ELECTORAL BOND YECHURY KHARGE

ইয়েচুরি, খাড়গেও সরব স্টেট ব্যাঙ্ককে দিয়ে বন্ডের তথ্য আড়ালে

জাতীয়

সিপিআই(এম) পলিট ব্যুরো সদস্য মানিক সরকারের সঙ্গে সীতারাম ইয়েচুরি। ছবি সংগ্রহ থেকে।

নির্বাচনী বন্ডে লেনদেনের তথ্য চাপার প্রতিবাদ জানালো কংগ্রেসও। তথ্য প্রকাশের সময়সীমা পিছানোর আর্জি জানিয়ে সুপ্রিম কোর্টে গিয়েছে স্টেট ব্যাঙ্ক। তথ্য চাপার এই তৎপরতার নিন্দা করেছেন সিপিআই(এম) সাধারণ সম্পাদক সীতারাম ইয়েচুরিও। 
ইয়েচুরি বলেছেন, ‘‘তথ্য প্রকাশের সময়সীমা এখনও বাড়েনি। সেক্ষেত্রে স্টেট ব্যাঙ্ক নির্দেশ পালন না করলে তা হবে আদালত অবমাননার শামিল।’’
নির্বাচনী বন্ড বাতিলের পাশাপাশি সুপ্রিম কোর্ট স্টেট ব্যাঙ্ককে নির্দেশ দেয় ৬ মার্চের মধ্যে কোন দল কার থেকে কত টাকা পেয়েছে বিশদে সেই তথ্য নির্বাচন কমিশনকে জানাতে। ১৩ মার্চের মধ্যে দেশবাসীর কাছে সেই তথ্য প্রকাশের নির্দেশ দেয় সুপ্রিম কোর্ট। স্টেট ব্যাঙ্ক সুপ্রিম কোর্টে আবেদনে বলেছে তাদের তথ্য পাঠানোর সময়সীমা পিছিয়ে ৩০ জুন পর্যন্ত করা হোক। 
৩০ জুনের আগেই সাধারণ নির্বাচন হয়ে যাওয়ার কথা। নির্বাচনের আগে তথ্য প্রকাশ আটকাতে চাইছে স্টেট ব্যাঙ্ক। এই তৎপরতা যে নরেন্দ্র মোদী এবং বিজেপি-কে বাঁচাতে মনে করিয়েছেন ইয়েচুরি। কংগ্রেস সভাপতি মল্লিকার্জুন খাড়গে বলেছেন, ‘‘দেশের বৃহত্তম ব্যাঙ্ককে ব্যবহার করে নিজেকে আড়াল করতে চাইছেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। নির্বাচনী বন্ডের মাধ্যমে অস্বচ্ছ লেনদেনকে লুকাতে চাইছেন। সুপ্রিম কোর্টও এই ব্যবস্থা খারিজ করার রায়ে বলেছে যে কালো টাকা সাদা করার এই ব্যবস্থা অসাংবিধানিক, তথ্যের অধিকার আইনের লঙ্ঘন।’’
খাড়গে বলেছেন, ‘‘লোকসভার মেয়াদ শেষ হচ্ছে ১৬ জুন। তার আগে তথ্য প্রকাশ ঠেকাতে এই তৎপরতা। সরকার কি এই লেনদেনের পিছনে থাকা গোলমেলে সম্পর্ক আড়াল করছে? না হলে বেরিয়ে পড়বে নির্বাচনী বন্ডে টাকা পাওয়ার বিনিময়ে মোদীর কোন ঘনিষ্ঠদের বন্দর, বিমানবন্দর বা হাইওয়ের প্রকল্প তুলে দেওয়া হয়েছে।’’
নির্বাচনী বন্ডে সবচেয়ে বেশি লাভবান বিজেপি-ই। নির্বাচনী বন্ড ব্যবস্থাকে অস্বচ্ছতার কারণেই বাতিল করেছে সুপ্রিম কোর্টের সাংবিধানিক বেঞ্চ। নির্বাচনী তহবিলে অর্থ দেওয়ার এই ব্যবস্থা চালু হয়েছে নরেন্দ্র মোদী সরকারের মেয়াদেই। এই ব্যবস্থাকে অসাংবিধানিক আখ্যা দেয় শীর্ষ আদালত। অতীতে নির্বাচনের সময় কর্পোরেট সংস্থা কোনও দলকে টাকা দিলে তার তথ্য নির্বাচন কমিশনকে জানাতে হতো। কমিশনকেও সেই তথ্য প্রকাশ করতে হতো। ২০১৮’তে সংসদের একাধিক আইন বদলে নির্বাচনী বন্ড চালু হয়। কোন ব্যবসায়ী করত টাকা কোন দলকে দিচ্ছে সেইধ তথ্য জনসমক্ষে আনার বিধি বাতিল করে দেওয়া হয়। আঞ্চলিক দলগুলির মধ্যে এই ব্যবস্থায় সবচেয়ে লাভবান তৃণমূল কংগ্রেস। এক বছরে কেবল এই বন্ড বাবদ ৫ শো কোটি টাকা এসেছে তৃণমূলের তহবিলে।
এই মামলায় রাজনৈতিক দলগুলির মধ্যে একমাত্র সিপিআই(এম) আবেদনকারী ছিল। সিপিআই(এম) তহবিলে নির্বাচনী বন্ডে কোনও অর্থ নেয়নি। সাধারণ সম্পাদক সীতারাম ইয়েচুরি বলেছেন, ‘‘তথ্য প্রকাশের সময়সীমা পিছানো হলে ন্যায়বিচারের সঙ্গে প্রতারণা করা হবে। স্টেট ব্যাঙ্ক কি সাধারণ নির্বাচন পর্যন্ত সময় বাড়াতে চাইছে, যাতে কোনও কিছুর বিনিময়ে কিছু পাইয়ে দেওয়া হয়েছে বলে সুপ্রিম কোর্ট যে আশঙ্কা করেছিল, তা থেকে নরেন্দ্র মোদী এবং বিজেপি’কে বাঁচানোর জন্যই?’’

Comments :0

Login to leave a comment