East Burdwan

পূর্বস্থলীতে আত্মঘাতী তাঁতশিল্পী

রাজ্য

হস্তচালিত তাঁত শিল্প বেহাল হয়ে পড়ায় অভাবের তাড়নায় গলায় দড়ি দিয়ে আত্মঘাতী হলেন একজন তাঁত শিল্পী। মৃত তাঁত শিল্পীর নাম রাজিব বসাক(৩৫)। পূর্বস্থলী ১ ব্লকের নশরতপুর গ্রাম পঞ্চায়েতের অন্তর্গত নোনারমাঠ গ্রামের বাসিন্দা। মৃতের নিকট আত্মীয়রা জানান, ‘‘তাঁতের অবস্থা শোচনীয় হয়ে পড়ায় অভাবের মধ্যে পড়ে রাজিব। অভাব থেকে দাম্পত্য কলহ শুরু হলে তার স্ত্রী বাপের বাড়ি চলে যায়। সোমবার রাতে নিজের ঘরেই রাজিব গলায় দড়ি দিয়ে ঝুলে পড়ে। মঙ্গলবার সকালে মৃতদেহ উদ্ধার করে কালনা হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। সেখানেই মৃতদেহের ময়নাতদন্ত হয়। পরিবারের রয়েছে স্ত্রী এক মেয়ে এবং বৃদ্ধ বাবা।’’
উল্লেখ্য কালনা মহকুমায় ষাট হাজার মানুষ হস্তচালিত তাঁত শিল্পের সাথে যুক্ত ছিলেন। কিন্ত এই শিল্পে মন্দা নেমে আসায় বহু তাঁতশিল্পী কাজ হারান। যে হারে চাহিদা ও মজুরি কমছে তাতে অচিরেই হারিয়ে যাবে তাঁতের খটখট আওয়াজ। বিরাট প্রভাব পরে কালনা মহকুমার কালনা শহর, ধাত্রীগ্রাম, কাদিপাড়া, পূর্বস্থলীর নশরতপুর, সমুদ্রগর, মাজিদা, শ্রীরামপুরের মতো তাঁতশিল্প নিবিড় এলাকা গুলিতে। সাধারণত কালনায় ঢাকাই জামদানি শাড়ি বেশি উৎপাদন হয়। আর এই শাড়ি বেশির ভাগই বুনতেন উত্তরবঙ্গ থেকে আসা পরিযায়ী তাঁত শ্রমিকরা। কিন্তু প্রথম লকডাউনে তারা ফিরে যাওয়ার পর আর এদিকে কেউ পা বাড়াননি। অন্যদিকে জীবন জীবিকার টানে এখানকার তাঁত মালিকরা নিজেরাই শ্রমিক হয়ে গিয়ে তাঁতে বসে যান। কিন্তু কাপড় হাটগুলোতে তাঁত কাপড়ের খরিদ্দার না থাকায় এক হাজার দুশো টাকা মূল্যের কাপড়ের দাম নেমে আসে মাত্র সাড়ে চারশো টাকায়। ফলে চরম ক্ষতিগ্রস্থ হন তাঁত শিল্পীরা। তাই অভাবে তাড়নায় ইতিপূর্বে কালনার ধাত্রীগ্রামে আত্মঘাতী হন দুইজন তাঁত শিল্পী দয়াল বসাক ও সমিরন বসাক। পূর্বস্থলী ১ ব্লকের নসরতপুর গ্রাম পঞ্চায়েতের হাটশিমলা গ্রামে ছেলেদের পরিত্যাক্ত তাঁতঘরে গলায় দড়ি দিয়ে আত্মঘাতী হন সরস্বতী বসাক নামের এক বৃদ্ধা। এই হাটশিমলা গ্রামেই  রাত্রিবেলা নিজের তাঁত ঘরে গলায় দরি দিয়ে আত্মঘাতী হন নিমাই বসাক নামের আরো এক তাঁত শিল্পী। 

Comments :0

Login to leave a comment