সাগরদিঘির বাম সমর্থিত কংগ্রেস প্রার্থী হিসাবে বিজয়ী বিধায়ককে তৃণমূল যেভাবে দলে নিয়েছে, তাকে ‘চোরাশিকার’ বলে চিহ্নিত করল কংগ্রেসের সর্বভারতীয় নেতৃত্ব। এই ঘটনায় কংগ্রেস নেতৃত্ব ক্ষুব্ধ।
মঙ্গলবার কংগ্রেসের সাধারণ সম্পাদক জয়রাম রমেশ বলেছেন, ‘কংগ্রেস প্রার্থী হিসাবে তিন মাস আগে এক ঐতিহাসিক জয়ের পরে বায়রন বিশ্বাসকে তৃণমূলে প্রলোভিত করে দলে নিয়ে নিয়েছে। এই ঘটনা সাগরদিঘি বিধানসভা কেন্দ্রের মানুষের রায়ের সঙ্গে সম্পূর্ণ বিশ্বাসঘাতকতা। এই ধরনের চোরাশিকার আগেও ঘটেছে গোয়া, মেঘালয়, ত্রিপুরা এবং অন্যান্য রাজ্যে। বিরোধী ঐক্যকে মজবুত করার জন্য এই ঘটনা ঘটছে না, কেবলমাত্র বিজেপি’র উদ্দেশ্য সাধন করে।’
গোয়ায় কংগ্রেসের বিধায়কদের নিয়ে দল গড়ে তৃণমূল নির্বাচনে লড়েছিল। বিধানসভা নির্বাচনের পরেই সেইসব নেতা দল ছেড়ে দেন, অধিকাংশই ভিড়ে যান বিজেপি-তে। মেঘালয়ে তৃণমূলের ৫ বিধায়কই সদলবলে বিজেপি-তে যোগ দিয়েছেন। এর আগে, ত্রিপুরায় কংগ্রেস বিধায়কদের বড় অংশকে টেনে নিয়েছিল তৃণমূল। তারপর সদলবলে তাঁরা বিজেপি-তে যোগ দেন। ত্রিপুরায় বিজেপি তৈরিই হয় এই দলবদলে। তৃণমূল মধ্যবর্তী মঞ্চের কাজ করেছিল। জয়রাম রমেশ সেই ইতিহাসই স্মরণ করিয়ে দিয়েছেন।
কংগ্রেসের এই তীক্ষ্ণ প্রতিক্রিয়ার পরে ‘জবাব’ দেবার চেষ্টাও করেছেন তৃণমূল নেতারা। দলের সাংসদ সুখেন্দুশেখর রায় বলেন, পশ্চিমবঙ্গে তৃণমূলের বিরোধিতা করে কেন্দ্রে বিজেপি-বিরোধিতার দাবি করা যায় না। কংগ্রেস তা-ই করছে। এটি দ্বিচারিতা। কেরালায় কংগ্রেস ও সিপিআই(এম)’র মধ্যে দ্বন্দ্ব আছে আবার কেন্দ্রে তারা বন্ধু। পশ্চিমবঙ্গে এসব চলবে না। কংগ্রেসের কাছ থেকে বিজেপি-বিরোধিতা শিখতে হবে না। কংগ্রেস সিপিআই(এম)’র সঙ্গে আঁতাত করে তৃণমূলের বিরুদ্ধে লড়ছে যাতে বিজেপি’র সুবিধা হয়।
কংগ্রেসের তোলা মূল প্রশ্ন এড়িয়েই গেছেন তিনি। তৃণমূল বিধায়করা কেন রাজ্যে রাজ্যে বিজেপি-তে যোগ দিচ্ছেন, তারও কোনও উত্তর মেলেনি। তৃণমূলের মুখপাত্র ডেরেক ও’ব্রায়েন আরও মন্তব্য করেছেন, কংগ্রেস কি গোলাপের স্তবক আশা করছিল?
প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি অধীর চৌধুরি সোমবারই বলেছিলেন, সাগরদিঘির ভোটে এটা প্রমাণিত হয়েছে যে মমতা ব্যানার্জিকে, তৃণমূল এবং বিজেপি’কে পরাস্ত করা যায়। এটাই সবচেয়ে বড় কথা। সাগরদিঘির মানুষের কাছে আমরা কৃতজ্ঞ। এই পরাজয়ে আতঙ্কিত হয়ে পড়েছিলেন মমতা ব্যানার্জি। তিনি দল ভাঙানোর খেলায় সিদ্ধহস্ত সকলেই জানে। আগেও কংগ্রেস ভাঙিয়ে বিধায়কদের দলে নিয়েছেন। আবারও করলেন।
Comments :0