FLOOD CPI(M)

বন্যা মোকাবিলায় কর্মীদের পূর্ণ উদ্যোগের আহ্বান সিপিআই(এম)’র

রাজ্য

ভেসে গিয়েছে উদয়নারায়ণপুর। ছবি: মণিরুল হক।

রাজ্যে ভয়াবহ বন্যা পরিস্থিতিতে পার্টিকর্মীদের সতর্ক-সক্রিয় থাকার আহ্বান জানালো সিপিআই(এম)। উদ্ধার। ত্রাণ, চিকিৎসা, পুনর্বাসনের জন্য সরকারের ওপর লাগাতার চাপ বজায় রাখতে বলে পার্টির রাজ্য কমিটি। রেড ভলান্টিয়ারদের সজাগ ও সতর্ক থাকার আহ্বান জানানো হয়েছে।
সিপিআই(এম) রাজ্য সম্পাদক মহম্মদ সেলিম প্রেস বিবৃতিতে বলেছেন, ‘‘গত কয়েকদিন ধরে একটানা ভারী বৃষ্টি ও জলাধার থেকে জল ছাড়ার ফলে রাজ্যের বেশ কয়েকটি জেলায় বন্যা পরিস্থিতি দেখা দিয়েছে। হুগলী, বীরভূম, পূর্ব মেদিনীপুর, পশ্চিম মেদিনীপুরে বহু মানুষ দুর্গত অবস্থায় রয়েছেন। এই ভয়াবহ বন্যা পরিস্থিতির মোকাবিলার জন্য বন্যা কবলিত এলাকায় পার্টিকে বৃহত্তর জনসমষ্টিকে সাথে নিয়ে ঝাঁপিয়ে পড়তে হবে।’’
এদিন শিলিগুড়িতে সংবাদমাধ্যমের প্রশ্নে সেলিম বলেন, ‘‘সুখা মরশুমে যখন কৃষকদের ফসল নষ্ট হচ্ছে, জল চাইছেন, তখন জল নেই। আর যখন বৃষ্টি হচ্ছে অনেক বেশি, যখন বন্যার উপক্রম হয়েছে, তখন জল ছাড়া হবে। কেন কেন্দ্র ও রাজ্য সরকার মিলে ব্যারেজ সংক্রান্ত ব্যবস্থাপনা করতে পারে না?’’
সেলিম প্রশ্ন তোলেন, কেন বাঁধ নির্মাণ ঠিক মতো হয় না। কেন বাঁধ ভেঙে যাচ্ছে। তিনি বলেন, ‘‘মমতা ব্যানার্জি কী বলবেন। জল ছাড়া হলে নদীতে জলধারণের ক্ষমতা থাকছে না। বালি তুলে বিপদ করা হচ্ছে। নদীর বুক থেকে জমে থাকা পলি তোলা হচ্ছে না।’’ 
ঝাড়খণ্ড থেকে তিনদিন গাড়ি ঢুকতে দেওয়া হবে না। ঝাড়খণ্ড জল ছাড়ায় ডুবেছে বাংলা, এই যুক্তি বারবারই দিচ্ছেন মুখ্যমন্ত্রী। তারপরই তৃণমূল সরকার ঝাড়খণ্ড থেকে পণ্য চলাচল বন্ধ রাখার সিদ্ধান্ত নিয়েছে।
সেলিম বলেন, ‘‘এভাবেই এখানকার আলুচাষিদের সর্বনাশ করে ওড়িশায় আলু পাঠানো বন্ধ করেছিল। তারপর ওড়িশার বিজেপি সরকার ওই রাজ্যে কর্মরত বাংলার পরিযায়ী শ্রমিকদের ধর্মের নাম করে, বাংলাদেশী অভিযোগ তুলে আক্রমণ করল। আক্রান্তদের মধ্যে উত্তরবঙ্গের শ্রমিকরাও ছিলেন। মমতা ব্যানার্জি তখন তার দায়িত্ব নিলেন না। আজকে ঝাড়খণ্ডের সঙ্গে বিবাদে নেমেছেন। প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী প্রতিবেশী দেশগুলির সঙ্গে সুসম্পর্ক রেখে চলতে পারেন না। আর মমতা ব্যানার্জি প্রতিবেশী রাজ্যগুলির সঙ্গে সুসম্পর্ক রাখতে পারেন না।’’
বন্যায় পার্টিকর্মীদের কর্তব্য প্রসঙ্গে বিবৃতিতে সেলিম বলেছেন, কেন্দ্র ও রাজ্য সরকারের ড্যাম ও ব্যারেজের নিয়ন্ত্রণ, রক্ষণাবেক্ষণ, জলধারণের ক্ষমতা বৃদ্ধি, নদী নালার জলের ধারা বহন ও নিষ্কাশনের উপযোগী ব্যবস্থা নেওয়ার ক্ষেত্রে ব্যর্থতা ও দুর্নীতির বিরুদ্ধে মানুষের ধূমায়িত ক্ষোভ রয়েছে। সেই ক্ষোভের স্বতঃস্ফূর্ত প্রকাশ দেখা যাচ্ছে। মানুষের জীবন জীবিকা চরম বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছে। পার্টি, গণসংগঠন সমূহকে এই অবস্থায় মানুষের পাশে দাঁড়াতে হবে। রেড ভলান্টিয়ারদের সক্রিয় হতে হবে। উদ্ধার, ত্রাণ, চিকিৎসা, পুনর্বাসনের কাজে প্রশাসনের ওপর চাপ সৃষ্টির পাশাপাশি নিজস্ব উদ্যোগ গ্রহণের দিকে নজর দিতে হবে।

Comments :0

Login to leave a comment