নতুনপাতা
গল্প
উপস্থিত বুদ্ধি
সৌরীশ মিশ্র
(গত সংখ্যার পর)
মুদি দোকানে কেনাকাটা সেড়ে বাড়ি ফিরে রাতুল দেখল, তার বাবা এসে গেছেন অফিস থেকে। টিফিন করছেন। রুটি-তরকারি।
বাড়িতে ঢুকেই বাবা-মাকে সামনে পেয়েই আনা জিনিসপত্রগুলো টেবিলে রাখতে রাখতে সে বলতে থাকল কি কি হয়েছে একটু আগে। রাতুলের সব কথা বলা শেষ হতে সময় লাগল মিনিট পাঁচেক। আর, ওর বলা শেষ হওয়ার কয়েক মুহূর্তের মধ্যেই রাতুলের বাবার মোবাইল ফোনটা বেজে উঠল।
"দ্যাখ তো কার ফোন?" রাতুলকে জিজ্ঞেস করেন রাতুলের বাবা।
ফোনের স্ক্রিনে নাম দেখে রাতুল বলল, "মিলন জ্যেঠুর ফোন, বাবা।"
"হাত তো এঁটো। ফোনটা ধরে স্পিকারে দে।"
রাতুল তাই করে।
"রানা, বাড়ি ফিরেছ?" ফোনের ওপার থেকে ভেসে আসে মিলন রায়ের কণ্ঠস্বর।
"হ্যাঁ, মিলন দা।"
"রাতুলও ফিরেছে তো?"
"হ্যাঁ ফিরেছে।"
"তা, শুনেছো বোধহয় সব কিছু ছেলের কাছে।"
"হ্যাঁ, শুনেছি। ওটা কি লাইভ ওয়ার ছিল মিলন দা?"
"হ্যাঁ, লাইভ ওয়ারই ছিল ওটা। তোমার ছেলে আমাকে জানানোর পর আমি ইলেকট্রিক অফিসে খবর দিয়েছিলাম। ওঁরা এসেছেন। এখনও কাজ করছেন। ওনারাও তোমার ছেলের খুব প্রশংসা করলেন। আর করবে নাই বা কেন! ও যদি আমাকে ঠিক সময় অ্যালার্ট না করতো আজ পাড়ায় একটা অ্যাকসিডেন্ট হয়েও যেতে পারতো। আমি তো দেখেছি কি ডেনজারাস ভাবে ছেঁড়া তারটা পড়ে ছিল রাস্তা জুড়ে। তাই রানা, পাড়া থেকে আমরা রাতুলকে পুরস্কৃত করবো। ক'দিন বাদেই তো নববর্ষের অনুষ্ঠানটা। সেইখানেই। ঠিক আছে রানা, রাখি এখন। পরে কথা হবে।"
"হ্যাঁ হ্যাঁ রাখুন মিলন দা।"
ফোন লাইনটা কেটে যায়।
রাতুলের বাবা এবার তাকান তাঁর ছেলের দিকে। মায়ের পাশে দাঁড়িয়ে এতক্ষণ বাবার আর মিলন জ্যেঠুর কথা শুনছিল রাতুল।
"আয় তো বাবা আমার কাছে।" রাতুলের বাবা দু'হাত বাড়িয়ে দেন ছেলের দিকে।
রাতুল দ্রুত গিয়ে ওর বাবার বুকে ঝাঁপিয়ে পড়ে। এঁটো ডান হাতটা সামলে রাতুলের বাবাও রাতুলকে জড়িয়ে ধরেন।
আর, ঐ দৃশ্য দেখে রাতুলের মা অদিতির দু'চোখে আনন্দাশ্রু এসে যায়।
(সমাপ্ত)
Comments :0