MD SALIM

বিজেপির মন রাখতে প্যালেস্তাইন নিয়ে চুপ মমতা, আক্রমণ সেলিমের

রাজ্য জেলা

CPIM TMC BJP AIKS WEST BENGAL PANCHAYAT ELECTION WEST BENGAL POLITICS 2023 BENGALI NEWS

৮ নভেম্বর প্যালেস্তাইনে ইজরায়েলের আগ্রাসনের বিরুদ্ধে কলকাতায় বামফ্রন্টের ডাকে পথে নামবেন রাজ্যের সাধারণ মানুষ। ইতিমধ্যেই লন্ডন, প্যারিস, ওয়াশিংটনের মত শহরগুলি সহ এশিয়া, আফ্রিকা, আমেরিকা সহ সমস্ত জায়গায় প্যালেস্তাইনের সমর্থনে সাধারণ মানুষ পথে নেমেছেন। কিন্তু তৃণমূল এই বিষয়ে চুপ। কারণ মোদী এবং আরএসএস ইজরায়েলের পক্ষে। দিদি কিভাবে তাঁদের বিরুদ্ধে যাবে? বুধবার হাওড়ার সাংবাদিক সম্মেলন থেকে এমনটাই বললেন সিপিআই(এম)’র রাজ্য সম্পাদক মহম্মদ সেলিম। 

এদিন সিপিআই(এম) হাওড়া জেলা কমিটির অফিসে কমরেড নরেশ দাশগুপ্ত ও কমরেড শ্যামাপ্রসন্ন ভট্টাচার্য স্মারক বক্তৃতা হয়। আলোচ্য বিষয় ছিল- আক্রান্ত ভারতের ধারণা, এসো প্রতিরোধ গড়ি। মূল বক্তা ছিলেন মহম্মদ সেলিম। বক্তৃতা শেষে সিপিআই(এম) জেলা পার্টি অফিস থেকে কদমতলা বাসস্ট্যান্ড অবধি একটি মিছিল হয়। ৩-৫ নভেম্বর অবধি হাওড়ায় সিপিআই(এম) রাজ্য কমিটির বর্ধিত অধিবেশন হবে। অধিবেশনে উপস্থিত থাকবেন সিপিআই(এম)’র সাধারণ সম্পাদক সীতারাম ইয়েচুরি।  সেই অধিবেশনের সমর্থনে এদিন মিছিল হয়। মিছিলের নেতৃত্ব দেন মহম্মদ সেলিম, পরেশ পাল, দিলীপ ঘোষ প্রমুখ। 

মিছিল শেষে সাংবাদিকদের মুখোমুখি হন মহম্মদ সেলিম। সেলিম বলেন, মিডিয়া তৃণমূল-বিজেপি মেরুকরণের বাইরে বেরোতে চাইছে না। রাজ্যের সংবাদমাধ্যমের চোখে বিজ্ঞাপন এবং পয়সার পট্টি বেঁধে দেওয়া হয়েছে। তাই মূল্যবৃদ্ধি, বেকারত্ব, স্বাস্থ্য’র মত সাধারণ মানুষের জ্বলন্ত ইস্যুগুলি নিয়ে সংবাদমাধ্যম চুপ। তাঁরা সাধারণ মানুষের কথা বলেনা। কিন্তু চোর, মাফিয়া, স্মাগলারি করা রাজনৈতিক নেতানেত্রীদের কথা বলতে সর্বদা তৎপর বাংলার মিডিয়া। 

সেলিম সরাসরি প্রশ্ন তোলেন, দুর্নীতির বিরুদ্ধে কেন গত দশ বছর ধরে বাংলার মিডিয়া চুপ ছিল? বামপন্থীরা গরু,কয়লা, বালি, সোনা পাচার সহ সমস্ত দুর্নীতির বিরুদ্ধে প্রতিবাদ জানিয়ে এসেছে। কিন্তু মিডিয়া সেই আন্দোলন দেখায়নি। ভাইপো সাংসদ অভিষেক ব্যানার্জির কয়লা পাচার নিয়ে বাংলার সংবাদমাধ্যম চুপ কেন? ইডি, সিবিআই মাঝে মাঝে হইচই করে চুপ করে যায় কেন? বলির পাঁঠা করবে বলে কয়েকটা পাঁঠা জোগাড় করেছে। আমাদের দাবি, চোরেদের সর্দারকে ধরতে হবে। 

