পাহাড় আর বনাঞ্চলই হচ্ছে ‘হাতির ঘরবাড়ি। তবে বন্যহাতির গা ঢাকা দেওয়ার মতো সেই আবাসস্থল এখন আর আগের মতো নেই বললেই চলে। নেই পর্যাপ্ত খাবারও। নির্বিচারে পাহাড়ের গাছপালা কেটে ফেলার পাশাপাশি ঘন বন-জঙ্গল সাফ করে ফেলার ফলে দিশেহারা হাতির পাল যখন-তখন নেমে আসে লোকালয়ে। ঘরবাড়ি ও ফসল নষ্টের পাশাপাশি কখনও কখনও পিষ্ট করে মারছে মানুষও। আবার কখনও এসবে অতিষ্ঠ হয়ে হাতিকেই মেরে ফেলছে মানুষ। এ অবস্থায় বনের হাতি বনে রাখতেই জঙ্গল এলাকায় হাতির খাবারের জন্য প্রয়োজনীয় গাছ লাগানোর উদ্যোগ নিল বাঁকুড়া উত্তর বনবিভাগ। বড়জোড়া ও বেলিয়াতোড় রেঞ্জে এই গাছ লাগানো শুরু হচ্ছে। জানান, বেলিয়াতোড় রেঞ্জের রেঞ্জার মহিদুল ইসলাম।
ঘটনা হল প্রতিবছরই সেপ্টেম্বর— অক্টোবর মাসে দলমা থেকে হাতির পাল বিষ্ণুপুর, জয়পুর হয়ে বেলিয়াতোড়, বড়জোড়া ও সোনামুখীতে প্রবেশ করে। প্রায় ৯০টি হাতি আসে। ফিরে যায় জানুয়ারি— ফেব্রুয়ারি মাসে। দলমার হাতির পাল এখানে থাকার সময় ব্যাপক হামলা চালায় গ্রামগুলিতে। মানুষের জীবন থেকে ফসল সব কিছুই নষ্ট করে। এরা চলে যাবার পর আবাসিক ১০ টা হাতি টানা হামলা চালায় বেলিয়াতোড়, বড়জোড়ার বুকে। এলাকার মানুষের বক্তব্য এই আবাসিক হাতির হামলাই বেশি। চলতি বছরে ৫জন মারা মানুষ মারা গেছেন এই হাতির হামলায়। ঘর ভেঙ্গেছে অসংখ্য। এই আবাসিক হাতির পাল খাবারের জন্যই সন্ধ্যার পর বেলিয়াতোড়, বড়জোড়ার গ্রামগুলিতে ঢুকে পড়ে। তছনছ করে করে মানুষের বাড়ি। একে মোকাবিলা করার জন্যই বনদপ্তর উত্তরবঙ্গ থেকে এক বিশেষ ধরনের ঘাস নিয়ে এসেছে। সেই ঘাস জঙ্গলে লাগানো হচ্ছে, যা হাতির পালের খাবার জোগাবে। পাশাপাশি কলা, কাঁঠাল এই সব গাছ লাগানো হবে বলে জানানো হয়েছে। শনিবার ধনীপাড়া গ্রামের বাসিন্দা গৌতম কারক জানান, বনদপ্তর থেকে যে গাছ লাগানো হচ্ছে এর ফলে হাতির পালের খাবারের ব্যবস্থা অনেকটা হবে বলে তাঁরা মনে করছেন। পাশাপাশি হামলাও বন্ধও হবে। তবে বেশিরভাগ গ্রামের মানুষের বক্তব্য বনদপ্তরের কর্মীর সংখ্যা বাড়িয়ে ও এলাকার মানুষের হাতে হাতি নিয়ন্ত্রনের পর্যাপ্ত জিনিসপত্র তুলে দিতে হবে। এই কাজটাও সমান ভাবে না করলে হাতির পালকে আটকানো যাবেনা।
Bankura Forest
বনের হাতি বনে রাখতে গাছ লাগানোর উদ্যোগ বন দপ্তরের
×
Comments :0