ADHIR CHOWDHURY

জেলযাত্রা এড়াতে কংগ্রেস বিধায়ক ভাঙাচ্ছেন অভিষেক, অভিযোগ অধীরের

রাজ্য কলকাতা

adhir chowdhury west bengal congress bengali news bjp tmc cpim

খোকাবাবু দিল্লির জেরায় দলেরই নেতামন্ত্রীদের নাম বলে এসেছিলেন ইডিকে। তারপরেই তৃণমূলের একের পর এক মন্ত্রী জেলে যাচ্ছে। কিন্তু দিদি মোদী সমঝোতার ফলে তিনি জেলের বাইরে। জেলযাত্রা এড়াতে কংগ্রেস বিধায়ক ভাঙাচ্ছেন তৃণমূলের শীর্ষ নেতা অভিষেক ব্যানার্জি ।  মোদী মমতার বোঝাপড়ায় বড় চোরেদের জাল কেটে পালানোর পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে। রাজ্যে একের পর এক দুর্নীতির তদন্ত প্রসঙ্গে এমনই মন্তব্য করলেন প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি অধীর রঞ্জন চৌধুরী। 

 বুধবার প্রদেশ দপ্তর বিধানভবনে সাংবাদিক সম্মেলনে তিনি বলেন, কাকাবাবুদের ঘরে ইডি পৌঁছে গিয়েছে। কিন্তু খোকাবাবুদের বাড়িতেও তো যেতে হবে। ইডি আদালতে জানিয়েছে, কাকাবাবুর কাছে নাকি দুর্নীতির তথ্যের ভান্ডার মিলেছে। সেই তথ্যের ভান্ডার তো খোকাবাবুর কাছেও পাওয়া গিয়েছিল। 

অধীর চৌধুরী বলেন, ২০২১ সালের সেপ্টেম্বরে দিল্লিতে সাড়ে নয় ঘন্টা ধরে অভিষেক ব্যানার্জিকে ইডি জেরা করে। জেরা থেকে বেরিয়ে বিজেপি বিরোধিতা বা ইডি’র বিরোধিতা না করে কংগ্রেসের বিরোধিতা শুরু করেন খোকাবাবু। অপরদিকে সেই জেরার পর থেকেই তৃণমূলের একের পর এক মন্ত্রী বিধায়ক জেলে যেতে শুরু করেছেন। এরপর ২৫ সেপ্টেম্বর বিরোধীদের সর্বদলীয় বৈঠক বয়কট করেন মমতা ব্যানার্জি। তিনিও কংগ্রেসকে আক্রমণ করতে শুরু করেন। 

এই প্রসঙ্গের ব্যাখ্যা দিতে গিয়ে অধীর চৌধুরী বলেন, দিদি এবং খোকাবাবুকে দিয়ে কংগ্রেস খতম করার লাইন নিয়েছে বিজেপি। চুক্তি অনুযায়ী সেই কাজ ঠিক মতো করতে পারলেই জেলের বাইরে থাকবেন খোকাবাবু। তার ফলেই দায়িত্ব নিয়ে কংগ্রেস বিধায়ক ভাঙিয়েছে তৃণমূল। 

অধীর চৌধুরী আরও বলেন, এরাজ্যের আইনজীবীদের একটা অংশের তৎপরতায় তৃণমূলের দুর্নীতির ছবিটা প্রকাশ্যে এসেছে। বুধবার ১৩টি মামলায় নতুন করে ইডি সিবিআই তদন্তের নির্দেশ দিয়েছে আদালত। তৃণমূলের মধ্যে হুড়োহুড়ি পড়ে গিয়েছে। তৃণমূল নেতাদের একটা অংশ দূরে দাঁড়িয়ে খোকাবাবুকে দুর্নীতি করতে সাহায্য করেছিল। এখন তাঁরাও গ্রেপ্তারির ভয় পাচ্ছে। আমরা দায়িত্ব নিয়ে বলছি, দুর্নীতির টাকা ডলারে পরিণত করে বিদেশে পাচারের চেষ্টা চলছে। 

এদিন পৌরসভাগুলিতে কর্মচারী নিয়োগ দুর্নীতি প্রসঙ্গে অধীর চৌধুরী বলেন, চোরেদের বাঁচাতে হাইকোর্ট সুপ্রিম কোর্টে লক্ষ কোটি টাকা খরচ করছে রাজ্য সরকার। কোষাগারের টাকায় রাজ্যের ভবিষ্যত ধ্বংসের ছক কষেছে তৃণমূল। 

এদিন রাজ্য বিজেপিকে আক্রমণ করে অধীর চৌধুরী বলেন, তৃণমূলের দুর্নীতি সামনে আনার লড়াইয়ে বিজেপির কোনও আইনজীবী ছিলেন না। এখনও নেই। কিন্তু এখন মাঝখানে ঢুকে ‘নেপোয় দই খাওয়ার’ চেষ্টা করছে। এই বিষয়ে সতর্ক থাকতে হবে। একইসঙ্গে তিনি আইনজীবীদের অনুরোধ করেন, ইডি সিবিআই তদন্তে গতি আনতে যাতে আদালতের দৃষ্টি আকর্ষণ করা হয়। 

এর পাশাপাশি তিনি অভিযোগ করেন হারের ভয়ে তৃণমূল পঞ্চায়েত নির্বাচন পিছোতে চাইছে। তিনি বলেন, অভিষেক ব্যানার্জি বলেছে, ‘‘আমার নবজোয়ার যাত্রা শেষ হলে পঞ্চায়েত ভোট হবে।’’ অধীর চৌধুরী প্রশ্ন তোলেন, অভিষেক ব্যানার্জি এই কথা বলার সাহস কোথা থেকে পান? তিনি কী সরকারের কেউ? 

এর পাশাপাশি অধীর চৌধুরী জানান, ১৫ জুন শহীদ মিনার ময়দানে কংগ্রেসের তরফে কেন্দ্রীয় সমাবেশ করা হবে। একইসঙ্গে দুর্নীতির বিরুদ্ধে লড়াই করা আইনজীবীদের গণ সংবর্ধনা দেওয়ার কথাও এদিন তিনি জানিয়েছেন। 

এদিনের সাংবাদিক সম্মেলনে অধীর চৌধুরী ছাড়াও সৌম্য আইচ রায়, অসিত মিত্র, কৌস্তভ বাগচী প্রমুখ প্রদেশ কংগ্রেস নেতৃবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন। 

 

 

Comments :0

Login to leave a comment