ার সময় পেলেন না। এসআইআর নিয়ে বিজেপি মতুয়া মানুষদের মিথ্যা প্রতিশ্রুতি দিচ্ছে। মতুয়া কার্ড, সিএএ ফর্ম টাকার বিনিময়ে ভরে মিথ্যাচার করছে। অপরদিকে মমতা ব্যানার্জি বললেন, এসআইআর হবে না। যখন চালু হলো তার ১৯ দিন পর কমিশনকে চিঠি পাঠালেন তা বন্ধ করার আবেদন জানিয়ে। এসআইআর নিয়ে বোঝাপড়ার মধ্য দিয়ে চলছে দুই দল।
এদিকে প্রতিনিধিদলের সংখ্যা নিয়ে কমিশন এবং তৃণমূলের মধ্যে মতবিরোধ দেখা যাচ্ছে। আগামী
শুক্রবার, ২৮ নভেম্বর, প্রতিনিধিদের দেখা করার সময় দিয়েছিল কমিশন। ১০ জনের প্রতিনিধিদল গড়েছেন তৃণমূল সাংসদ অভিষেক ব্যানার্জি। সমস্যায় ক্লিষ্ট পরিবারের ভিডিও পেশ করার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। সৌগত রায়, সুদীপ ব্যানার্জি, কল্যাণ ব্যানার্জি, ডেরেক ও ব্রায়েনরা।
পাঁচজনের প্রতিনিধি দিতে বলছে কমিশন। তৃণমূল ১০ সদস্যের প্রতিনিধিদল গড়েছে। অভিষেক ব্যানার্জি সোশাল মিডিয়ায় লিখেছেন, ১০ সাংসদের প্রতিনিধিদলকে দেখা করার জন্য সময় চাওয়া হয়েচিল। এঁরা জনপ্রতিনিধি। মুখ্য নির্বাচন কমিশনার বা নির্বাচন কমিশনাররা সরকারের বেছে নেওয়া। দশজনের মুখোমুখি হতে সমস্যা কোথায়? বৈঠকের সরাসরি সম্প্রচার করে সোজা পাঁচটি প্রশ্নের উত্তর দিক কমিশন। এদিন আবার ফেরার সময় মুখ্যমন্ত্রীর কনভয়ের মুখে পড়ে বারাসাতে। বারাসত হাসপাতালে এক রোগীর দেহ থেকে চোখ উপড়ে নেওয়ার অভিযোগে বিক্ষোভ দেখাচ্ছিলেন পরিজনেরা। সে সময় মুখ্যমন্ত্রীর গাড়ি ওই পথ দিয়ে ফিরছিল। তাঁর গাড়ি আটকে ক্ষোভ জানানো হয়।
SIR CPI(M) Mamta
এসআইআর চলছে দু’দলের বোঝাপড়ায়, ক্ষোভ সিপিআই(এম)’র
×
Comments :0