অভিভাবকহীন দক্ষিণ দিনাজপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক ও অশিক্ষক কর্মচারীদের বন্ধ বেতন। রাজ্য সরকারের ঘোষণামত নতুন উপাচার্য নিয়োগ হওয়ার কথা ১১ ডিসেম্বর। পুরনো উপাচার্য চলে গিয়েছেন ওই দিনই। ওই পদে উত্তরবঙ্গ বিশ্ববিদ্যালয়ের এক অধ্যাপকের যোগ দেওয়ার কথা। কিন্তু এক মাসের কাছাকাছি সময় অতিক্রান্ত হলেও এখনো কাজে যোগ দেননি তিনি। ফলে গুরুত্বপূর্ণ সরকারি কাজকর্ম বন্ধ হওয়ার মুখে। বেতন বন্ধ শিক্ষক ও কর্মচারীদেরও। এর ওপর পরিকাঠামোর তীব্র অভাবে পঠনপাঠন শিকেয় বিশ্ববিদ্যালয়ের।
সমস্যার সমাধানে জেলার রাজ্য ও কেন্দ্রীয় সরকারের জনপ্রতিনিধিরা সম্পূর্ণ উদাসীন। সংশ্লিষ্ট প্রশাসকমণ্ডলীও ব্যর্থ। ২০২১ সালে বালুরঘাটে দক্ষিণ দিনাজপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের পথচলা শুরু করলেও ভাড়া বাড়িতে কয়েকবার বিশ্ববিদ্যালয়ের স্থান পরিবর্তন করা হয়েছে। রাজ্য সরকার ও সংশ্লিষ্ট দপ্তরের ব্যর্থতায় এখনো স্থায়ী পরিকাঠামো তৈরির জমিই বরাদ্দ হয়নি। ফলে জন্মলগ্ন থেকেই সমস্যায় জর্জরিত এই বিশ্ববিদ্যালয়।
গত দু’ বছরে কয়েকবার আমন্ত্রিত শিক্ষকদের বেতন বন্ধ হয়েছে। রেজিস্ট্রার ও ভিসি’র মধ্যে সুষ্ঠু সমন্বয়ের অভাব ও দপ্তরের কাজের বিভিন্ন প্রতিবন্ধকতাই এর মূল কারণ। সম্প্রতি প্রাক্তন উপাচার্য অন্যত্র বদলি হয়ে যাওয়াতে বিভিন্ন সমস্যার সম্মুখীন হতে হচ্ছে বিশ্ববিদ্যালয়কে। বেতন মিলছে না শিক্ষক-অশিক্ষক কর্মচারীদের। জেলা শাসকের কাছে দরবার করেও মেলেনি সুরাহা। বিশ্ববিদ্যালয়ের কর্মীদের বক্তব্য, খুব শীঘ্রই নতুন উপাচার্য কাজে যোগ না দিলে আরো সমস্যা বাড়বে বিশ্ববিদ্যালয়ের অভ্যন্তরে।
এদিকে, অ্যাকাউন্টস অফিসারেরও কার্যকালের মেয়াদ রয়েছে আর মাত্র এক মাস। এর মধ্যে যদি নতুন উপাচার্য যোগ না দেন তাহলে বিশ্ববিদ্যালয়ের পঠন পাঠন সহ সমস্ত বিভাগ বন্ধ হয়ে যাওয়ার মুখে পড়বে বলেই আশঙ্কা প্রকাশ করছেন শিক্ষক ও ছাত্রছাত্রীরা। বর্তমানে দক্ষিণ দিনাজপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের তিনটি স্ট্রিমে প্রায় ৩০০ জন ছাত্র-ছাত্রী পাঠরত রয়েছেন। পঠন পাঠনে কোন স্থায়ী শিক্ষক নেই। আমন্ত্রিত শিক্ষকরাই বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ানোর কাজ চালাচ্ছেন এক রকম।
ইতিমধ্যে সমন্বয়ের অভাবে ছাত্রছাত্রীদের সেমিস্টারের ফল প্রকাশে শুধু দেরিই নয় বহু বিঘ্নও ঘটেছে, হয়রানি বেড়েছে সকলেরই। ভাড়া বাড়িতে স্থায়ী পরিকাঠামো না থাকাতে পঠন পাঠনে বিঘ্ন ক্রমাগতই ঘটছে। এর ওপর গ্রন্থাগার নেই, নেই হোস্টেল সহ অন্যান্য পরিসেবাও। ফলে শিক্ষক, অশিক্ষক কর্মচারীদের মধ্যে বাড়ছে ব্যাপক ক্ষোভ। প্রশ্ন উঠেছে, রাজ্যের শিক্ষামন্ত্রী কোথায়। এভাবে একটি বিশ্ববিদ্যালয় কি করে চলতে পারে। শিক্ষা ব্যবস্থা নিয়ে ছিনিমিনি খেলা অবিলম্বে বন্ধ করতে হবে।
Dakshin Dinajpur University
উপাচার্যহীন দক্ষিণ দিনাজপুর বিশ্ববিদ্যালয় সমস্যায় জর্জরিত
×
Comments :0