Salim press conference

ন্যায়বিচারের জন্য আন্দোলন চালিয়ে যাবে সিপিআই(এম): সেলিম

রাজ্য

আদালতের নজরদারিতে আর জি করে অপরাধের তদন্ত চলবে। সিবিআই তদন্ত করবে। কিন্তু সত্য সামনে আনতে, আসল অপরাধীদের শাস্তি নিশ্চিত করতে, ন্যায় বিচারের দাবিকে ছিনিয়ে আনতে রাস্তাতেই থাকতে হবে। সিপিআই(এম) সেই ভূমিকাই নেবে। 

শুক্রবার মুজফ্‌ফর আহমদ ভবনে সাংবাদিক সম্মেলনে এই লক্ষ্য জানিয়েছেন সিপিআই(এম) রাজ্য সম্পাদক মহম্মদ সেলিম। তিনি জানিয়েছেন, শনিবার, ২৪ আগস্ট, লালবাজারে যাবেন প্রতিবাদী ছাত্র-যুব-মহিলারা। প্রতিবাদীদেরই নোটিশ পাঠাচ্ছে পুলিশ। তাঁদেরই ডেকে পাঠানো হচ্ছে। যে পুলিশ আধিকারিকরা প্রতিবাদ দমনে সক্রিয় তাঁদের বিরুদ্ধে অভিযোগ জানানো হবে। থাকবেন বহু আইনজীবীও। হেনস্তার শিকার প্রতিবাদীদের বাকি সব অংশকেও এই কর্মসূচিতে যোগ দেওয়ার আহ্বান জানান তিনি। 

এদিন রাজ্য দপ্তরে চলছে রাজ্য কমিটির অধিবেশন। সেলিম জানান, ১ সেপ্টেম্বর এই অন্যায়কে বিবেচনায় রেখে সব অংশকে যুক্ত করার মতো কর্মসূচি নেওয়ার জন্য রাজ্য বামফ্রন্টের কাছে আবেদন জানাবে সিপিআই(এম)। 

মুখ্যমন্ত্রী মমতা ব্যানার্জি কড়া আইনের জন্য চিঠি দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীকে। এই প্রসঙ্গে সেলিম বলেন, ‘‘আইনের অভাব নেই। কথা হলো সেই আইনকে প্রয়োগ করা হবে কিনা। আর জি কর কাণ্ডে সেই সদিচ্ছা রাজ্য সরকার দেখায়নি।’’ তিনি বলেন, ‘‘পার্ক স্ট্রিট থেকে একের পর এক ঘটনায় আক্রান্তকেই দোষী সাজানো হয়েছে। আর জি কর কাণ্ডের প্রতিবাদে রাস্তার দখল নিয়েছেন মহিলারাই। প্রতিবাদের ধরন দেখে এখন চিঠি পাঠিয়ে আইন করতে বলছেন প্রধানমন্ত্রীকে।’’ 

রাজ্য সরকার এবং পুলিশের ধামাচাপা দেওয়ার ভূমিকা ফের বেআব্রু হয়েছে সুপ্রিম কোর্টে। বৃহস্পতিবার শুনানিতে প্রধান বিচারপতির বেঞ্চ পরপর প্রশ্ন ছুঁড়েছে। কেন দেহ মেলার ১৪ ঘন্টা পরে এফআইআর। ময়না তদন্ত সন্ধ্যে ৬টায় হলেও ৯ আগস্ট, তার অনেক পরে রাত এগারোটা নাগাদ কেন টালা থানায় অস্বাভাবিক মৃত্যুর অভিযোগ দায়ের। ময়না তদন্তে খুন এবং ধর্ষণের প্রমাণ থাকলেও কেবল অস্বাভাবিক মৃত্যুই বা বলা হলো কেন। এক বিচারপতি এমনও মন্তব্য করেছেন যে ত্রিশ বছরের কর্মজীবনে এমন তদন্ত দেখেননি কখনও। 

এদিন সেলিম বলেন, ‘‘রাজ্য সরকারই তো আর জি করের অধ্যক্ষের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে পারত তার বদলে তাঁকে পাশের হাসপাতালে অধ্যক্ষ করা হলো। পুলিশ কমিশনারকে সরিয়ে দিতে পারত। তা করা হলো না। উলটে পুলিশকে দিয়ে প্রতিবাদ দমনে সক্রিয় ভূমিকা নেওয়া হচ্ছে।’’

কড়া আইনে চেয়ে মুখ্যমন্ত্রীর চিঠি প্রসঙ্গেই তিনি বলেন, ‘‘এর আগে এক ট্যাক্সিচালকের কন্যাকে ধর্ষণ করে খুনের ঘটনায় দেহ পুড়িয়ে দেওয়ার জন্য উঠে পড়ে নেমেছিল পুলিশ। বারবারই অপরাধীদের আড়ালের চেষ্টা করেছে রাজ্য সরকার।’’  আর জি কর কাণ্ডে হত্যার জায়গায় পরিবর্তন, সেমিনার কক্ষ সংলগ্ন দেওয়াল ভাঙার উ্লেখও করেন তিনি।

এদিনই কলকাতা হাইকোর্ট আর জি করে আর্থিক দুর্নীতি এবং বেনিয়মের তদন্ত রাজ্য সরকারের বিশেষ তদন্ত দলের থেকে নিয়ে সিবিআইর হাতে দিয়েছে। এই নির্দেশকে স্বাগত জানান সেলিম। সিবিআই তদন্ত প্রসঙ্গেই তিনি বলেন, ‘‘বিভিন্ন সময়েই দেখা গিয়েছে সিবিআই তদন্ত হাতে নিলেও বিশ বাঁও জলে চলে যায়। তারাও কাঠামোর অংশ। ফলে সিবিআই তদন্ত যেমন হবে তেমনই সব অংশের রাস্তায় থাকা জরুরি। ন্যায় বিচারের দাবি আদায় করতে হবে রাস্তায় থেকেই।’’

Comments :0

Login to leave a comment