Left front

রাজ্যের প্রাপ্য মেটানোর সঙ্গে দুর্নীতির বিরুদ্ধেও ব্যবস্থার দাবি বামফ্রন্টের

জাতীয় রাজ্য

যুক্তরাষ্ট্রীয় কাঠামো মেনে কেন্দ্রীয় সরকার যাতে রাজ্যের ন্যায্য প্রাপ্য মিটিয়ে দেয় এবং কেন্দ্রীয় প্রকল্পের টাকা নিয়ে দুর্নীতির বিরুদ্ধে আইন অনুযায়ী যাতে ব্যবস্থা নেওয়া হয়, সেই দাবিতে আগামী ১০ ফেব্রুয়ারি কলকাতা সহ গোটা রাজ্যে প্রচার কর্মসূচি সংগঠিত করবে বামফ্রন্ট। তবে মাধ্যমিক পরীক্ষা থাকায় প্রচার কর্মসূচিতে মাইক ব্যবহার করা হবে না, পরীক্ষা কেন্দ্রের আশপাশেও এই কর্মসূচি পালন করা হবে না বলে জানানো হয়েছে। 
সম্প্রতি বামফ্রন্টের সভায় সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে যে, কেন্দ্রীয় সরকার যেভাবে রাজ্যের তালিকাভুক্ত বিষয়ে হস্তক্ষেপ করছে এবং রাজ্যগুলির ন্যায্য প্রাপ্য প্রদানে টালবাহানা করছে, তার প্রতিবাদ জানানো হবে। এই প্রসঙ্গে জ্যোতি বসুর সময়কাল থেকে কেন্দ্র-রাজ্য সম্পর্ক নিয়ে বামফ্রন্টের ধারাবাহিক লড়াইয়ের ঐতিহ্যের কথাও উল্লেখ করা হয়েছে। বামফ্রন্টের পক্ষ থেকে রাজ্যকে প্রাপ্য প্রদানের দাবির পাশাপাশি বলা হয়েছে, একশো দিনের কাজের প্রকল্পে দুর্নীতি রোধে কী ব্যবস্থা নেওয়া যাবে, তা এই প্রকল্পের আইনেই বলা আছে। আবাস যোজনার টাকা নিয়ে দুর্নীতি হলে তার বিরুদ্ধেও কী ব্যবস্থা নিতে হবে, তাও কেন্দ্র ও রাজ্যের সরকার জানে। কিন্তু এরাজ্যে দুর্নীতির বিরুদ্ধে ব্যবস্থা না নিয়ে কেন্দ্র ও রাজ্যের সরকার উভয়েই রাজ্যবাসীর সঙ্গে প্রতারণা ও বঞ্চনা করছে। বামফ্রন্টের দাবি, ত্রিস্তর পঞ্চায়েত এবং রাজ্য সরকারের দুর্নীতির বিরুদ্ধে অবিলম্বে আইনি ব্যবস্থা নিতে হবে এবং কেন্দ্রীয় সরকারের পক্ষ থেকে রাজ্যের প্রাপ্য অর্থ মিটিয়ে দিতে হবে। বামফ্রন্ট বরাবর দুর্নীতির বিরুদ্ধে এবং মানুষের অধিকারের পক্ষে অবস্থান নিয়ে এসেছে। 
বামফ্রন্টের সভায় গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করা হয়েছে ধর্মনিরপেক্ষতার উপরে আক্রমণ নিয়ে। বামফ্রন্টের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, রামমন্দির উদ্বোধনকে ঘিরে এবং জ্ঞানবাপী মসজিদের বিষয়ে বারাণসী আদালতের রায়কে ঘিরে নতুন করে বিশ্ব হিন্দু পরিষদ, বজরঙ দল প্রভৃতি সংগঠন ধর্মনিরপেক্ষতার আদর্শ-বিরোধী কর্মসূচি নিয়ে মানুষের ঐক্য, সংহতি ও সম্প্রীতি নষ্ট করার চক্রান্ত চালাচ্ছে। আরএসএস’র নির্দেশে বিজেপি নতুন করে রাজনীতির সঙ্গে ধর্মের মিশেল ঘটাচ্ছে। এই পরিস্থিতিতে বামপন্থীদের লাগাতার প্রচার কর্মসূচি নিয়ে বিভিন্ন জাতি, ভাষা, ধর্মের মানুষের মধ্যে ঐক্য ও মেলবন্ধনকে শক্তিশালী করতে হবে। যে সব রাজনৈতিক দল আরএসএস-বিজেপি’র সঙ্গে প্রতিযোগিতামূলক সাম্প্রদায়িকতার পথে হাঁটছে, তাদের বিরুদ্ধেও প্রচার করতে হবে। বিজেপি এবং তৃণমূল বিরোধী সমস্ত শক্তিকে একত্রিত করার উদ্যোগ নিতে হবে। 
বামফ্রন্টের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, শিক্ষাক্ষেত্রে নিয়োগ দুর্নীতি ও রেশন দুর্নীতি সহ তৃণমূল যে দুর্নীতির পাহাড় তৈরি করেছে এবং কেন্দ্রীয় সরকার শ্রমিক-কৃষক-খেতমজুর ও সাধারণ মানুষের স্বার্থবিরোধী যে সব নীতি কার্যকর করছে, তার বিরুদ্ধেও প্রচার করতে হবে। কেন্দ্রীয় সরকার সংসদে যে ভোট অন অ্যাকাউন্ট বাজেট পেশ করেছে, তার বিরুদ্ধেও মানুষকে সচেতন করতে প্রচার চালানো হবে। ১৮ থেকে ২৪ ফেব্রুয়ারি এই প্রচারে শামিল হবে বামফ্রন্ট, তবে এক্ষেত্রেও উচ্চ মাধ্যমিক পরীক্ষা থাকায় মাইক্রোফোন ব্যবহার করা হবে না। শ্রমিক-কৃষক-খেতমজুর সংগঠনগুলি আগামী ১৩ ফেব্রুয়ারি যে আন্দোলন কর্মসূচি নিয়েছে, বামফ্রন্ট তাকেও সমর্থন করেছে।

Comments :0

Login to leave a comment