প্রতিবন্ধী যুবতীকে ধর্ষণের অভিযোগে উঠল পশ্চিম মেদিনীপুরের সবং থানা এলাকার এক বিজেপি নেতার বিরুদ্ধে। স্থানীয়দের কথায় ঘটনা ঘটেছিলো গত বৃহস্পতিবার। অভিযুক্তের নাম কালিপদ দাস। তিনি বিজেপি’র দেউলি কৃষ্ণজীবনচক এলাকার মন্ডল সভাপতি। তাকে বাঁচাতে তৃণমূল কংগ্রেসের জনপ্রতিনিধি গ্রামে সালিশি সভা করে। নির্যাতিতার পরিবারকে টানা ৫দিন নজর বন্দী করে রাখে। অভিযোগ পর্যাপ্ত চাল ডাল দিয়ে নজরবন্দী করে রাখা হয়। ঘটনা সবং থানার দাঁদরা গ্রামপঞ্চায়েত এলাকার একটি গ্রামে। এলাকার তৃণমূলের পঞ্চায়েত লক্ষ্মীকান্ত বেরা, বুথ সভাপতি মদন দাস, দেবাশিস হাবড় সহ একাধিক তৃণমূল নেতা গ্রামে সালিশি সভার মাধ্যমে এই ঘটনা ধানাচাপা দেওয়ার মরিয়া চেষ্টা করেন।
গ্রামের মানুষের অভিযোগ নির্যাতিতার পরিবারকে নগদ টাকা পাইয়ে দেওয়ার প্রলোভন সেই সঙ্গে আবাস যোজনার ঘর, প্রতিবন্ধী ভাতা এমনকি ভাইয়ের বউকে লক্ষ্মী ভান্ডার পাইয়ে দেওয়ারও প্রলোভন দেওয়া হয়। এর জন্য তৃণমূলের অঞ্চল সভাপতি দিলীপ দাস এলাকার বিধায়ক তথা মন্ত্রী মানস ভূঁইয়ার সাথে যোগাযোগ করছেন একথাও জানানো হয় সালিশি সভায়।
অভিযুক্তকে গ্রামের মানুষের হাত থেকে রক্ষা করতে গ্রাম থেকে সরিয়ে তৃণমূলের অঞ্চল সভাপতি দিলীপ দাস পালের নিয়ন্ত্রিত গোপন ডেরায় আশ্রয় দেওয়া হয়েছে বলে দাবি করেছেন গ্রামবাসীরা। তৃণমূল ও বিজেপি’র বোঝাপড়া প্রকাশ্যে চলে আসে। স্থানীয়দের অভিযোগ মোটা টাকার বিনিময়ে অভিযুক্ত বিজেপি নেতাকে বাঁচানোর মরিয়া চেষ্টা চালায় তৃণমূল। ঘটনায় চাঞ্চল্য ছড়িয়েছে গোটা এলাকায়। তৃণমূল ও বিজেপি’র বোঝাপড়াকে উপেক্ষা করে সোমবার গ্রামবাসীরা সবং থানায় অভিযোগ দায়ের করেন। অভিযোগের ভিত্তিতে পুলিশ অভিযুক্তকে গ্রেপ্তার করে।
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে নির্যাতিতার পরিবারে রয়েছেন একমাত্র ভাই ও ভাইয়ের স্ত্রী। দিন মজুরী কাজ করতে গত বৃহস্পতিবার মাঠে গিয়েছিলেন ভাই ও ভাইয়ের বউ। বাড়িতে তখন ২৯ বছর বয়সী প্রতিবন্ধী যুবতী একা ছিলেন। সেই সুযোগে দুপুরে অভিযুক্ত বিজেপি নেতা ঘরে ঢুকে মুখে কাপড়ে বেঁধে প্রতিবন্ধী যুবতীকে ধর্ষণ করে। এই ঘটনার বিষয়ে মুখ না খোলার হুমকি দেওয়া হয়। বলা হয় মুখ খুললে তার ভাইকে খুন করা হবে। বিকালে তার ভাই ঘরে ফিরে দেখে ওই যুবতী জড়সড় হয়ে বসে রয়েছে। পরনের কাপড় রক্তে ভেজা। ভাইয়ের বউকে সব ঘটনা বলে দেয়। পাড়া প্রতিবেশীদের কাছে গেলে সেই খবর তৃণমূল নেতাদের কাছে চলে যায়। সেদিন সন্ধ্যায় সালিশি সভা বসে গ্রামের এক তৃণমূল কর্মীর ঘরে। বিজেপি নেতাকে তুলে আনা হয়। তারপর থেকেই সেই ধর্ষককে গ্রামে আর পাওয়া যায়নি। তৃণমূল নেতারাও প্রলোভনের আশ্বাস দিয়ে নজরবন্দী করে রাখে পরিবারটিকে। সোমবার নির্যাতিতার ভাই ও গ্রামের কয়েকজন গিয়ে সবং থানায় অভিযোগ দায়ের করে। পুলিশ প্রসাশন তল্লাশি চালিয়ে শেষ পর্যন্ত সবং এর তেমাথানী এলাকা থেকে অভিযুক্ত বিজেপি নেতা কে গ্রেপ্তার করে। মঙ্গলবার মেদিনীপুর জর্জকোটে অভিযুক্তকে হাজির করা হয়। নির্যাতিতাকে মেদিনীপুর মেডিক্যাল হাসপাতালে শারীরিক পরীক্ষা করা হয়। জর্জকোটে জবানবন্দীর ব্যাবস্থা করেন প্রসাশন।
Rape Case in Sabang
সবংয়ে প্রতিবন্ধী যুবতীকে ধর্ষণের অভিযোগ, গ্রেপ্তার বিজেপি নেতা

×
Comments :0