Protest Rally

ভোটের নামে প্রহসন, কালনা ও নলহাটিতে প্রতিবাদ মিছিল

জেলা

Protest Rally


রাস্তার ধার, পুকুরের পাড় থেকে ঝোপে জঙ্গলে ব্যালটের ছড়াছড়ি। গাজোলে মিলেচে সিল খোলা আস্ত তিন ব্যালট বাক্স। মানুষ ভোট দিতে না গেলেও ভোট পড়ে গিয়েছে ৯৫ শতাংশ! স্রেফ জেতার জন্য ব্যালট চিবিয়ে খেয়ে নেওয়ার মত হতবাক করা ঘটনার সাক্ষী হয়েছেন রাজ্যবাসী। যার প্রতিবাদ জোরালো থেকে জোরালোতরই হচ্ছে রাজ্যজুড়ে। সেই রেশ ধরে রাজ্যের প্রশাসন, সেই প্রশাসন চালানো তৃণমূল কংগ্রেসের বিরুদ্ধে একরাশ ধিক্কার উগড়ে তীব্র বিক্ষোভ ধ্বণিত হয়েছে বীরভূমের নলহাটিতেও। বুধবার বামফ্রন্ট ও কংগ্রেসের ডাকে ভোটের নামে প্রহসনের প্রতিবাদ জানিয়ে নলহাটি শহরজুড়ে হয়েছে মিছিল। বিক্ষোভ সভা সংঘটিত হয়েছে বিডিও অফিসের অনতিদূরে। 


ভোটে শাসকদলকে জেতানোর মরিয়াপনার তাগিদ থেকে প্রশাসনের নির্লজ্জতা থেকে বাদ যায় নি নলহাটিও। যেমন কয়থা ২নং পঞ্চায়েতের ভেলিয়ান বুথে ভোট পড়েছিল ৯০১টি। গণনার সময় দেখা যায় ব্যালটের সংখ্যা ৯১১টি। বিডিও তৃণমূল কংগ্রেস প্রার্থীকে দশ ভোটে জেতার শংসাপত্র প্রদান করে দিয়েছেন। হারানো হয়েছে সিপিআই(এম) প্রার্থীকে। ঘটনা গড়িয়েছে আদালত পর্যন্ত। আবার বাউটিয়া পঞ্চায়েতের চাচকা গ্রামে ভোট পর্ব সম্পন্ন হওয়ার পর ব্যালট বাক্স সিল করেই পাঠানো হয়েছিল স্ট্রং রুমে। অভিযোগ, গণনার সময় সেই ব্যালট বাক্সের সিল অক্ষত ছিল না। এছাড়াও প্রার্থী থেকে ভোটারদের শাসানো, মাফিয়া বাহিণী দিয়ে বুথ কেন্দ্র দাপানোর মত অভিযোগ রয়েছে ভুরি ভুরি। যেমন, হরিদাসপুরে বালি মাফিয়াদের দেখা গেছে লালচোখ নিয়ে বুথ 'আগলা'তে। এরই প্রতিবাদ জানিয়ে এদিন সোচ্চার হয়েছে বামফ্রন্ট ও কংগ্রেস। নলহাটি পোস্ট অফিস মোড় থেকে শহর ঘুরে হরিপ্রসাদ হাই স্কুল পর্যন্ত করেছে মিছিল। মিছিল শেষে স্কুলের মাঠে বিডিও অফিস ঢিল ছোঁড়া দুরত্বে হয়েছে বিক্ষোভ সভা। সভায় বক্তব্য রেখেছেন সিপিআই(এম) বীরভূম জেলা সম্পাদক গৌতম ঘোষ, ডিওয়াইএফআই নেতা আকবর আলি, কংগ্রেসের নাসির সেখ। ছিলেন সিপিআই(এম) বীরভূম জেলা সম্পাদক মন্ডলীর সদস্য সঞ্জীব বর্মন, সঞ্জীব মল্লিক প্রমুখ। সভাপতিত্ব করেন গোরাচাঁদ গুপ্ত। 


পঞ্চায়েত ভোট প্রহসনের বিরুদ্ধে এদিন পথে নামলেন কালনার আইনজীবীরা। সারা ভারত আইনজীবী সমিতির কালনা আদালত কমিটির উদ্যোগে এদিন বিক্ষোভ মিছিল ও পথসভা অনুষ্ঠিত হয়। পথসভায় বক্তব্য রাখেন প্রবীণ আইনজীবী প্রভাত সাহা, কামাল দফাদার প্রমূখ। বক্তারা বলেন পঞ্চায়েত নির্বাচনে মনোনয়ন দাখিল থেকে ভোটগ্রহণ এমনকি ভোট গণনা পর্যন্ত হয়েছে ব্যাপক সন্ত্রাস। খুন, ভোট লুট, গণনা কেন্দ্রে হামলা করে বিরোধী এজেন্টদের তাড়িয়ে দিয়ে গণনায় ব্যাপক কারচুপি করা কোনটাই বাদ যায়নি। আর এটা সম্ভব হয়েছে রাজ্য নির্বাচন কমিশন ও প্রশাসনের মদতে। নির্বাচনে জেতার জন্য শাসক দল যাবতীয় অপকর্ম করেছে। তবুও মানুষ লড়াই থেকে পিছিয়ে যায়নি। গ্রামবাংলায় নবজাগরণ ঘটে গেছে। সাধারণ মানুষের গণতন্ত্র রক্ষার লড়াইয়ে  আইনজীবীরা পাশে আছে, ভবিষ্যতেও থাকবে।

 

Comments :0

Login to leave a comment