শ্রেণি লড়াইকে দুর্বল করতেই ধর্মকে রাজনীতির সঙ্গে মেশাচ্ছে বিজেপি ও তৃণমূল কংগ্রেস। প্রয়াত কমরেড দাশরথি মান্নাদের জীবনবোধের শিক্ষাই হল সমস্ত শোষণ-যন্ত্রনার বিরুদ্ধে শ্রেণি লড়াইকে এগিয়ে নিয়ে যাওয়া। হাওড়া জেলার প্রবীণ সিপিআই(এম) নেতা প্রয়াত কমরেড দাশরথি মান্নার স্মরণসভায় কথাগুলি বলেন পার্টির হাওড়া জেলা সম্পাদক দিলীপ ঘোষ।
শনিবার সাঁকরাইলের নলপুরের মনোহরপুর প্রাথমিক বিদ্যালয়ে সিপিআই(এম) সাঁকরাইল দক্ষিণ এরিয়া কমিটির উদ্যোগে অনুষ্ঠিত প্রয়াত কমরেড মান্নার স্মরণ সভায় স্মৃতিচারণা করে বক্তব্য রাখেন পার্টির হাওড়া জেলা সম্পাদক দিলীপ ঘোষ। শোকপ্রস্তাব উত্থাপন করেন শান্তিময় বাছার। স্মৃতিচারণা করে বক্তব্য রাখেন পার্টিনেতা নন্দলাল মুখার্জি, মুকুল মিত্র, বিকাশ মণ্ডল, সুলেখা দাস। সভা পরিচালনা করেন সমীর মালিক। উপস্থিত ছিলেন পার্টিনেতা অপর্ণা ব্যানার্জি, পুত্র চন্দন মান্না, স্ত্রী রেবা মান্না সহ পার্টি কর্মী ও দরদীরা।
স্মরণ সভার শুরুতে এদিন কমরেড দাশরথি মান্নার প্রতিকৃতিতে মাল্যদান করে শ্রদ্ধা জানানো হয়।
শোকপ্রস্তাবে উল্লেখ রয়েছে, প্রয়াত কমরেড দাশরথি মান্না ছিলেন পার্টির হাওড়া জেলা কমিটির প্রাক্তন সদস্য। পার্টি নেতৃত্বের পাশাপাশি শিক্ষক নেতা, কৃষক নেতা হিসাবেও ভূমিকা পালন করেছিলেন। সমগ্র শ্যামপুর থানা এলাকায় পার্টি প্রসারের কাজে গৌরবোজ্জ্বল ভূমিকা পালন করেছিলেন। শ্রেণি লড়াইকে এগিয়ে নিয়ে গিয়ে সাধারণ মানুষের আস্থা অর্জন করেছিলেন। ছিলেন বামফ্রণ্ট পরিচালিত তৎকালীন হাওড়া জেলা পরিষদের বিদ্যুৎ কর্মাধ্যক্ষ।
এদিন প্রয়াত কমরেড দাশরথি মান্নার স্মরণসভায় পার্টির হাওড়া জেলা সম্পাদক দিলীপ ঘোষের হাতে গণশক্তি-র তহবিলের জন্য পাঁচ হাজার টাকা তুলে দেন কমরেড দাশরথি মান্নার স্ত্রী রেবা মান্না।
দিলীপ ঘোষ বলেন, শোক সভাকে শপথের সভায় পরিণত করতে হবে। কমরেড দাশরথি মান্না হতে পারতেন না নিজ ভূমিকা পালন না করতে পারলে। দারিদ্রতার বিরুদ্ধে লড়াই করে সকলের জন্য সংগ্রামে শামিল হয়েছিলেন কমরেড দাশরথি মান্না। দাশরথি মান্নার জীবন থেকে শিক্ষা নিতে হবে শোষণহীন লড়াই এর।
দিলীপ ঘোষ বলেন, ভাববাদের দর্শনে বলা হয় যা হবে আগামী জন্মে। এখনকার কাজটাকে, শোষণকে আড়াল করতে এ এক কৌশল। শ্রেণীর লড়াইতে নিজেকে শামিল করে কমরেড দাশরথি মান্না শোষণ-যন্ত্রনার বিরুদ্ধে সংগ্রাম করতে ভূমিকা নিয়েছিলেন।
বর্তমান পরিস্থিতির কথা উল্লেখ করে দিলীপ ঘোষ বলেন, তৃণমূলের ওপরতলা থেকে নিচুতলা পর্যন্ত চোর। ওদের লুটের রাজনীতির দেখে রাজনীতির প্রতি শ্রদ্ধা হারাচ্ছেন মানুষ। আমাদের লড়াই ওদের লুটের রাজনীতির বিরুদ্ধে। সেক্ষেত্রে কমরেড দাশরথি মান্নার মত নেতৃত্বরাই আমাদের পাথেয়। ওদের মেরে খাওয়া, লুটে খাওয়ার বিরুদ্ধে মানুষকে একজোট করতে হবে। দেশজুড়ে মূল্যবৃদ্ধি। কৃষক ফসলের দাম পাচ্ছে না। কাজের নিরাপত্তা নেই। স্মার্ট মিটারের নামে বিদ্যুতের মাশুল বাড়ছে। এই পরিস্থিতির মধ্যে দেশের সরকারের পরিচালক বিজেপি ও এরাজ্যের তৃণমূল সরকার মানুষকে ভাগাভাগি করছে। শ্রেণি ধারনা তুলে দেওয়ার চেষ্টা হচ্ছে। গণতন্ত্র, সংবিধান আক্রান্ত। দেশের সার্বভৌমত্বের ওপর আঘাত নেমে এসেছে।
দিলীপ ঘোষ বলেন, সকলে দেশকে ভালবাসে। দেশের জওয়ান বাউড়িয়ার যুবক বাবলু সাঁতরাকে শহীদ হতে হয়েছে পুলওয়ামায়। সেনার রক্ত ঝরিয়ে দেশপ্রেমকে ব্যবহার করছে বিজেপি।
বক্তারা বলেন, প্রয়াত কমরেড দাশরথি মান্না আজীবন কমিউনিস্ট আদর্শকে প্রসারের কাজ করে গেছেন। নিজের সমগ্র পরিবারকেও কমিউনিস্ট পরিবারে উন্নীত করেছিলেন।
Comments :0