জানা অজানা
নতুনপাতা
যে প্রাণী মরেও বেঁচে ওঠে
তপন কুমার বৈরাগ্য
৩ অক্টোবর ২০২৫, বর্ষ ৩
কথাটা সত্যিই অবিশ্বাস্য।মৃত জীব মরে গেলে কিভাবে জীবন
ফিরে পায়?তবু এই প্রাণী তাদের জীবনচক্রে তিনবার
জীবন ফিরে পেতে পারে।যা পৃথিবীর এক অত্যাশ্চার্য ঘটনা।
মার্কিণ যুক্তরাষ্ট্রের আলাস্কা বলে একটা রাজ্য আছে।যে রাজ্যে
প্রায় সারাবছরই শীতের প্রকোপ থাকে।তবে বছরের আটমাস
কোনো কোনো অঞ্চলে বরফে ঢাকা থাকে। দেশের উত্তর
অঞ্চলে শীতের প্রকোপ সবচেয়ে বেশি।এখানে বছরের আটমাস
সবজায়গায় বরফে ঢেকে যায়।দেশের বনাঞ্চলও বরফে ঢেকে
যায়।এই বনাঞ্চলে বাস করে কাঠের ব্যাঙ।যার ইংরাজী নাম
উডফ্রগ।এরা প্রায় সাড়ে তিন ইঞ্চি পর্যন্ত লম্বা হতে পারে।
এদের ছোট চোখ বরাবর কালো একটা দাগ থাকে।যেটাকে
ডাকাতের মুখোশের মতন দেখতে।শূন্য ডিগ্রি সেন্টিগ্রেড বা
বত্রিশ ডিগ্রি ফারেনহাইট তাপমাত্রা সহ্য করার ক্ষমতা এদের
আছে।এদের রঙ বাদামী বা কমলা বাদামী রঙের হয়।
দুটো উঁচু চামড়া চোখ থেকে পিঠ পর্যন্ত বিস্তৃত থাকে।বছরের
আটমাস এরা বরফের নীচে হিমায়িত অবস্থায় থাকে।এরা তখন
শ্বাস নেয় না,হৃদস্পন্দন থাকে না,নড়াচড়া করে না,কিছু খায় না।
বলা যেতে পারে অদ্ভূত একটা পরিস্থিতি।জীবের হৃদস্পন্দন
বন্ধ হলে তাকে মৃত বলা হয়।তাই এই ব্যাঙেদেরও বলা যেতে
পারে মৃত।তবে এই আটমাস এরা হিমায়িত অবস্থায় থাকে।তারপর
আবার স্বল্পস্থায়ী গ্রীষ্মকাল এলে এরা হিমায়িত অবস্থা থেকে
পুনঃর্জীবন লাভ করে।বরফ গলতে শুরু করলে এরাও আস্তে
আস্তে শ্বাস নিতে শুরু করে।একটু একটু করে নড়াচড়া শুরু করে।
নিজেদের দেহ থেকে আস্তে আস্তে বরফ সরিয়ে নেয়।তারপর সতেজ হয়ে ওঠে।তারপর এরা ডিম পাড়ে। ডিম থেকে দশ
থেকে পনেরো দিনের মধ্যে বাচ্চা জন্ম নেয়।আবার বরফ
পড়ার আগে এরা পূর্ণাঙ্গ ব্যাঙ হয়ে ওঠে।তারপর এদের দেহও
হিমায়িত হয়।পুরুষ কাঠের ব্যাঙের চেয়ে স্ত্রী কাঠের ব্যাঙের
দেহ আকারে বড় হয়।এরা পোকামাকড়, ছোটো ছোটো পিঁপড়ে,
ফড়িং খায়।যা কিছু করা এই স্বল্পস্থায়ী গ্রীষ্মকালের মধ্যে।
এদের রক্তে প্রচুর পরিমাণে গ্লুকোজ থাকে।এরা লিথোবেটস
প্রজাতির অন্তর্গত প্রাণী।এদের আসল মৃত্যু হয় যে চারমাস গ্রীষ্মকাল থাকে তার মধ্যে।এরা তিন বছর প্রায় বাঁচে।কাঠের ব্যাঙ,যাদের মৃতদেহে আবার প্রাণ সঞ্চার হয়।
Comments :0