রামশঙ্কর চক্রবর্তী
চারদিকে জল। কিন্তু খাওয়ার জলও নেই। এমনই অবস্থা পাঁশকুড়ার পূর্ব মেদিনীপুরের পাঁশকুড়ায় বুধবার এসেছিলেন মুখ্যমন্ত্রী। বিক্ষোভ থামাতে স্থানীয়দেরই সরিয়ে দিলেন তৃণমূলের নেতা কর্মীরা। তবু বিক্ষোভ থামছে না।
পাঁশকুড়ায় এমন বন্যা দেখেননি আগে, বলছেন প্রবীণরাও। ডুবে গিয়েছে ১৬ নম্বর জাতীয় সড়ক, বম্বে রোড বলেই যা পরিচিত বেশি। জাতীয় সড়কের প্রায় ২ কিলোমিটার ডুবে রয়েছে। কাঁসাইয়ের পাঁচটি বাঁধের সবক’টি ভেঙেছে। দীর্ঘদিন বাঁধের সংস্কার হয় না। তৃণমূল সরকারের বা জনপ্রতিনিধিদের বারবার আশ্বাসই মেলে শুধু। বন্যার্ত বিপন্ন জনতার ক্ষোভ বাড়িয়েছে এই অবহেলা। সঙ্গে রয়েছে দুর্নীতির অভিযোগ।
মুখ্যমন্ত্রী আসার কিছু আগেই সঙ্কট জানাতে জড়ো হয়েছিলেন স্থানীয়রা। বেগতিক দেখে নেমে পড়ে পাঁশকুড়া ব্লকের তৃণমূলের নেতা কর্মীরা। বিক্ষুব্ধ জনতাকে সরিয়ে দিতে প্রবল তৎপর ছিল তৃণমূলের এই বাহিনী।
মুখ্যমন্ত্রী পৌঁছতেই দেখা গিয়েছে তাঁকে ঘিরে রয়েছেন কেবল তৃণমূলের বাহিনী। সরিয়ে দেওয়া হয়েছে স্থানীয় বন্যার্তদের। তার মধ্যে বলতে শোনা গিয়েছে মুখ্যমন্ত্রীকে, ‘দিস ইজ নট বেঙ্গল ওয়াটার...’।
বস্তুত এই যুক্তিই দিয়ে চলেছেন মুখ্যমন্ত্রী। জল ছাড়ার কারণে সমস্যা। ডিভিসি যদিও বরাবরই জল ছাড়ে।
দূরে দাঁড়িয়েও কয়েকজনকে চিৎকার করতে শোনা যায়, ‘খাওয়ার জল নেই, জল নেই’। এমন এক বাসিন্দাকে, পরে জানা গেল তাঁর নাম অরূপ সিং, জিজ্ঞাসাবাদ করে পুলিশ। তাঁর বাড়ি কোথায়, নাম কী, কেন চিৎকার করছিলেন- এসব প্রশ্ন করতে শোনা যায়।
মুখ্যমন্ত্রী চলে যেতেই ক্ষোভের বাঁধ ভাঙে। স্থানীয়রা ফের প্রশাসনের উপর ক্ষিপ্ত। তাঁরা বলছেন, ‘রিহার্সাল শেষ। এল, ছবি তুলল, চলে গেল’।
পাঁশকুড়ার পাশাপাশি প্লাবিত জেলার বহু এলাকা। কেলেঘাইয়ের বাঁধ ভেঙে জলে ডুবে রয়েছে পটাশপুর, অমরপুর। রূপনারায়ণের বাঁধ টপকে জল ঢুকছে তমলুকে। কোলাঘাট প্লাবিত। বন্যায় বিপর্যস্ত বিস্তীর্ণ গ্রামাঞ্চল।
Comments :0