অনলাইন প্রতারণার নতুন ফাঁদ ‘জাম্পড ডিপোজিট স্ক্যাম’! ব্যাঙ্কের বা ফিনান্সিয়াল অ্যাপে নিজের জমা টাকা বা ‘ক্রেডিট ব্যালেন্স’ চেক করলেই অ্যাকাউন্ট ফাঁকা।
এই প্রতরাণা কী, নিজেকে বাঁচানোর উপায়ই বা কী বিশদে তা জানাচ্ছেন ব্যাঙ্ককর্মীরাই। ব্যাঙ্ক কর্মী এবং আধিকারিকদের মঞ্চ এগিয়ে এসেছেন গ্রাহকদের প্রতরাণা থেকে রক্ষা করতে। কী বলছেন তাঁরা?
অনলাইন প্রতরাণায় নতুন নতুন কৌশল বের হচ্ছে। যেমন ‘ডিজিটাল অ্যারেস্ট’। সেই সঙ্গে রয়েছে ‘জাম্পড ডিপোজিট স্ক্যাম’। কী হচ্ছে এই প্রতারণায়?
হঠাৎ হঠাৎ আসছে মেসেজ। কিন্তু একটাও ভুয়ো এসএমএস নয়। সত্যিই টাকা জমা বা ‘ক্রেডিট’ হয়েছে অ্যাকাউন্টে! কে পাঠালো টাকা দেখতে অনেকেই মোবাইলের অ্যাপ খুলে ক্রেডিট ব্যালেন্স দেখতে যাচ্ছে। মুহূর্তের মধ্যে ফাঁকা হয়ে যাচ্ছে অ্যাকাউন্ট!
কিভাবে হচ্ছে এই প্রতারণা?
প্রতারকরা গ্রাহকের অ্যাকাউন্টে সত্যিই টাকা পাঠাচ্ছে। কিন্তু সেই সঙ্গেই প্রযুকতি ব্যবস্থায় পাঠিয়ে রাখছে ‘উইথড্রল রিকোয়েস্ট’ বা টাকা তুলে নেওয়ার অর্ডার। তাই পিন দিয়ে আপনি ‘অ্যাপ’ খোলা মাত্র গ্রাহকের অ্যাকাউন্টের টাকা চলে যাচ্ছে প্রতারকদের কাছে।
ব্যাঙ্কর্মীরা বলছেন, ‘‘এই ‘জাম্পড ডিপোজিট স্ক্যাম’-এ প্রতারকরা সত্যিই গ্রাহকদের অ্যাকাউন্টে ১ থেকে ২ হাজার টাকা পাঠাচ্ছে। এখন সবার হাতে হাতে স্মার্টফোন। ডিজিটাল লেনদেনের সুবিধার জন্য সংখ্যাগরিষ্ঠ মানুষ মোবাইল ব্যাঙ্কিং অ্যাপ ব্যবহার করেন। নিদেনপক্ষে অনেকে ইউপিআই অ্যাপ ডাউনলোড করেন। তাতে ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্ট লিঙ্ক করা থাকে। টাকা পাঠানোর সঙ্গে ‘উইথড্রল রিকোয়েস্ট’ পাঠিয়ে রাখছে প্রতারখরা। গ্রাহকরা ক্রেডিট ব্যালেন্স চেক করতে গিয়ে অ্যাপের পিন নম্বর দিচ্ছেন। কিন্তু, পিন দেওয়া মাত্র ‘উইথড্রল রিকোয়েস্ট’ অনুযায়ী টাকা চলে যাবে প্রতারকদের কাছে।’’
সাইবার বিশেষজ্ঞ থেকে পুলিশের মতামত বিশ্লেষণ করে ব্যাঙ্ককর্মী আন্দোলনের ব্যাখ্যা, ‘‘অনলাইন আর্থিক বন্দোবস্ত একটি 'এম্বেডেড সফটওয়্যার এপ্লিকেশন'। অনলাইনে এই প্রযুক্তিগত ব্যবস্থাকে আগে যা করতে বলা হবে আগে সেটিই করবে। প্রতারকরা টাকা পাঠানোর সঙ্গে সঙ্গেই ‘উইথড্রয়াল অর্ডার’ পাঠিয়ে রাখছে। তাই আপনার অ্যাকাউন্টে টাকা ঢোকার সঙ্গে সঙ্গে কে পাঠালো দেখার জন্যও অ্যাপ খোলার পিন দিলেই প্রতারকদের কাছে টাকা চলে যাচ্ছে। যেহেতু ‘উইথড্রয়াল রিকোয়েস্ট’ বা ‘অর্ডার’ আগেই দেওয়া রয়েছে।’’
তা’হলে কিভাবে রক্ষা পাওয়া যাবে? এ সম্পর্কেও নির্দিষ্ট বক্তব্য রয়েছে।
এক, টাকা জমা বা ক্রেডিটও হলেও সঙ্গে সঙ্গে অ্যাপ খুলে ব্যালেন্স চেক করা চলবে না। বেশ কয়েক ঘণ্টা পর খোলা যেতে পারে।
ব্যাখ্যা হলো, যে কোনও ‘অর্ডার’ বা ‘রিকোয়েস্ট’-র একটি নির্দিষ্ট মেয়াদ থাকে। তার মধ্যে হয় পিন বা ওটিপি দিয়ে অর্ডার সম্পূর্ণ করতে হয়। মেয়াদ পার হয়ে গেলে সেই অর্ডার বা রিকোয়েস্ট আর কাজ করবে না।
দুই, কয়েক ঘন্টা পর অ্যাপ খুললেও নিজের আসল পিন নম্বর দেওয়া চলবে না। প্রথমে ইচ্ছাকৃতভাবে ভুল পিন নম্বর দিতে হবে। তাহলে ‘উইথড্রল রিকোয়েস্ট’ বাতিল হয়ে যাবে। তার কিছুক্ষণ পর আসল পিন নম্বর দিয়ে ব্যালেন্স দেখতে পারবেন।
ব্যাঙ্ককর্মীরা বলছেন, এই কৌশল নিলে প্রতারকরাই ফাঁদে পড়বে! কারণ, আপনার অ্যাকাউন্টেই থেকে যাবে তাদের পাঠানো টাকা!
Jumped Diposit Scam
‘জাম্পড ডিপোজিট স্ক্যাম’: এই প্রতারণা থেকে বাঁচতে দিন ভুল পিন নম্বর
×
Comments :0