জানা অজানা
নাদনঘাটের খড়ি নদীর শুশুক
তপন কুমার বৈরাগ্য
বর্ষায় যখন খড়ি নদী উত্তাল হয়ে উঠতো
তখন খড়ি নদীর বুকে দেখা যেত বহুসংখ্যক
শুশুক। হঠাৎ জলের ভিতর থেকে কিছুটা
উপরে উঠে আবার জলে ডুবে যেত।
শ্বাস নেওয়ার জন্য এরা দেহটা মাঝে মাঝে
কিছুটা উপরে তুলতো। খড়ি নদী কালনার
নিকট মালতিপুরে গঙ্গার সাথে মিশেছে।
তাই বর্ষার সময় বেশ কিছু শুশুক নাদনঘাটের
কাছাকাছি খড়ি নদীতে আসতো।
এপারে নাদনঘাট
ও পারে সাহাজাদপুর ।খড়ি নদীর বেশ কিছুটা অঞ্চল
মহীসোপানের মতন।যেখানে প্রচুর পরিমাণে মাছ
থাকতো।শুশুক মাংসাশী প্রাণী।এরা মাছের লোভে
গঙ্গা থেকে এই অঞ্চলে আসতো। এখানে যে সব
শুশুক আসতো যাদের ভালো কথায় বলা হয় ডলফিন,
এরা লম্বায় প্রায়১.২মিটার এবং ওজন হতো প্রায়
৪০কেজি। মোষের গায়ের রঙের মতন এদের গায়ের
রঙ।তবে খুব চকচকে।এরা স্তন্যপায়ী প্রাণী।খুব বুদ্ধিমান।
গঙ্গানদীর শুশুককে জাতীয় জলচর প্রাণীর আখ্যা
দেওয়া হয়েছে। আজ খড়ি নদীর বুক থেকে হারিয়ে
গেছে এই ডলফিন বা শুশুক। তার একটা বড় কারণ
এই নদীর জল দিনের পর দিন বিষাক্ত হয়ে যাচ্ছে।
এর জন্য আমরাই দায়ী।ময়লা আবর্জনা, কীটনাশক পদার্থ ,কারখানার ময়লাজল আমরা এই নদীর
বুকে নিত্য ফেলছি।তাই এই নদী থেকে একে
একে হারিয়ে গেছে গলদা চিংড়ি, বেলে,বোয়াল,
এবং অন্যান্য বড় বড় মাছ। তাছাড়া ২০০০সালে
এখানে ভয়ংকার বন্যা হয়। স্বাদু জল হয়ে উঠলো
বিষাক্ত।হারিয়ে গেল জলচর প্রাণীরা।সেই সাথে
হারালাম শুশুককে। দশ মিলিয়ন বছর আগে
মিয়োসিন যুগে যাদের সৃষ্টি আজ তারা বিলুপ্তির
পথে । নদীকে আর বিষিয়ে তুলবো না।সে তার বুকে
স্বাদু জল নিয়ে বয়ে যাক।আবার ফিরে আসুক
সেইসব দুষ্পাপ্য মাছ।আর নাদনঘাটের খড়ি
নদীর শুশুক।
Comments :0