অরিজিৎ মণ্ডল
যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্র-ছাত্রীরা আহ্বানে মিছিল রূপান্তরিত হলো মহা মিছিলে। শুধুমাত্র যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রছাত্রীরা নন, কলকাতা, প্রেসিডেন্সি কলেজ ও মেডিক্যাল ছাত্রছাত্রীরা অংশ নেন মিছিলে। 
সোমবার বিশ্ববিদ্যালয় ধর্মঘট পালিত হয়েছে এসএফআই’র ডাকে। ছাত্রদের ওপর তৃণমূল আর পুলিশ ঝাঁপিয়ে পড়েছে রাজ্যের প্রায় সর্বত্র। মেদিনীপুর কলেজে ছাত্রকে মারতে মারতে টেনে বের করেছে তৃণমূল। সেই ছাত্রকে টেনে হিঁচড়ে গাড়িতে তুলে নিয়ে গিয়েছে পুলিশ। চড়া স্বরে চলেছে হুমকি। বারুইপুরে সিপিআই(এম) দপ্তরে ঢুকে পড়েছে তৃণমূলের দুষ্কৃতী বাহিনী। 
গণতন্ত্রের ওপর বেপরোয়া হামলার সাক্ষী থেকেছে রাজ্য। আবার সাক্ষী থাকল প্রতিবাদেরও। এমনকি দিল্লিতেও হয়েছে প্রতিবাদী ছাত্রদের বিক্ষোভ।
উপস্থিত হন বহু শিক্ষা অনুরাগী মানুষ। শুধুমাত্র বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রছাত্রীদের উপর আক্রমণ নয় ক্ষুণ্ণ করা হয়েছে যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয় মর্যাদাও। আঘাত নেমে এসেছে পাঠরত ছাত্র-ছাত্রীদের ওপর। অধ্যাপক শিক্ষাকর্মী আধিকারিকরা হেঁটেছেন এই মিছিলে। দাবি করেছেন শিক্ষামন্ত্রী ব্রাত্য বসুর গ্রেপ্তারির। জানিয়েছেন, আন্দোলনরত ছাত্রদের ওপর আঘাত এলে কেউ চুপ করে থাকবেন না। শাসকের বর্বরতা দিনের পর দিন বাড়ছে যেখানেই বিরুদ্ধ স্বর শোনা যাচ্ছে সেখানেই আঘাত আনছে শাসক। 
এই মিছিলেই অংশ নেন অভয়া মঞ্চ ও জয়েন্ট প্ল্যাটফর্ম অব ডক্টরস-র প্রতিনিধিরা। চিকিৎসক আন্দোলনের নেতা মানস গুমটা বলেন, এখন আর বাড়িতে বসে থাকার সময় নেই। আমাদের ছাত্রদের উপর আক্রমণ হয়েছে। তারা আমাদের ভবিষ্যৎ। পশ্চিমবঙ্গের ইতিহাসে এদিন আমাদের দেখতে হচ্ছে, এ বড় লজ্জার। 
প্রবীণরা বলেছেন, ছাত্র সংসদের নির্বাচন হওয়াই তো স্বাভাবিক। তাকে আটকে রাখা হবে কেন! নির্বাচনে দাবি জানানোয় মন্ত্রীর গাড়ি ছাত্রদের ওপর দিয়ে চালিয়ে দেওয়া হবে? এই ঘটনা গণতন্ত্রের উপর আঘাত। পশ্চিমবঙ্গের প্রথম মন্ত্রীর গাড়ির তলায় ছাত্রকে পিষে দেওয়ার চেষ্টা হচ্ছে। ছাত্ররাই প্রতিবাদের অগ্রদূত। তারাই সবকিছুকে প্রশ্ন করে, ভুল হলে প্রতিবাদ করে। সেই এই প্রতিবাদকে আটকানোর জন্যই শাসক দল উদ্ধত হয়েছে। 
যাদবপুরের প্রাক্তন অধ্যাপক অম্বিকেশ মহাপাত্র বলেন, ছাত্রদের ওপর যে আঘাত তা রাজ্য সরকারের ও রাজ্য শাসকদলের দৃষ্টিভঙ্গির একটি প্রতিফলন। এই সরকারের এজেন্ডা প্রথম থেকেই গণতন্ত্রকে নিধন করা। সমালোচনার বিরুদ্ধে স্বর যখনি উঠেছে তাকে দমানোর জন্য রাষ্ট্রশক্তি ঝাঁপিয়ে পড়েছে। তিনি আরো বলেন শিক্ষামন্ত্রী ছাত্রদের অভিভাবক সেই শিক্ষা মন্ত্রী ছাত্রদের পিছিয়ে দিচ্ছেন গাড়ি দিয়ে এটা বর্বরতা। 
মিছিলে অংশ নিয়ে অনেকেই বললেন, ছাত্রনেতা সুদীপ্ত গুপ্ত থেকে শুরু করে আনিস খান এবং আরজি করের অভয়ার ঘটনা এরপর যাদবপুরের এই ঘটনা সবই এক সূত্রে বাঁধা। শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে গণতন্ত্রের ওপর আক্রমণেরই নজির।
 
                                         
                                     
                                     
                                     
                                     
                                     
                                    
Comments :0