প্রতিবাদে ভীত মুখ্যমন্ত্রী পুলিশ দিয়ে মানুষের কন্ঠস্বর বন্ধ করতে চাইছেন, আধা ফ্যাসিবাদী সন্ত্রাস চালাচ্ছেন পুলিশকে দিয়ে। রবিবার সিপিআই(এম)’র রাজ্য সম্পাদক মহম্মদ সেলিম এই অভিযোগ করে বলেছেন, অপরাধীদের না ধরে এখন আধা ফ্যাসিবাদী সন্ত্রাস চালাচ্ছে পুলিশ। ধর্ষণ করে খুনের বিরুদ্ধে প্রতিবাদের কন্ঠস্বর স্তব্ধ করতে প্রতিবাদীদের বাড়িতে বাড়িতে হানা দিচ্ছে, রাতে গিয়ে কড়া নাড়ছে, ফোন করে ভয় দেখাচ্ছে পুলিশ। কলকাতা পুলিশ আর রাজ্য পুলিশের মধ্যে প্রতিযোগিতা চলছে জমায়েত বন্ধ করতে বিএনএস প্রয়োগ নিয়ে। মুখ্যমন্ত্রী বাংলাদেশ থেকে শিক্ষা নিন, পুলিশ দিয়ে মানুষের মুখ বন্ধ করতে পারবেন না।
এদিন স্টেডিয়ামের সামনে ক্রীড়ামোদীদের জমায়েতে পুলিশের আক্রমণকে নিন্দা করে সেলিম বলেছেন, মানুষ ন্যায়বিচার চাইছে, তাদের স্টেডিয়ামে যেতে ফোন করে নিষেধ করেছে পুলিশ। কেন, কার আদেশে? মুখ্যমন্ত্রী ‘খেলা হবে’ বলে স্লোগান দিয়েছিলেন, এখন ইস্টবেঙ্গল মোহনবাগান মহামেডান সমর্থকসহ সব ক্রীড়ামোদীরা ‘বিচার চাই’ বলতেই মুখ্যমন্ত্রী খেলা বন্ধ করে দিলেন! ‘ঘটি বাঙাল একস্বর/ আর জি কর, আর জি কর’ বলে বাংলার যৌবন রাস্তায় নেমেছে। পুলিশ খেলার মাঠের ভীড় সামাল দিতে পারবে না বলে খেলা বন্ধ করেছে। আর প্রতিবাদ দমন করতে দশগুণ পুলিশ নামিয়ে প্রতিবাদীদের লাঠিপেটা করছে। আমরা এই আন্দোলনকে সমর্থন জানাই, আন্দোলনকারীদের প্রতি সংহতি জানাই। যারা পুলিশের হাতে আহত হয়েছেন তাঁদের চিকিৎসার জন্য জুনিয়ার ডাক্তার সহ স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন সবাইকে এগিয়ে আসতে অনুরোধ করছি। পুলিশের ধরপাকড়ে আইনী সহায়তা দেওয়ার জন্যও আইনজীবীরা এগিয়ে আসবেন।
পুলিশের ভূমিকার নিন্দা করে সেলিম আরও বলেছেন, আর জি কর হাসপাতালের ভিতরে কারা ভাঙচুর করলো তাদের ছবি নাম আমরা সোসাল মিডিয়াতে দিয়েছি। কিন্তু পুলিশ তাদের না ধরে বাইরে যারা প্রতিবাদ করছিল তাদের চিহ্নিত করে হামলার ঘটনাকেও ধামাচাপা দিতে চাইছে। যারা সোসাল মিডিয়াতে পোস্ট করে প্রতিবাদ করেছে, পুলিশ তাদের ফোন করে ভয় দেখাচ্ছে। পুলিশের কাজ কি ভয় দেখানো? সিটি অব জয়’কে সিটি অব ভয়তে পরিণত করতে চাইছে পুলিশ দিয়ে? কী কারণে পুলিশ ডাক্তারদের নোটিস পাঠিয়ে ডাকছে? ডা. সুবর্ণ গোস্বামী নিহত মহিলা ডাক্তারের বাবা মায়ের পাশে দাঁড়িয়েছিলেন, এখন তাঁকে হেনস্থা করছে, ডা. কুনাল সরকারকেও ডেকেছে পুলিশ। আমরা সবাইকে বলছি তাঁদের পাশে দাঁড়ান।
সেলিম বলেন, তৃণমূল সাংসদ সুখেন্দুশেখর বিনীত গোয়েলকে সিবিআই’র ডাকা উচিত বলায় কলকাতা পুলিশ সুখেন্দুশেখরকেও ডাকছে। যুবনেত্রী মীনাক্ষী মুখার্জিকে ডেকেছে, এসএফআই’র সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক ময়ূখ বিশ্বাসের বাড়িতে পুলিশ গেছে। সাতজন ছাত্রযুব মহিলাকে নোটিস দিয়েছে যারা বাইরে বিক্ষোভ দেখাচ্ছিলেন, এদের মধ্যে পাঁচজনই মহিলা। পুলিশের ধরার কথা অপরাধীদের, তার বদলে ডাকছে প্রতিবাদীদের।
সেলিমের হুঁশিয়ারি, কতজনকে এভাবে আটকাবে? এরাজ্যে তো বটেই, দেশের বিভিন্ন অংশে, বিশ্বজুড়ে প্রতিবাদ হয়েছে আর জি করের ঘটনার। স্বাস্থ্য দপ্তর এবং পুলিশকে দিয়ে অপরাধ ধামাচাপা দেওয়ার চেষ্টা হচ্ছে বলেই মানুষের এত বেশি রাগ, এত বেশি অনাস্থা। মুখ্যমন্ত্রী বাংলাদেশ থেকে আতঙ্ক বোধ করছেন, কিন্তু বাংলাদেশ দেখে শিক্ষা নিচ্ছেন না। সমাজের সব অংশ থেকে প্রতিবাদ হচ্ছে, এই প্রতিবাদ আরও বাড়বে। মানুষ কী করতে পারে, সেটা করে দেখাচ্ছে, বালির বাঁধ দেওয়ার মতো করে পুলিশ ব্যবহার করে মুখ্যমন্ত্রী পার পাবেন না।
Md Salim Police
প্রতিবাদ দমাতে পুলিশি সন্ত্রাস, নিন্দায় সেলিম
×
Comments :0