protest against deprivation

বঞ্চনার প্রতিবাদে ধর্নায় ছাত্রছাত্রী ও অভিভাবকরা

জেলা

বছর শেষ হতে চলেছে। মাধ্যমিক, উচ্চমাধ্যমিক পরীক্ষার হাতে আছে মাত্র কয়েকটা মাস। কিন্তু এখনও মেলেনি পাঠ্যপুস্তক। পড়ুয়াদের ভবিষ্যৎ নিয়ে ছিনিমিনি খেলা হচ্ছে। পর্যাপ্ত শিক্ষক নেই,পর্যাপ্ত শ্রেণিকক্ষ নেই। বঞ্চনার অভিযোগ তুলে সাঁওতালি মাধ্যম স্কুলের ছাত্র-ছাত্রী থেকে অভিভাবকেরা সোমবার জেলা শাসকের দপ্তরের সামনে অবস্থান-বিক্ষোভে শামিল হলেন। জেলা বিদ্যালয় পরিদর্শক(মাধ্যমিক) মহুয়া বসাকের বক্তব্য, বিদ্যালয় ভবনের বিষয়টা জেলা পরিষদ দেখছে। এই সপ্তাহে শিক্ষা দপ্তরে সমস্ত বিষয় পাঠানো হবে। শিক্ষক নিয়োগের ব্যাপারে তাঁর বক্তব্য গোটাটাই রাজ্যের ব্যাপার। সাঁওতালি ভাষার বই ছাপানোর বিষয়ে তাঁর বক্তব্য এটাও রাজ্যের ব্যাপার। অন্য জেলাতেও একই সমস্যা। এখন আপাতত বাংলা বই থেকেই ট্রান্সলেট করে পড়াতে বলা হয়েছে। 
পুরুলিয়া জেলার ৬টি সাঁওতালি মাধ্যমের ছাত্রছাত্রীদের বঞ্চনার প্রতিবাদে ধর্নায় বসলেন ছাত্রছাত্রী সহ অভিভাবকরা। জেলার ৩টি ব্লকের ৬টি স্কুলের ছাত্র-ছাত্রীসহ অভিভাবকরা এই ধর্নায় বসেছেন পুরুলিয়া শহরের জেলা শাসকের দপ্তরের সামনে। বান্দোয়ান ব্লকের শিরিশগোড়া, সাঁতুড়ি ব্লকের টারাবাড়ি, খারবাঁধ ও কাশিপুর ব্লকের কেশরপুর ও লোহাট সোনাইজুড়ি হাইস্কুলের ছাত্রছাত্রীদের নিয়ে ধর্নায় যোগ দিয়েছিলেন স্কুলের পার্শ্ব শিক্ষক এবং ভলেন্টিয়ার টিচাররাও। অভিযোগ সাঁওতাল মাধ্যমের স্কুলগুলিতে সামান্যতম পরিকাঠামো নেই। তার মধ্যেই পড়াশোনা চালিয়ে যেতে হচ্ছে ছাত্রছাত্রীদের। সরকার সাঁওতাল ভাষাকে স্বীকৃতি দিলেও স্কুলে পড়াশোনার জন্য প্রয়োজনীয় বই এখনও পায়নি একাদশ দ্বাদশ শ্রেণীর পড়ুয়ারা। সামনেই উচ্চমাধ্যমিক পরীক্ষা। কি ভাবে পরীক্ষায় বসবে ছাত্রছাত্রীরা ভেবেই পাচ্ছে না। নেই কোনো স্থায়ী শিক্ষক, প্রয়োজনের তুলনায় কম সংখ্যক পার্শ্বশিক্ষক দিয়েই বছরের পর বছর চলছে সাঁওতালি ভাষার স্কুল। বছরের পর বছর ভলেন্টিয়ার শিক্ষক দিয়ে বিদ্যালয় চালানো হচ্ছে সেই সমস্ত ভলেন্টিয়ার শিক্ষকদের স্থায়ী পদে নিয়োগ তো দূরের কথা, পার্শ্বশিক্ষকের মর্যাদাও দেওয়া হচ্ছে না। এলাকার ছাত্রছাত্রীদের কথা মাথায় রেখে এলাকার বেশ কয়েকজন যুবক বিনা পারিশ্রমিকে শিক্ষাদান করেন। ছাত্রছাত্রীর তুলনায় শ্রেণী কক্ষ কম থাকায় খোলা আকাশের নিচে ক্লাস করতে বাধ্য হয়। প্রশ্ন উঠছে সাঁওতালি ভাষাকে স্বীকৃতি দেওয়ার পরেও কেন পর্যাপ্ত পরিমানে সুবিধা পাচ্ছে না সাঁওতাল মাধ্যমের ছাত্রছাত্রীরা। এই পরিস্থিতির জন্য রাজ্যে সরকারকেই দায়ী করছেন সকলে। উদয়নারায়ণ কিস্কু নামে সোনাইজুড়ি তিলকা মুর্মু  হাই স্কুলের ভলেন্টিয়ার শিক্ষক জানিয়েছেন ২০২১ সাল থেকে তিনি বিদ্যালয় ভলেন্টিয়ার শিক্ষক হিসেবে কাজ করছেন। অষ্টম শ্রেণী পর্যন্ত ৫ জন প্যারা টিচার দিয়ে পড়াশোনা করা হয়। কিন্তু নবম থেকে দ্বাদশ শ্রেণী পর্যন্ত কোন শিক্ষক নেই। বিল্ডিং নেই। 
তার প্রশ্ন যদি শিক্ষক না থাকে তবে কেন অহেতুক নবম থেকে দ্বাদশ শ্রেণীর অনুমতি দেওয়া হয়েছিল। কাশিপুরের লোহাট সোনাইজুড়ি তিলকা মুর্মু হাই স্কুলের উচ্চ মাধ্যমিক পরীক্ষার্থী আফিস মুর্মুর বক্তব্য কোন বই পাওয়া যায়নি। একজন শিক্ষক নেই । ভলেন্টিয়ার টিচাররা সাহায্য করেন।  কিভাবে যে উচ্চ মাধ্যমিক দিতে হচ্ছে তা তারা  টের পাচ্ছেন। বাংলা মাধ্যমের বই থেকে সাহায্য নিতে হচ্ছে। জেলা শিক্ষা দপ্তর সূত্রে জানা গিয়েছে মোট ৬টি হাই স্কুলের জন্য ৩৬জন পার্শ্ব শিক্ষক রয়েছেন।

Comments :0

Login to leave a comment