Probandha — ASHOK ADHIKARY / MUKTADHARA - 20 September

প্রবন্ধ — জি-২০র বাস্তবতা ও জলবায়ু সংবাদ / মুক্তধারা - ২০ সেপ্টেম্বর

সাহিত্যের পাতা

Probandha    ASHOK ADHIKARY   MUKTADHARA - 20 September

প্রবন্ধ মুক্তধারা
জি-২০র বাস্তবতা জলবায়ু সংবাদ
অশোক অধিকারী 

( গত সংখ্যার পর )

পরিবেশ বান্ধব কর্ম সংস্থান বাড়াবে ও পরিবেশের ভারসাম্য বজায় রাখবে।এদিকে বিজ্ঞান, প্রযুক্তি ও পরিবেশ দপ্তরের সংসদীয় কমিটির চেয়ারম্যান কংগ্রেস নেতা জয়রাম রমেশ বলছেন,“ এনজিটি বা ন্যাশনাল গ্রিন ট্রাইব্যুনালকে অনেকদিন আগেই অকেজো করে দিয়েছে কেন্দ্রের বিজেপি সরকার।আগের অংশে যে কর্মসংস্থানের কথা বলা হল তা দফারফা এই আমলে।২০১৮ সালেই সেখানে শূন্যপদ ৭০%য় গিয়ে দাঁড়িয়েছে। হাইকোর্টের নির্দেশের মান্যতা না দিয়ে গ্রিন ট্রাইবুনালের গুরুত্বপূর্ণ পদগুলিতে বিজ্ঞানী ও বিশেষজ্ঞদের বাদ দিয়ে সরকারী অনুগতদের একতরফা ভাবে বসানো হচ্ছে।”তাহলে মোদ্দা কথাটা এমনই দাঁড়ায় যে প্রধানমন্ত্রী জি-২০ সম্মেলনকে তাঁর ভোট প্রচারের ও ভাবমূর্তি নির্মাণের মঞ্চ হিসাবে ব্যবহার করে বার্তা দিতে চেয়েছেন, যে তাঁর সরকার পরিবেশ রক্ষায় এককথায় জলবায়ু রক্ষায় অন্যান্য দেশের থেকে এগিয়ে থেকে বিশ্বকে নেতৃত্ব দিচ্ছে।আবার ‘বসুধৈব কুটুম্বকম’-র সর্বজনীন বার্তা দিয়ে বোঝাতে চাইলেন হিন্দুত্বের যে এসেন্স তাতেও বহুত্ববাদের সহনশীলতা বিদ্যমান আছে।কিন্তু ভারতের যে পরিবেশ তাতে সংখ্যালঘু মানুষের প্রত্যহ নির্যাতনের যে গোঙানি, নিম্নবর্গের মানুষের ওপর যে অত্যাচার প্রত্যক্ষ করছে দেশের মানুষ তাতে বিশ্বের মানুষের আত্মীয়তা ধূলোয় মিশেছে।


   বিশ্বের মঞ্চে তাঁর পরিবেশ রক্ষার যে শপথ ধ্বনিত হয়েছে তার কিয়দংশ অধিকার যদি বনাঞ্চলের মানুষেরা পেতেন তাহলে প্রান্তিক মানুষের বনাঞ্চলের অধিকার ফিরিয়ে দেওয়ার জন্য এত আন্দোলন দানা বাঁধত না। নগরকেন্দ্রিক কর্পোরেট দুনিয়ার ভূমি অঞ্চল অধিকার করার প্রক্রিয়া সরকারী মদতে ও সহযোগিতায় যেভাবে প্রসারিত হচ্ছে তাতে আগামীতে সার্বিক পরিবেশের মৃত্যুঘন্টা বাজবে সন্দেহ নেই। ভারত একটি সুযোগ পেল জি-২০ সম্মেলন অনুষ্ঠিত করার বলে যাঁরা নিজেদের পিঠ নিজেরাই চাপড়ে যাচ্ছেন তাঁদের আগামী ২০৩০ পর্যন্ত অপেক্ষা করার প্রয়োজন হবে না,কারন‘গ্লোবাল ফরেস্টওয়াচ’তাদের একটি সমীক্ষার নির্যাস সমক্ষে এনে জানাচ্ছে যে,‘ইতিমধ্যে সুইজারল্যান্ডের আয়তনের(৪১ হাজার ২৮৫বর্গ কিমি) সম পরিমাণ চিরহরিৎ বন ধ্বংস হয়ে গেছে।২০২২সালেই বিশ্বে ৪১হাজার বর্গ কিমি চিরহরিৎ বনভূমি হারিয়ে গেছে। 

ফলত বিশ্বে ২৭০কোটি টন কার্বন ডাই অক্সাইড বৃদ্ধি পেয়েছে।যার ফলে জলবায়ু সংকট প্রকট আকার নিয়েছে।’’ তথ্য সামনে আসতে বিশ্বের উন্নত ও উন্নয়নশীল দেশ গুলি সম্মিলিত সভায় রেজল্যুশন নিয়ে আগামী ২০৩০ সাল নাগাদ বনভূমি ধ্বংস শূন্যে নামিয়ে আনার কথা ঘোষণা করলেও বাস্তব অন্য কথা বলে। যেখানে ২০২১র তুলনায় ২০২২সালে বেশি চিরহরিৎ বন ধ্বংস করা হয়েছে বলা হচ্ছে।কথা ও কাজের এই বৈপরীত্য থেকেই প্রমান হয়ে যায় আমাদের দায়বদ্ধতা  দাঁড়িয়ে আছে জি-২০র আলো ঝলমলে প্রসেনিয়ামে।কথা ও কাজের এই বিসমিল্লাহ গলদের মাঝে পরবর্তী জি-২০ সম্মেলনের ব্যাটন যায় ব্রাজিলের রাষ্ট্রপতি লুলা দ্য সিলভারের হাতে।আবেগদৃপ্ত কন্ঠে আগামী সম্মেলনের মূল থিম ‘ন্যায়সঙ্গত বিশ্ব,বেঁচে থাকার মতো গ্রহ’ উচ্চারণ করে তিনি প্রত্যয়ী ভাষণ দেন। এই বেঁচে থাকার বিশ্বকে আগামীর বাসযোগ্য করার অঙ্গীকারে থুনবার্গরা কোনো জি-২০ সম্মেলনের জন্য অপেক্ষা করে না।তাদের লড়াই নিরন্তর।‘ইন্ডিয়া’ ও ‘ভারত’ যে নামেই ডাকা হোক না কেন ক্ষুধা ও বৈষম্যমুক্ত দেশে মুক্তবায়ুতে নিঃশ্বাস নিতে পারবে তো আগামী প্রজন্ম!


 

Comments :0

Login to leave a comment