এদিন মালিক নিজেই টুইট করে তার বাড়িতে সিবিআই তল্লাসির বিষয়টি জানিয়েছেন। মালিক লিখেছেন, ‘‘বিগত তিন চার দিন ধরে আমি হাসপাতালে ভর্তি রয়েছি। এই সময় আমার বাড়িতে তল্লাসি চালানো হচ্ছে। কর্মীদের হ্যানস্তা করা হচ্ছে। আমি কৃষক পরিবারের সন্তান সিবিআইয়ের এই তল্লাসি আমায় কোন ভাবে ভয় ভীত করতে পারবে না। আমি কৃষকদের পাশে আছি।’’
মালিক যখন জম্মু এবং কাশ্মীরের রাজ্যপাল তখন পুলওয়ামা ঘটনাটি ঘটে। পরবর্তী সময় ওই বিষয় নিয়ে সে মুখ খোলায় অস্বস্তি বাড়ে কেন্দ্রীয় সরকারের।
পুলওয়ামায় সন্ত্রাসবাদী হানায় অভ্যন্তরীণ নিরাপত্তার গাফিলতি নিয়ে মুখ খোলেন মালিক। সে সময়ে তিনি রাজ্যপাল। প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী তাঁকে মুখ বন্ধ রাখতে বলেন, জানিয়েছিলেন সে তথ্যও। পুলওয়ামায় হামলা এবং তারপরে পাকিস্তানের বালাকোটে বোমাবর্ষণ ঘিরে গত লোকসভা ভোটে ব্যাপক প্রচার করে বিজেপি। কিন্তু পুলওয়ামা হামলার তদন্তের হাল কী, দেশ জানে না। সতর্কবার্তা থাকা সত্ত্বেও কেন আধা সামরিক বাহিনীর জওয়ানদের বিমানে করে না নিয়ে সড়কপথে নেওয়া হয়েছে, সেই প্রশ্নও উসকে দেন মালিক। দেশজুড়ে প্রশ্নের মুখে পড়ে বিজেপি। তারপরই মালিকের বিরুদ্ধে সিবিআই’র তৎপরতা।
গত বছর ২৮ এপ্রিল মালিককে জিজ্ঞাসাবাদ করে সিবিআই। সিবিআই জানিয়েছে, বিভিন্ন তথ্য হাতে এসেছে। তা খতিয়ে দেখার পর এদিন তল্লাশি হয়েছে। সরকারি কর্মচারীদের জন্য স্বাস্থ্যবিমা প্রকল্পের চুক্তির সঙ্গে জম্মু ও কাশ্মীরের কিরু জলবিদ্যুৎ প্রকল্পে ২২০০ কোটি টাকার দুর্নীতির অভিযোগ তুলেছিলেন মালিক।
২০১৮’তে রিলায়েন্সের স্বাস্থ্য বিমা চুক্তি বাতিল করেছিলেন চালু হওয়ার এক মাসের মধ্যেই। ২ হাজার ২০০ কোটি টাকার এই প্রকল্পে প্রায় সাড়ে তিন লক্ষ কর্মচারীর বিমা জড়িত ছিল কর্মচারীরাও এই বিমায় জালিয়াতির অভিযোগ তোলেন। মালিক ফাইল দেখে সেই বক্তব্যে সহমত হন বলে জানিয়েছেন। কিরু জল বিদ্যুৎ তাপ প্রকল্পে কর্মরত সরকারি কর্মীদের টেন্ডার রিলায়েন্সকে পাইয়ে দেওয়ার ৩০০ কোটি টাকার ঘুষ দেওয়ার প্রস্তাব দেওয়া হয়েছিল বলেও অভিযোগ তোলেন তিনি। আরএসএস এবং বিজেপি নেতা রাম মাধবকে এই ঘুষের প্রস্তাব দেওয়ার জন্য দায়ী করেন।
২০১৮ থেকে ২০১৯ পর্যন্ত জম্মু-কাশ্মীরের রাজ্যপাল ছিলেন সত্যপাল মালিক। ৩৭০ ধারা প্রত্যাহারের কিছুদিন আগেই তাকে সেখানকার রাজ্যপাল পদ থেকে সরান হয়।
এর আগে ২০১৭’তে বিহারের রাজ্যপাল ছিলেন তিনি। ১৯৭৪’এ কংগ্রেস বিধায়ক হন, তারপর ১৯৮৪’তে সাংসদ পদেও নির্বাচিত হন। বোফর্স মামলাকে কেন্দ্র করে কংগ্রেস ছেড়ে ১৯৮৮‘থে ভিপি সিংয়ের জনতা দলে যোগ দেন। তারপর ২০০৪’এ বিজেপিতে যোগ দেন তিনি।
Comments :0