BIGGYAN MANCHA

শহরের স্বাস্থ্য ফেরানোর দাবি জানিয়ে,
ফিরহাদ হাকিমকে ডেপুটেশন বিজ্ঞানমঞ্চের

কলকাতা

KMC FIRHAD HAKIM KOLKATA  PASCHIM BANGA BIGGYAN MANCHA BENGALI NEWS মেয়রকে ডেপুটেশন দিচ্ছেন বিজ্ঞানমঞ্চের প্রতিনিধি দল।

অপরিকল্পিত নগরায়নের ফলে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে কলকাতা শহরের স্বাস্থ্য। খাদের কিনারায় এসে দাঁড়িয়েছে কলকাতার পরিবেশ। ২০২২-২৩’র দূষণের মাত্রা অতিক্রম করেছে গত এক দশকের সমস্ত সূচককে। এই পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণের দাবি জানিয়ে কলকাতা কর্পোরেশনের মেয়র ফিরহাদ হাকিমকে স্মারকলিপি জমা দিল পশ্চিমবঙ্গ বিজ্ঞানমঞ্চের কলকাতা জেলা কমিটি। 

শুক্রবার কর্পোরেশনের মূল ভবনে গিয়ে মেয়রের দাতে স্মারকলিপি তুলে দেন বিজ্ঞান মঞ্চের একটি প্রতিনিধি দল। স্মারকলিপিতে বিজ্ঞান মঞ্চের তরফে বলা হয়, কলকাতা শহরে বায়ুদূষণের পরিমাণ বিপদজ্জনক হারে বৃদ্ধি পেয়েছে গত ১০ বছরে। শহরের ৭০ শতাংশ বাসিন্দা কোনও না কোনও ধরণের শ্বাসকষ্টের শিকার। প্রতি ১ লক্ষে ১৮.৭ জন ফুসফুসের ক্যান্সারে আক্রান্ত। এই সময়কালে শহরে সবুজের পরিমাণ হ্রাস পেয়েছে ৩০ শতাংশ। 

স্মারকলিপিতে বলা হয়, কলকাতার কিডনি হিসেবে পরিচিত পূর্ব কলকাতা জলাভূমি এলাকায় ভেড়ির সংখ্যা ১ দশকে ৩২৪ থেকে কমে দাঁড়িয়েছে ২৩২-এ। এর পাশাপাশি উন্নয়নের নামে ভরাট হয়েছে ৩ হাজারের বেশি পুকুর। এর ফলে একদিকে শহর কলকাতার জল ধারণের ক্ষমতা কমেছে, অপরদিকে নেমে গিয়েছে জলস্তর।

বিজ্ঞান মঞ্চের তরফে মেয়রকে আরও জানানো হয়, কলকাতা শহরে প্রতিদিন ৪ হাজার- সাড়ে চার হাজার টন কঠিন বর্জ্য তৈরি হয়। এর ৮-১০ শতাংশ প্লাস্টিক বর্জ্য। এই বর্জ্য পুনঃব্যবহারের কোনও বিজ্ঞান ভিত্তিক সমাধান এখনও বের করা সম্ভব হয় নি। এই দূষণের ফলে কলকাতা শহরের মাটির গুণগত মান নষ্ট হচ্ছে। 

এর পাশাপাশি বিজ্ঞানমঞ্চের তরফে অভিযোগ করা হয়, অনিয়ন্ত্রিত ভাবে ভূগর্ভস্থ জল উত্তোলন করার ফলে ভূগর্ভস্থ শিলাস্তরে ক্ষয় হচ্ছে। একই সঙ্গে বাড়ছে আর্সেনিক দূষণের পরিমাণও। ভূগর্ভস্থ জলের স্তর কমে যাওয়ায় শহরের মাটি বছরে ১২-১৮ মিলিমিটার হারে বসে যাচ্ছে। 

এই দাবিগুলির পাশাপাশি শহরে পানীয় জলের অপচয় এবং অকারণ গাড়ির হর্ণ বাজানোর ফলে সৃষ্টি হওয়া শব্দ দূষণের বিষয়েও মেয়রের দৃষ্টি আকর্ষণ করা হয়। 

স্মারকলিপিতে মেয়রের কাছে বিজ্ঞানমঞ্চ দাবি জানিয়েছে, ব্যাপক সবুজায়ন করার, জঞ্জাল পোড়ানো নিষিদ্ধ করা, শহরে পরিবেশ বান্ধব সিএনজি এবং ইলেক্ট্রিক চালিত যানের পরিমাণ বৃদ্ধি করা, সাইলেন্স জোনে কঠোর ভাবে হর্ণ বাজানো নিষিদ্ধ করা, পূর্ব কলকাতা জলাজমি পুনরুদ্ধারে সুসংহত পরিকল্পনা গ্রহণ করা, পানীয় জলের অপচয় রোধ, পুকুর ভরাট রোধ করা, ভূগর্ভস্থ পানীয় জলের উত্তোলন বন্ধ করা এবং কঠিন ও প্লাস্টিক বর্জ্য দ্রুত প্রক্রিয়াকরণের ব্যবস্থা করা। 

এদিনের ডেপুটেশন কর্মসূচিতে উপস্থিত ছিলেন তাপস সাহাঅধ্যাপক অনুপম দেব সরকার, অধ্যাপক মৃদুল বোসসোনু দে ও দেবব্রত মন্ডল সহ বিজ্ঞানমঞ্চ নেতৃবৃন্দ। এদিন ডেপুটেশন গ্রহণের পরে মেয়র দাবি গুলির সঙ্গে সহমত হয়েছেন ও দ্রুত ব্যবস্থা নেওয়ার আশ্বাস দিয়েছেন।

Comments :0

Login to leave a comment