Student Body Recovered

কালনায় ছাত্রীর রহস্য মৃত্যু

রাজ্য জেলা

কালনা শহরে টিউশুনি পড়তে এসে শুক্রবার রাতে দ্বাদশ শ্রেণির ছাত্রীর রহস্যজনক মৃত্যু হয়। পুলিশের প্রাথমিক তদন্তে এটা আত্মহত্যার কথা বলা হলেও, তা মানতে রাজি নন ছাত্রীর আত্মীয়-স্বজনরা। তাঁদের দাবি, তাদের মেয়েকে পরিকল্পিতভাবে খুন করা হয়েছে। পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রের খবর অনুযায়ী, ধাত্রীগ্রামের নিহত ছাত্রী কৃষ্ণদেবপুর উচ্চ বিদ্যালয়ে পড়তেন। কালনায় এক শিক্ষকের কাছে ইংরেজি পড়তে প্রতি দিনই মায়ের সঙ্গে আসতেন। শুক্রবারও পড়তে এসেছিলেন। টোটোওয়ালা ও ছাত্রীর মা রিঙ্কু হালদার কাছাকাছি কোথাও অপেক্ষা করছিলেন। একটি নির্দিষ্ট সময়ের কিছুক্ষণ আগেই শিক্ষকের বাড়ি থেকে বেরিয়ে যান ছাত্রীটি। সন্ধ্যা ৬-৫২ মিনিট নাগাদ ছাত্রী তার মায়ের কাছে ফোন করে বলে, ‘‘ওরা আমাকে বাঁচতে দেবে না, আমাকে বাঁচাও’’। তারপরেই ফোন বন্ধ হয়ে যায়। এই অবস্থায় ছাত্রীর মা কালনা থানায় হাজির হয়ে পুলিশকে সবকিছু জানান। সন্ধ্যা সাতটা নাগাদ কাটোয়া ব্যান্ডেল রেল লাইনের অম্বিকা কালনা স্টেশনের কাছে জিউধারা রেল গেটের অনতিদূরে ছাত্রীর রক্তাক্ত দেহ উদ্ধার করে কালনা জিআরপি থানার পুলিশ। দেহ শুক্রবার রাতেই কালনা হাসপাতালে মর্গে পাঠিয়ে দেওয়া হয়। কালনা জিআরপি থানার পুলিশ কিছু ভিডিও ফুটেজ দেখিয়ে বলে, ছত্রীর মাস্টারমশাই ছয়টা দু মিনিটে তাকে ছুটি দিয়েছিল। সে মাকে ফোন না করে ৫২ মিনিট পর। ভিডিও ফুটেজে দেখা যায় সন্ধ্যা ছটার পর কালনার বিশাল মার্কেট, কামারশালা গলি, জিউধারা রেলগেট, অম্বিকা কালনা রেলস্টেশন চত্বরে ছাত্রীটি একাই ঘুরে বেড়াচ্ছে। সাথে কাউকে দেখা যায়নি না। রেলপুলিশের এক আধিকারিকের দাবি দেহ উদ্ধার করার সময় স্থানীয় মানুষ বলেন, আওয়াজ শুনে তারা ঘর থেকে বেরিয়ে পড়ে। তারা মেয়েটাকে একাই পড়ে থাকতে দেখেছে, সেই সময় অন্য কাউকে দেখা যায়নি সেখানে। রেল পুলিশের প্রাথমিক তদন্তে মনে হয়েছে এটা আত্মহত্যার ঘটনা। তবে ময়নাতদন্তের পর বিষয়টা পরিষ্কার হয়ে যাবে। শনিবার মৃতদেহ ময়নাতদন্ত করার জন্য কালনা থেকে বর্ধমানে পাঠানো হয়। কিন্তু মৃত ছাত্রীর কাকা বলেন, ‘‘আমাদের মেয়ে কোনভাবেই আত্মহত্যা করতে পারে না। তাকে পরিকল্পিতভাবে খুন করা হয়েছে। কারণ মৃত্যুর আগে অঙ্গনা ফোন করে তার মাকে জানিয়েছিল ওরা আমাকে বাঁচতে দেবে না। ওরা কারা খুঁজে বার করতে হবে।’’
উল্লেখ্য ছাত্রী বাবা ২০২২ সালের ১৯ সেপ্টেম্বর পথ দুর্ঘটনায় মারা যান। মেয়েকে টিউশুনি পড়ার জন্য বাইকে করে কালনা শহরে পৌঁছে দিতে গিয়ে দুর্ঘটনার কবলে পড়েন তিনি। ঘটনায় গুরুতর আহত হয় মেয়েও। কলকাতার এসএসকেএম হাসপাতালে ২৬ দিন চিকিৎসা চলেছিল তার। বাড়ি ফিরে আরো তিন মাস সে শয্যাশায়ী ছিল। শুক্রবার রাতে রহস্যজনক মৃত্যু হয় তার।

Comments :0

Login to leave a comment