Sand smuggling

বিশ্ববাংলার লোগো বালি পাচারের পাসওয়ার্ড!

রাজ্য

 বালি পাচারেও বিশ্ববাংলা! ‘বিশ্ববাংলা’ লোগোর ছবি নিয়ে বালি পাচারের কারবার চলছে গোটা রাজ্যে। স্থানীয় বাসিন্দাদের কথায় এটা ‘ভাইপো টোকেন’! 
গোরু, বালি, কয়লা নিয়ে সিবিআই ও ইডি সাঁড়াশি তল্লাশিতে পুলিশ একটু নড়েচড়ে বসেছে। জাল ই-চালান ব্যবহার করে দামোদর থেকে দীর্ঘদিন ধরেই বালি লুট করে শাসক দলের নেতারা ফুলেফেঁপে কলাগাছ হয়েছেন। মাঝে মাঝে ধরা পড়েছে দু-চারজন চুনোপুটি। পাচারকাণ্ডের পর্দা সিবিআই’র চাপে ফাঁস হওয়ার পর পুলিশ ধরেছে ‘বিশ্ববাংলা’ লোগো সমেত টোকেন বা জাল ই-চালান। সেই জালিয়াতিকাণ্ডে জড়িত পাঁচজনকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। 
তবে বিরোধীরা অভিযোগ করছেন, পুলিশ জানে না অথচ এমনভাবে বালি লুট দীর্ঘদিন ধরে চলছিল, তা কখনও হতে পারে? এত কিছুর পরেও পূর্ব বর্ধমানের অজয়, দামোদর নদের বালি লুট বন্ধ হয়নি। বরং বালি মাফিয়াদের দৌরাত্ম্য বেড়েছে। অভিযোগ, কৌশল বদলে পুলিশ, প্রশাসনের মদতেই বালি লুট করে সরকারকে ফাঁকি দিচ্ছে। অজয় ও দামোদরে বৈধ বালি খাদানের পাশাপাশি অসংখ্য অবৈধ বালি খাদান চলছে শাসক দলের মদতে। জামালপুর, রায়না, খণ্ডঘোষ, গলসী ছাড়াও অজয়ের কাটোয়া, কেতুগ্রাম, মঙ্গলকোটে অবাধে বালি লুট হয় জেসিপি মেশিন ব্যবহার করে। মোটা বালির লোভে অসংখ্য নৌকা ব্যবহার করে বালি তুলছে এবং সেই বালি পুলিশ ও প্রশাসনের মদতে ‘বিশ্ববাংলা’ লোগো নিয়ে পাচার হয়ে যাচ্ছিল।
সিবিআই ও ইডি’র নজরে আসতেই লোক দেখানো ধড়পাকড় শুরু হয়েছে। অভিযোগ, বালি পাচারকারীরা সেতুর কাছেও বালি তুলতে কসুর করে না। ফলে দুর্বল হয়ে পড়ে দামোদর ও অজয়ের উপর তৈরি হওয়া সেতু। মাঝে মধ্যে এলাকার মানুষের ক্ষোভ, আন্দোলনের চাপে পুলিশ কিছু লোক দেখানো গ্রেপ্তার করে। কিন্তু তাতে বালি লুট বন্ধ হয় না। পূর্ব বর্ধমানে অবৈধভাবে বালি কাটার জন্য মরণফাঁদে একাধিক মানুষ জলে ডুবে প্রতি বছর মারা যান। সে নিয়ে কিছু দিন হইচই হলে বন্ধ থাকে, তারপর আবার শুরু হয় বালি চুরি। ওভারলোডিং বালির গাড়িতে চাপা পড়ে মরেন নিরীহ গ্রামবাসী। পুলিশ, প্রশাসন সব দেখেও নীরব দর্শকের ভূমিকা পালন করে। বালি লুটের দখল কার হাতে থাকবে, তা নিয়ে গোটা পূর্ব বর্ধমান জেলা জুড়ে শাসক দলের মধ্যে চলছে বিরোধ। 
সূত্রের খবর, গত ১০ বছরে শাসক দলের নেতা, কর্মী বালি লুটের দখল রাখতে খুন হয়েছে একাধিক, সংখ্যাটা একশোর কাছাকাছি। বালি লুটেরাদের সাহস বাড়তে বাড়তে সরকারি বিশ্ববাংলা লোগোকেও ব্যবহার করছে।
ওয়েস্ট বেঙ্গল পরিবহণ ডিপার্টমেন্ট সুরক্ষা কমিটির নামে এই কুপন চালু হয়। পূর্ব বর্ধমান জেলা পুলিশের ডিএসপি হেডকোয়ার্টার অতনু ঘোষাল এদিন জানিয়েছেন, সরকারি লোগো ব্যবহার করে বালি ও পাথর পাচারের ঘটনায় একাধিক ব্যক্তিকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। ধৃতদের বাড়ি থেকে প্রচুর এই রকম জাল টোকেন আটক করা হয়। তবে এই ঘটনার মাস্টারমাইন্ড কে, পুলিশ তা জানাতে পারেনি। 
 

Comments :0

Login to leave a comment