Minor Girl Molested

হাসপাতলেই যৌন নিপীড়ন কিশোরীকে, তুমুল বিক্ষোভে ধৃত অভিযুক্ত

রাজ্য জেলা

শুভাশিস দেব সরকার- হাওড়া 

সিটি স্ক্যান করাতে নিয়ে কিশোরীকে যৌন হেনস্তার শিকার হতে হলো হাওড়া জেলা হাসপাতালে। আর জি করে চিকিৎসক ছাত্রীর ধর্ষণ খুনের প্রতিবাদে সোচ্চার সব মহল। কিন্তু সরকারি স্তরে, এর পরও, যথেষ্ট সতর্কতা নেই। 
ঘটনার প্রতিবাদে রবিবারই হাসপাতালের সামনে রোগীর পরিজনদের সঙ্গে সোচ্চার হয়েছে এসএফআই, ডিওয়াইএফআই। প্রতিবাদ জানিয়েছে সারা ভারত গণতান্ত্রিক মহিলা সমিতিও। কিশোরীর বাড়িতে গিয়ে পরিবারের সঙ্গে কথা বলেছেন সিপিআই(এম) নেতৃবৃন্দ।  
জানা গেছে, গত শুক্রবার নিউমোনিযায় আক্রান্ত হয়ে হাওড়া হাসপাতালে মহিলা বিভাগে ভর্তি হয় শিবপুরের বাসিন্দা ১৩ বছরের ওই কিশোরী। কিশোরীর বাবা জানান যে মেয়েকে ভর্তি করার পর চিকিৎসক সিটি স্ক্যান করতে বলেন। কিন্তু হাসপাতালে সিটি স্ক্যান মেশিন খারাপ ছিল। মাঝে শনি এবং রবিবারও রয়েছে। পরিবার বাইরে থেকে সিটি স্ক্যান করাবে বলে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষকে জানায়। তখন হাসপাতালই বলে যে তাদের পিপিপি মডেলে চালু বেসরকারি সংস্থাকে সিটি স্ক্যান করানো হয়। 

 


প্রতিবাদে হাসপাতালের সামনে রোগীর পরিজনদের সঙ্গে সোচ্চার হয়েছে এসএফআই, ডিওয়াইএফআই।

শনিবার রাতে কিশোরীকে নিয়ে যাওয়া হয় সিটি স্ক্যান করাতে। সঙ্গে মা ছিলেন। মা-কে স্ক্যানের জন্য নির্দিষ্ট ঘরের বাইরে দাঁড় করিয়ে শোরীকে ভিতরে নিয়ে যাওয়া হয়। বেশ কিছুক্ষণ পরে কিশোরী কাঁদতে কাঁদতে বেরিয়ে আসে। অন্য এক রোগীর আত্মীয়র কাছে সাহায্য চায়। কিশোরীর মা দৌড়ে আসেন। তখনই যৌন হেনস্থার কথা বলে কিশোরী। 
এরপরেই খবর যায় এলাকায়। কিশোরীর পরিবার ও পরিজনেরা খবর পেয়ে পৌঁছে যায় হাসপাতালে। চলে বিক্ষোভ। অভিযুক্ত কর্মীকে ধরার চেষ্ট হয়। হাসপাতালে পৌঁছে যান ডিওয়াইএফআই নেতৃবৃন্দ। পৌঁছায় হাওড়া থানার পুলিশও। অভিযুক্ত কর্মী আমন রাজকে জনতার রোষ থেকে উদ্ধার করে নিয়ে যায় পুলিশই। পরিবারের অভিযোগের ভিত্তিতে অভিযুক্তকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। পসকো আইনে অভিযোগ দায়ের করে পুলিশ। রবিবার অভিযুক্তকে আদালতে তোলা হয়। 
রবিবার ভোরে নিরাপত্তার অভাবে আতঙ্কিত কিশোরীর পরিবার হাসপাতাল থেকে কিশোরীকে ছাড়িয়ে বাড়িতে নিয়ে চলে যায়। সকালে বিক্ষোভ দেখান ছাত্র, যুব, মহিলারা। শামিল হন ডিওয়াইএফআই রাজ্য সভাপতি ধ্রুবজ্যোতি সাহা, সম্পাদক মীনাক্ষী মুখার্জি, জেলা সম্পাদক সরোজ দাস, সভাপতি সুভাষ দে, মহিলা নেত্রী কেয়া দাস ও আইনজীবী সব্যসাচী চ্যাটার্জি। ছিলেন এসএফআই’র সর্বভারতীয় নেত্রী দীপ্সিতা ধরও। পরে কিশোরীর পরিবারের সদস্যদের সাথে দেখাও করেন তিনি। হাসপাতালের সুপার নারায়ণ ব্যানার্জিকে ঘেরাও করে বিক্ষোভ দেখাতে থাকেন। হাসপাতালের ভিতরে নিরাপত্তা থাকে না কেন, প্রশ্ন করা হয় সুপারকে।  
এদিন কিশোরীর বাড়িতে যান সিপিআই(এম) হাওড়া জেলা সম্পাদক দিলীপ ঘোষ, পার্টিনেতা পরেশ পাল, শংকর মৈত্র। যান মীনাক্ষী মুখার্জি, ধ্রুবজ্যোতি সাহা ও সব্যসাচী চ্যাটার্জিও। সব সাহায্য ও সহযোগিতার আশ্বাস দেন তাঁরা। কিশোরীর বাবা নেতৃবৃন্দকে জানান দোষীকে উপযুক্ত সাজা দিতে হবে। যাতে আর কোনও কিশোরীকে এই ধরনের ঘটনার সম্মুখীন হতে না হয়। 
ঘটনার নিন্দা করেছেন সারা ভারত গণতান্ত্রিক মহিলা সমিতির রাজ্য সম্পাদক কনিনীকা ঘোষ বোসও।

Comments :0

Login to leave a comment