‘‘সরকার যদি মানুষের দাবিকে মান্যতা না দেয় তবে আন্দোলনের ঝাঁজ কিন্তু বাড়বে।’’ কলকাতা মেডিকেল কলেজ থেকে লালবাজারের উদ্দেশ্যে রওনা দেওয়ার আগে একথা বললেন চিকিৎসক মানস গুমটা। মিছিল শুরু হওয়ার আগে মৃত ডাক্তারি পড়ুয়ার স্মৃতির প্রতি শ্রদ্ধা জানান চিকিৎসকরা।
চিকিৎসক রাজা ধর, সুবর্ণ গোস্বামী এবং কুণাল সরকারকে আরজি কর কান্ডে তলব করেছে লালবাজার।
মানস গুমটা বলেছেন, ‘‘ভয় দেখাতে চাইছে আন্দোলনে অংশ নেওয়া চিকিৎসকদের। দুই চিকিৎসককে ডাকা হয়েছে সেই উদ্দেশ্যে। তাঁরা একা নন। চিকিৎসকদের যৌথ মঞ্চ তাঁদের সঙ্গে রয়েছে। তাঁরা কোনও অসত্য কথা বলেননি।’’
চিকিৎসক গোস্বামী বলেন, ‘‘পরিবার আমাদের হাতে ময়নাতদন্তের রিপোর্ট তুলে দেয়। সেখানে যা উল্লেখ করা হয়েছে তার সাথে প্রশাসনের কথার ফারাক দেখা গিয়েছে। আমরা কোন ভাবে নির্যাতীতার পরিচয় ফাঁস করিনি। আমাদের বক্তব্য তদন্ত যে ভাবে বেপথে পরিচালিত করা হচ্ছিল তার বিরুদ্ধে।’’ তিনি আরও বলেন, ‘‘আরজি করে দীর্ঘদিন ধরে অনৈতিক কাজ চলছিল। তার বিরুদ্ধে আমাদের চিকিৎসক সংগঠন জয়েন্ট প্ল্যাটফর্ম অব ডক্টরস সরব ছিল সব সময়।’’
চিকিৎসকরা স্পষ্ট জানিয়েছেন, যতদিন না বিচার শেষ হচ্ছে ততদিন এই লড়াই চলবে।
তিন চিকিৎসকের বিরুদ্ধে অভিযোগ, সমাজিকমাধ্যমে তারা ভুয়ো খবর প্রচার করেছেন এবং নির্যাতীতার পরিচায় তারা প্রকাশ্যে এনেছেন। যদিও দুই চিকিৎসক এই অভিযোগ অস্বীকার করেছেন। আরজি কর কান্ডে প্রথম থেকে সরব হয়েছিলেন চিকিৎসক গোস্বামী।
আরজি করের নির্যাতীতার পরিবারের সাথে দেখা করেন ‘জয়েন্ট প্ল্যাটফর্ম অব ডক্টরস’-র প্রতিনিধিরা। সেই সময় সংবাদমাধ্যমের মুখোমুখি হয়ে চিকিৎসক গোস্বামী বলেন, ‘‘হত্যার পর ধর্ষণ করা হয়েছে বলে প্রচার চলছে কোনও কোনও জায়গায়। আমরা এর প্রতিবাদ করছি। ধর্ষণ করেই হত্যা করা হয়েছে ওই ছাত্রীকে। ধর্ষণের পর শ্বাসরোধ করে হত্যার সাক্ষ্য দিচ্ছে ময়না তদন্ত রিপোর্টই।’’ তিনি বলেন, ‘‘পরিবারের অনুমান একজন এভাবে নির্যাতন করতে পারে না। ময়না তদন্তের রিপোর্ট দেখে আমাদেরও মনে হয়েছে একাধিক যুক্ত থাকতে পারে। সিমেন নেওয়া হয়েছে। পরীক্ষার পর বোঝা যাবে একাধিক অপরাধী জড়িত কিনা।’’
এদিন সুবর্ণ গোস্বামী জানিয়েছেন আরজি কর ঘটনা সংক্রান্ত কিছু তথ্য তারা সিবিআইয়ের হাতে তুলে দেবেন এবং হাইকোর্টের কাছে আবেদন জানানো হবে অ্যাসোসিয়েশন অব হেলথ সার্ভিস ডক্টরস-র পক্ষ থেকে মামলায় যুক্ত হওয়ার জন্য।
উল্লেখ্য, সুবর্ণ গোস্বামী রাজ্যের অ্যাসোসিয়েশন অব হেলথ সার্ভিস ডক্টরস-র অন্যতম যুগ্ম সম্পাদক। সরকারি চিকিৎসক সংগঠনগুলির সর্বভারতীয় ফেডারেশনেরও অন্যতম পদাধিকারী।
আরজি কর হাসপাতালের প্রাক্তনীরাও এদিন প্রতিবাদ মঞ্চে অংশ নিয়েছেন।
চিকিৎসকদের পাশাপাশি আরজি করের ঘটনার প্রতিবাদ জানিয়ে মিছিল করেছেন কলকাতা হাইকোর্টের আইনজীবীরা।
Comments :0