Birbhum Blast Case

খয়রাশোলে বিস্ফোরণ কান্ডে তৃণমূল নেতার দশ বছরের কারাদন্ড

রাজ্য জেলা

বাড়িতে মজুদ করা হয়েছিল বোমা। সেই বোমা ফেটে হয়েছিল বিস্ফোরণ। উড়ে যায় আস্ত বাড়ি। সাড়ে পাঁচ বছর আগের ঘটনা। সেই ঘটনার তদন্ত চালিয়েছে এনআইএ। প্রশ্ন রেখেই সেই তদন্ত শেষে সাজা ঘোষণা হয়েছে মাত্র একজন অভিযুক্তের। অথচ মূল আরও দুই অভিযুক্ত এখনও ‘ফেরার’। লক্ষ টাকা পুরস্কারের ঘোষণা সংবলিত পোস্টার সাঁটিয়েও দুই অভিযুক্তর নাগাল পায় নি জাতীয় তদন্তকারী সংস্থা। পাশাপাশি, বীরভূমের খয়রাশোলের বুকে একের পর এক মজুদ বোমা ফেটে লাশের পর লাশ পড়লেও, খোদ অঙ্গনওয়ারি কেন্দ্র উড়ে গেলেও, সেই সব ঘটনা মুক্তই থেকেছে উচ্চ পর্যায়ের তদন্ত থেকে। বরং অভিযুক্তদের বেমালুম গায়ে হাওয়া লাগিয়ে ঘুরে বেড়ানোর তালিকা লম্বাই হয়েছে। বলার অপেক্ষা রাখে না, প্রায় সব ঘটনার মূলেই রয়েছে শাসকদলের নেতা অথবা তাদের আশ্রিত দুষ্কৃতীরা। তেমনই একজন বাবলু মন্ডল। যার দশ বছরের সশ্রম কারাদন্ডের সাজা ঘোষণা করেছেন কলকাতার এনআইএ আদালতের বিচারক। শনিবার হয়েছে এই সাজা ঘোষণা। এনআইএ’র আইনজীবি দেবাশিস মল্লিক চৌধুরী জানিয়েছেন, ‘‘বিস্ফোরক পদার্থ মজুদ আইনে অভিযুক্ত বাবলু মন্ডলকে দোষী সাব্যস্ত করেছেন বিচারক। তার দশ বছরের সশ্রম কারাদন্ড ও দশ হাজার টাকা জরিমানা এবং তা অনাদায়ে আরও এক বছর কারাযাপনের নির্দেশ দিয়েছেন বিচারক। মামলায় অধরা আরও দুই অভিযুক্তর বিরুদ্ধে হুলিয়া জারি করা হয়েছে।’’
ঘটনা ২০১৯ সালের ১৯ সেপ্টেম্বরের। পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, ঘটনার দিন লোকপুর থানার নাকড়াকোন্দা পঞ্চায়েতের গাংপুর গ্রামের বাসিন্দা বাবলু মণ্ডলের বাড়িতে মজুদ বোমা ফেটে বিস্ফোরণ ঘটে। টিনের চালের বাড়ি উড়ে যায়। জেলা পুলিশ, সিআইডি’র হাত ঘুরে তদন্তভার যায় এনআইএ’র হাতে। এলাকার মানুষের কথায়, তৃণমূলের মদতপুষ্ট দুষ্কৃতী এই বাবলু মন্ডল। যাকে নানা দৌরাত্বের কাজে শাসকদল ব্যবহার করেছে। মাঝে তাকে পঞ্চায়েত নির্বাচনে প্রার্থী করারও জল্পনা উড়েছিল এলাকায়। তার বাড়িকেই যে বোমা বাধা, বোমা মজুদের ঠিকানা করা হয়েছিল তা স্পষ্ট হয়ে যায় বিস্ফোরণের পর। মুল অভিযুক্তর তালিকায় রয়েছে বাবলুর দুই ছেলে নিরঞ্জন ও মৃত্যুঞ্জয় মণ্ডলও। বাবার থেকে তার দুই ছেলের দিকে অভিযোগের আঙুল আরও অনেক বেশি এলাকাবাসীর। অথচ তারা রয়ে গেছেন অধরাই। এতেই তদন্তকারীদের ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে জোরালো। তদন্তভার নেওয়ার পর একাধিক বার গ্রামে গিয়েছিল তদন্তকারীরা। বাবলু মন্ডল গ্রেপ্তার হলেও পরে জামিন পান। ২০২২ সালে তদন্ত শেষ করে চার্জশিট জমা দেয় এনআইএ। গত বছর এই বিস্ফোরণ-কাণ্ডে 'ফেরার' দুই অভিযুক্তের সন্ধান পেতে তাদের ছবি সংবলিত পোস্টার সাঁটিয়ে ১ লক্ষ টাকা করে পুরস্কার ঘোষণা করেছিল এনআইএ। ফল মেলে নি। বিচার প্রক্রিয়া শেষে গত বৃহস্পতিবার অভিযুক্ত বাবলু মন্ডলকে দোষী সাব্যস্ত করে এনআইএ আদালত। শনিবার তার দশ বছরের সশ্রম কারাদন্ডের সাজা শুনিয়েছেন বিচারক।

Comments :0

Login to leave a comment