STORY — NATUN BANDHU / NAYANIKA GHOSH

গল্প / লক-ডাউনের গপ্পো / নতুন বন্ধু — নয়নিকা ঘোষ / নতুনপাতা / ৩১ ডিসেম্বর

ছোটদের বিভাগ

STORY  NATUN BANDHU   NAYANIKA GHOSH

নতুনপাতা
গল্প
নতুন বন্ধু
লক-ডাউনের গপ্পো
নয়নিকা  ঘোষ

হটাৎ করে লক-ডাউন এসে আমাদের সকলের জীবনটা পাল্টে দিল। এই শব্দটা আমাদের জানা ছিল না। তাই বুঝতে সময় লেগেছে। করোনা ভাইরাস ঠেকাতে পৃথিবীর সব দেশেই নাকি এটা করা হয়েছে। স্কুল বন্ধ, ছোট-বড় কেউ বাড়ি থেকে বাইরে বের হতে পারবে না। সব সময় মাস্ক পড়ে থাকতে হবে, বারেবারে হাতু ধুতে হবে, হ্যান্ড স্যানিটাইজার মাখতে হবে। ট্রেন-বাস-গাড়ি-ঘোড়া সব বন্ধ। মানুষ গৃহবন্দী। এর মধ্যে একদিন থালা বাজানো হলো, প্রদীপ জ্বালানো হলো, এতে নাকি করোনা দূর হয়ে যাবে! কিছুই হল না। ২০২০ সালের পড়াশুনা সব নষ্ট হয়ে গেল। আমাদোর “কাঁচা হাতে লেখা” প্রকাশও বন্ধ হয়ে গেল। কি করে হবে? আমরা জেঠুর বাড়ি যেতেই পাড়ছি না। 
যাহোক, লকডাউনের দিনগুলি যেন কাটতে চায় না। মন খারাপ হয়ে যাচ্ছে। আমরা সকালে ঘরে, রাতে ছাদে, লোড শেডিং হয়ে গেলে লুকোচুরি খেলতাম দাদাভাই, দিদিভাইদের সাথে। কখনও কখনও লুডো খেলতাম। আমার লুডো খেলতে ভাল লাগে। কিন্তু লুডো খেলার বোর্ডটা সেদিন খেলতে খেলতে ভেঙ্গে গেল। আমার মনটা খারাপ হয়ে গেল। তারপরে কার্ডবোর্ডের উপর লুডোর ছবি এঁকে খেলতাম। লকডাউনে বাড়ির বাইরে যাওয়া যেত না তাই নতুন বোর্ড কেনা যায় নি। তারপর যখন, লকডাউন আস্তে আস্তে তুলতে শুরু করলো, একদিন মামাই আমার জন্য একটা নতুন লুডে কিনে আনল। আমি খুব খুশি, সারাদিন কখনও দাদাভাইর সাথে, মাঝে মাঝে  মা, ভালোমা, দিদুন, মামাই-র সাথে খেলতাম। 
একদিনের ম্যাচের কথা বলি। সেদিন রাতে লোডশেডিং হয়ে গিয়েছিল। ইমারজেন্সি জ্বালিয়ে আমি, মা, দাদাভাই, বড় দাদা – আমরা চারজনে খেলছিলাম। আমার সবুজ গুটি, মা নীল, দাদাভাই লাল, বড়দাদা হলুদ। প্রথম ম্যাচে দাদা ভাই জিতে গেল, তারপর আবার দাদা ভাই আবার জিতে গেল, তারপর আমি জিততে জিততে হেরে গেলাম। তারপর আরও একটি ম্যাচ। এর শেষের দিকে হটাৎ করে ইমারজেন্সির লাইট চলে গেল। আমার মনটা খারাপ হয়ে গেল, বারবার জিততে জিততে হেরে যাই । তবে, খেলাতে হারজিত তো আছেই। এর জন্য সব ভুলে পরের দিন আবার আমরা চারজন লুডোর বোর্ড নিয়ে বসলাম। এবারে মা প্রথমে জিতে গেল। তারপর দাদা ভাই, আমি আর বড়দা, খেলা চলছে তো চলছে। আমি বড়দার থেকে দুই গুটিতে জিতে গেলাম। 
এভাবেই লুডো খেলে লকডাউনের দিন কাটাই। বছর শেষ হয়ে গেল। কবে যে স্কুল খুলবে!

 

 

 

 

 

 

 

Comments :0

Login to leave a comment