বাহাদুর নগরের সুরাজ পালের বিরুদ্ধে প্রথম যৌন নির্যাতনের অভিযোগ দায়ের হয় ১৯৭৭ সালে। সেই মামলায় জেল হয় তার। তারপর জেল থেকে বেরিয়ে নিজেকে পরিচয় দেয় ‘সাকার বিশ্ব হরি বাবা’ নামে। নিজের গ্রামে আশ্রমও খোলেন। সেখান থেকেই শুরু তার এই ধর্মগুরু হয়ে ওঠার গল্প।
মঙ্গলবার প্রবল গরমের মধ্যে ধর্মীয় অনুষ্ঠানের আয়োজন করেছিল ‘ভোলেবাবা’ ওরফে নারায়ণ সাকার হরি এবং তাঁর লোকজন। অপরিসর জায়গা, তার মধ্যে বিপুল ভিড়। আবার ‘ভোলেবাবা’র গাড়ি না বেরনো পর্যন্ত বাইরে পা রাখতে পারবেন না ভক্তরা — এই ফতোয়াও জারি ছিল। ফলে ভিড় করে দাঁড়িয়ে ছিলেন ভক্তরা, অপেক্ষা করছিলেন।
‘গুরু’ বের হতেই একবার তাঁর পা ছোঁওয়ার উন্মাদনা শুরু হয়ে যায়। হুড়োহুড়ি আরও বাড়ে। স্বঘোষিত ধর্মগুরুর অবশ্য তাঁর ভক্তদের নিয়ে বিন্দুমাত্র দুশ্চিন্তা ছিল না। তিনি গাড়ি হাঁকিয়ে বেরিয়ে যান আগেই। তারপরেই ছবি বদলে যায়। মুহূর্তের মধ্যে তাঁর ভক্তরা ‘নেই’ হয়ে যায়। লাশের পাহাড় জমে যায়। বাবা হারিয়েছেন যেমন মেয়েকে, তেমনই মেয়েও হারিয়েছেন বাবাকে। বহু মানুষ হারিয়েছেন তাঁদের প্রিয়জনদের। বাচ্চা কোলে দৌড়তে থাকেন মা-বাবা। একই পরিবারের একাধিক সদস্যের মৃত্যু হয়েছে এই দুর্ঘটনায়।
শুধু উত্তর প্রদেশ নয়, রাজস্থান সহ বিভিন্ন রাজ্য থেকেই ভক্ত সমাগম হয়েছিল ‘ভোলেবাবা’র দরবারে। যে মাঠে আয়োজন করা হয়েছিল এই সৎসঙ্গের, সেখানে ঢোকা-বেরনোর রাস্তাটা ছিল যথেষ্টই ছোট এবং সঙ্কীর্ণ। কয়েক হাজার মানুষের জমায়েত হবে জেনেও পরিসর বাড়ানোর চেষ্টা হয়নি।
এই স্বঘোষিত ধর্মগুরু ‘ভোলেবাবা’কে অধিকাংশ সময়েই দেখা যায় সাদা পোশাকে। প্রায় ১৮ বছর ধরে তিনি উত্তর প্রদেশ পুলিশে কর্মরত ছিলেন। হঠাৎই গোয়েন্দা দপ্তরের চাকরি ছেড়ে ধর্মীয় গুরু হয়ে যান এবং ভক্তকূল বানিয়ে প্রবচন দিতে থাকেন। বিজেপি শীর্ষ নেতৃত্বের সঙ্গেও তাঁর ঘনিষ্ঠতার খবর ছড়িয়েছে বিভিন্ন সূত্রে।
Comments :0