দিল্লির মন্দির মার্গ থানায় মঙ্গলবার প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর ঘৃণা ভাষণের বিরুদ্ধে এফআইআর দায়ের করতে যান সিপিআই(এম) পলিট ব্যুরো সদস্য বৃন্দা কারাত এবং সিপিআই(এম) দিল্লি রাজ্য সম্পাদকমন্ডলীর সদস্য পুশপিন্দর সিং গ্রেওয়াল। থানা অভিযোগ না নিয়ে তাঁদের ফিরিয়ে দেয়। বুধবার দিল্লি পুলিশের কমিশনার সঞ্জয় অরোরার সঙ্গে দেখা করলেন কারাত এবং গ্রেওয়াল।
সিপিআই(এম) জানাচ্ছে, দিল্লি পুলিশের কমিশনার অভিযোগ পত্র গ্রহণ করে কারাত এবং গ্রেওয়ালকে বলেছেন, তিনি আইনি পরামর্শ নিয়ে দেখবেন এই অভিযোগের ভিত্তিতে এফআইআর দায়ের করা সম্ভব কিনা। একইসঙ্গে তিনি মেনে নিয়েছেন, অভিযোগ না নিয়ে ফেরত পাঠিয়ে ভুল করেছে মন্দির মার্গ থানা।
সঞ্জয় অরোরাকে দেওয়া অভিযোগ পত্রে কারাত এবং গ্রেওয়াল লিখেছেন, সিআরপিসি’র ১৫৪ নম্বর ধারা অনুযায়ী পুলিশ গুরুতর অভিযোগ নথিভুক্ত করতে বাধ্য। প্রাথমিক তদন্তে যদি অভিযোগের গুরুত্ব প্রমাণিত হয়, তখন সংশ্লিষ্ট রাজ্য কিংবা পুলিশ বিভাগের কাছে তদন্ত হস্তান্তর করার নিয়ম। এটিকে জিরো এফআইআর বিধি বলা হয়। কিন্তু মন্দির মার্গ থানা সেই বিধি লঙ্ঘন করেছে।
অভিযোগ পত্রে বলা হয়েছে, ২০২২ সালের ২১ অক্টোবর সুপ্রিম কোর্ট দিল্লি পুলিশকে নির্দেশ দিয়েছিল, অভিযোগ দায়ের না হলেও ঘৃণা ও বিদ্বেষ ভাষণের বিরুদ্ধে স্বতঃপ্রণোদিত মামলা দায়ের করতে হবে পুলিশকে। ২০২৩ সালের এপ্রিল মাসে সর্বোচ্চ আদালত নির্দেশ দেয়, দেশের যে কোনও প্রান্তে ঘটা এমন ঘটনার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে পারবে দিল্লি পুলিশ। আদালত জানায়, এই নির্দেশের অন্যথা হলে আদালত অবমাননার দায়ে অভিযুক্ত করা হবে দিল্লি পুলিশকে।
প্রসঙ্গত, গত সপ্তাহে রাজস্থানের বাঁশওয়াড়ার সভা থেকে বিরোধীদের কদর্য আক্রমণ করেন নরেন্দ্র মোদী। মোদী বলেন, কংগ্রেস সহ বিরোধীরা নির্বাচনে জিতলে হিন্দু মহিলাদের অলঙ্কার, মঙ্গলসূত্র মুসলমানদের হাতে তুলে দেওয়া হবে। মোদীর এই বক্তব্যের বিরুদ্ধে গোটা দেশজুড়ে প্রতিক্রিয়া তৈরি হয়েছে। সেই বক্তব্যের বিরুদ্ধেই মন্দির মার্গ থানায় অভিযোগ দায়ের করতে যান কারাত এবং গ্রেওয়াল।
অভিযোগ পত্রে কারাত এবং গ্রেওয়াল লিখেছেন, দিল্লি পুলিশের উচিত প্রধানমন্ত্রীর বিরুদ্ধে আমাদের অভিযোগ নথিভুক্ত করা, এবং উপযুক্ত ব্যবস্থা নেওয়া। দেশের কোনও নাগরিক যদি আইনের ঊর্ধ্বে না হন, তাহলে প্রধানমন্ত্রীর বিরুদ্ধে ব্যবস্থা কেন নেওয়া হবে না?
Comments :0