জ্যোতিপ্রিয় মল্লিকের গ্রেপ্তারি প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ৭৫ শতাংশ আর ২৫ শতাংশের ভাগ বাটোয়ারা যাতে ঠিক ভাবে হিসেব হয়, তাই এক দশক ধরে জ্যোতিপ্রিয় মল্লিককে খাদ্যমন্ত্রী পদে রেখে দিয়েছিল মমতা ব্যানার্জি। তিনি দায়িত্ব নিয়ে গরীব মানুষের পুষ্টি, সাধারণ মানুষের খাদ্য চুরি করে পিসি-ভাইপো জুটির বখরা কাছে পৌঁছে দিয়েছেন। আর ২৫ শতাংশ  নিয়ে নিজের সাম্রাজ্য গড়ে তুলেছেন। এখন যা উদ্ধার হচ্ছে তা শিকি-আদুলি মাত্র। আসল ভান্ডার রয়েছে কালীঘাটে। 

তিনি বলেছেন, গত ১২ বছর ধরে শিক্ষা, স্বাস্থ্য, জল, জমি, জঙ্গল, রেশন, আবাস, আইসিডিএস সহ এমন কোনও ক্ষেত্র নেই যেখানে তৃণমূল চুরি করেনি। ইডি, সিবিআই’র কাছে আমাদের স্পষ্ট দাবি, কোনও তামাশা না করে আসল চোরগুলোকে গ্রেপ্তার করতে হবে। তাদের শাস্তির ব্যবস্থা করতে হবে এবং সমস্ত চুরি যাওয়া টাকা উদ্ধার করতে হবে। 

সিঙ্গুর প্রসঙ্গে সলিম বলেন, রাজ্য সরকার কোনও রায় মানেনা। কার্টুন কান্ডে আদালত রাজ্যকে নির্দেশ দিয়েছে অধ্যাপক অম্বিকেশ মহাপাত্রকে ক্ষতিপূরণ দিতে। সেই রায় মমতা ব্যানার্জির সরকার মানেনি। একের পর এক দলবদ্ধ ধর্ষণেও কোনও ক্ষতিপূরণ দেয়নি রাজ্য সরকার। নিয়োগ দুর্নীতির তদন্ত আটকাতে আদালতে দৌড়চ্ছে সরকার। বামফ্রন্ট কর্মসংস্থানের কথা মাথায় রেখে রাজ্যে শিল্প তৈরির উদ্যোগ নিয়েছিল। ক্ষুদ্র এবং মাঝারি শিল্পের ক্ষেত্রে আমরা এগিয়েছিলাম। সানরাইজ শিল্প তৈরি করা হয়। সেই অগ্রগতি আটকাতে তৃণমূল, বিজেপি, মাওবাদী- সবাই একজোট হয়েছিল। চিটফান্ডের টাকায় মিডিয়ার একটা অংশকে কেনা হয়েছিল। আর সেই শক্তি একজোট হয়ে রাজ্যের ছেলে মেয়েদের ভবিষ্যত নিয়ে ছিনিমিনি খেলেছে। মমতা ব্যানার্জি নরেন্দ্র মোদীকে সানন্দে ন্যানো কারখানা উপহার দিয়েছে। 

সেলিম এদিন বলেছেন, সেলিম সাংবাদিকদের বলেন, ৩ নভেম্বর কোচবিহার থেকে যুবদের ডাকে ইনসাফ র‌্যালি শুরু হবে। কর্মসংস্থানের দাবি জানাবে সেই মিছিল। মমতা ব্যানার্জির জেদের ফলে ৯০ শতাংশ তৈরি কারখানা বন্ধ করে দিতে হয়েছে। তার খেসারত কেন সাধারণ মানুষের করের টাকা দিয়ে দেওয়া হবে? তৃণমূল নিজেদের চুরির টাকায় টাটাকে ক্ষতিপূরণ দিক। 

Comments :0

Login to leave a comment