TMC LIE

রাখে দল মারে কে

সম্পাদকীয় বিভাগ

মিথ্যার ভিতের উপর দাঁড়িয়ে আছে নীতি-আদর্শ বর্জিত লুটেরা তৃণমূলের শাসন-শোষণের ইমারত। আদতে দলটাই একটা শয়তানের কারখানা। মূল্যবোধের সেখানে প্রবেশাধিকার নেই। ক্ষমতার চূড়ান্ত অপব্যবহার করে, পুলিশ-প্রশাসনকে দলদাস বানিয়ে গ্রামে গ্রামে শয়তান তৈরি করে এই দল। পরবর্তীকালে এই শয়তানরাই হয়ে ওঠে দলের সম্পদ, তাজা নেতা। এরাই নেত্রীর স্নেহধন্য হয়ে সাংসদ, বিধায়ক, মন্ত্রীর আসন অলঙ্কৃত করেন। চুরিই এই শয়তানদের প্রধান পেশা। রাজনীতির মুখোশ পরে চুরি-লুট করেই এরা ধনপতি-কোটিপতি। গ্রামের কৃষকের জমি কেড়ে নিয়ে ভেড়ি বানায়, ১০০ দিনের টাকা চুরি-লুট করে। বাড়ি ‍‌তৈরির টাকা মারে, রেশনের মাল পাচার করে, সরকারি ত্রাণের টাকা পকে‍‌টে পোরে, গরিব মানুষকে বেগার খাটিয়ে শ্রম শোষণ করে। সাধারণ মানুষের জন্য বরাদ্দ সরকারি অর্থ পকেটে পোরাটাকেই শাসক নেতারা তাদের অধিকার বলে গণ্য করে। আর রাস্তাকেই তারা চটজলদি বিত্তবান হবার সবচেয়ে লাভজনক পেশা হিসাবে স্বীকৃতি দেয়। এটা দলের ছাতার নিচে সংগঠিত চৌর্যবৃত্তি। চুরিকে ওরা ওদের দলগত অধিকার বলে মনে করে। চুরি না করলে তৃণমূলে কল্পে পাওয়া যায় না। নেতা হওয়া তো অসম্ভব। চুরিই‍‌ নেতা হবার সোপান। যে যত বড় চোর সে তত বড় নেতা। নেত্রী তো বহুদিন আগেই ফয়সালা করে দিয়েছেন চুরি-দুর্নীতি, তোলা-কমিশনে যা রোজগার হবে তা একা না খেয়ে ভাগ করে খেতে হবে। ৭৫ভাগ উচ্চস্তরে পাঠিয়ে বাকি ২৫ ভাগ নিজে ভোগ করতে পারবে। লুটের মালের এমন ভাগ বাটোয়ারার ফরমুলা মেনেই সর্বস্তরে কায়েম হয়েছে লুটতন্ত্র। সন্দেশখালি তারই একটা নমুনা। রাজ্যের ২৯৪টি বিধানসভা কেন্দ্রের সব কটিই এক একটি সন্দেশখালি। আপাতত সন্দেশখালি জেগে উ‍‌‍‌ঠেছে, অন্যরাও জাগার অপেক্ষায়। সন্দেশখালিতে সর্বস্ব হারিয়ে দেওয়ালে পিঠ ঠেকে যাবার পর নির্যাতিত মহিলারা ঝাঁটা-লাঠি হাতে রাস্তায় নেমেছেন। নারীর ইজ্জত শাহজাহানদের জিম্মায়। গরিবের সামান্য সম্পদ লুটের পর ঘরে ঘরে মহিলাদের ইজ্জত লুটের ব্যবস্থাও নিশ্চিত করেছে শাসক দলের তাজা নেতারা। মহিলাদের মধ্যরাতে দলের অফিসে নিত্য ডাক পড়ে।
দলের সম্পদ সন্দেশখালির বেতাজ বাদশা শাহজাহান দলের রীতি-নীতি মেনেই লুটতন্ত্র কায়েম করে শত শত কোটি টাকার সম্পদের মালিক হয়েছে। এটা যদি ২৫ ভাগ হয় তাহলে নিশচয়ই ৭৫ ভাগ উপরের নেতাদের কাছে পৌঁছেছে। এসবই সন্দেশখালির গরিব মানুষের সম্পদ। সব হারিয়ে এমনকি ইজ্জত হারিয়ে তারা রাস্তায় নামলেও লুটেরা নেতা ও তাদের বাহিনী আছে বহাল তবিয়তে। দল সতর্ক তাদের গায়ে যেন আঁচড় না পড়ে। সিকি-আধুলি দু’একটাকে লোকদেখানো গ্রেপ্তার করা হলেও পালের গোদারা যাতে ঠিকঠাক থাকে তার জন্য পুলিশ সব ব্যবস্থা করে রেখেছে। তা‍‌ই প্রায় দু’মাস হয়ে গেলেও শাহজাহান গ্রেপ্তার হয়নি। শাহজাহানকে ধরার কোনও সংকেত পুলিশ পায়নি। বরং তাকে সুরক্ষা দেবার বার্তাই এসেছে। তাই পুলিশ তাকে খুঁজে পায় না। এরই ফাঁকে ভাইপো সাংসদ প্রকাশ্যে নির্লজ্জের মতো ঘোষণা করলেন কলকাতা হাইকোর্টের নিষেধাজ্ঞা থাকায় পুলিশ গ্রেপ্তার করতে পারছে না। পরদিনই প্রধান বিচারপতি জানিয়ে দিলেন কোনও নিষেধাজ্ঞা নেই। কেন পুলিশ গ্রেপ্তার করছে না সেটাই বিস্ময়ের। দলের দু’নম্বর নেতা কতটা নির্বোধ হলে এমন মিথ্যাচার অনায়াসে করতে পারেন সেটা তৃণমূল না থাকলে বিশ্বাস করা যেত না। আসলে এটাও শাহজাহানকে আড়াল করার এক ছক। দল জানে শাহজাহান ছাড়া সন্দেশখালিতে দল উবে যাবে। তাই যে কোনও মূল্যে শাহজাহানকে ও তার বাহিনীকে রক্ষা করতে হবে। 
 

Comments :0

Login to leave a comment