জামশেদপুরে শুক্রবার পাঞ্জাব এফসিকে সাডেন ডেথে ৬ - ৫ গোলে হারালো মোহনবাগান। এদিন ৯০ মিনিটের শেষে খেলার ফল ছিল ৩ - ৩ । পাঞ্জাবের হয়ে গোল করেন লুকা মাজেন, ভিদাল ও ফিলিপ। মোহনবাগানের গোলদাতারা হলেন মানভির, কামিংস ও সুহেল ভাট।
ডুরান্ড কোয়ার্টার ফাইনালে নিজের প্রথম একাদশে বেশ কিছু পরিবর্তন করেন বাগান কোচ মলিনা। শুরু থেকে ছিলেন না কামিংস, শুভাশীষ ও পেট্রেটস। ম্যাচের ১৬ মিনিটের মাথায় বক্সে ফাউল করে বসেন মোহনবাগান ডিফেন্ডার আলবার্তো রদ্রিগেজ। পেনাল্টি থেকে গোল করে পাঞ্জাবকে এগিয়ে দেন লুকা মাজেন। আচমকা গোল খাওয়ার ফলে বাগানের পরিকল্পনা কিছুটা বাধা পায়। গোলটি করার পর থেকেই ক্রমে মোহনবাগানের উপরে জাঁকিয়ে বসছিল পাঞ্জাবের আক্রমণ। তারা মূলত ডান দিক অর্থাৎ আশীষ রাইয়ের দিকটাই বেছে নিয়েছিল আক্রমণের জন্য। প্রথম একাদশে পেট্রেটস, মানভির ও কামিংস না থাকায় জমাট বাঁধছিল না আক্রমণ। প্রথমার্ধের শেষ দিকে ৪৪ মিনিটের মাথায় বক্সের বাইরে থেকে গ্রেগের শটটি সুহেলের পায়ে লেগে ডিফ্লেকশনে বল জালে জড়িয়ে যায় । সমতায় ফেরে বাগান । প্রথমার্ধে খেলার ফল ছিল ১ - ১ ।
দ্বিতীয়ার্ধের শুরুতেই মানভীরকে নামনোর পরেই তিনি গোল করে এগিয়ে দেন দলকে । পাঞ্জাব গোলরক্ষকের পাশ দিয়ে ঠান্ডা মাথায় ফিনিশ মানভীরের । তবে নাটক অনেক বাকি ছিল । পাঞ্জাব যে সহজে ছেড়ে দেওয়ার পাত্র নয় সেটা তারা প্রমাণ মেলে কিছুক্ষণ বাদেই, ক্রোয়েশিয়ান ফিলিপের গোলে সমতা ফেরে তারা । ৬৮ মিনিটের মাথায় মলিনা নামালেন বাগান জনতার প্রাণভোমরা পেট্রাটসকে। ৭০ মিনিটের মাথায় পাঞ্জাবকে ফের একবার এগিয়ে দেন আর্জেন্টাইন ভিদাল। পেন্ডুলামের মতো যেনো দুলছিল ম্যাচের স্কোরলাইন। ম্যাচের ৮০ মিনিটে মানভীরের হেড পাস থেকে বলটি রিসিভ করে দুর্দান্ত ভাবে দলকে সমতায় ফেরান কামিংস। নির্ধারিত সময় শেষে ম্যাচের ফলাফল ৩ - ৩ থাকায় ডুরান্ডের নিয়ম অনুযায়ী ম্যাচ গড়ায় সরাসরি পেনাল্টি শুটআউটে।
পেনাল্টিতে প্রথমে গোল করেন পাঞ্জাবের ভিনিত রাই। মোহনবাগানের কামিংসের শট পোস্টে লেগে ফিরে আসে। পাঞ্জাবের হয়ে পুলগা ভিদাল গোল করে দলকে ২ - ০ গোলে এগিয়ে দেন। ফিরতি শটে মানভির গোল করে ব্যবধান কমান। এরপর বাকেঙ্গার শটে ৩ - ১ করে পাঞ্জাব। এরপর লিস্টন আরো একবার ব্যবধান কমান বাগানের হয়ে। গোল করতে ভুল করেননি পাঞ্জাবের লুকা মাজেন ও বাগানের দিমি। এই অবস্থায় পেনাল্টি শুট আউটের স্কোর দাঁড়ায় ৪-৩। নিজেদের পঞ্চম শটটি গোলে রাখতে পারলেই সেমিফাইনালে উঠতে পারত পাঞ্জাব। কিন্তু বাগান গোল রক্ষক বিশাল কাইথ শট বাঁচিয়ে দলকে নতুন জীবন উপহার দেন।
পেনাল্টি শুট আউটের ফলাফল ৪-৪ হওয়ায় ম্যাচ গড়ায় সাডেন ডেথে। এবং সেখানেও একটি শট সেভ করেন বাগানের গোলরক্ষক বিশাল। ফিরতি শটে দলকে জয় এনে দেন টম আলড্রেড।
এই ম্যাচ জিতলেও কলকাতার প্রতিবেশী ইস্টবেঙ্গলের মতোই চিন্তায় রাখবে বাগানের রক্ষণভাগ। কার্লেস কুয়াদ্রাতের মত বেশ কিছু পরীক্ষা নিরীক্ষা করতে গিয়েই সাময়িক ভাবে ম্যাচ থেকে হারিয়ে গিয়েছিল বাগান, ঠিক যেমন ভাবে অপর কোয়ার্টার ফাইনালে শিলংয়ে লাজং ম্যাচ হাতছাড়া করেছিল ইস্টবেঙ্গল। ইস্টবেঙ্গলের আক্রমণ ভাবে বৈচিত্রের অভাবের ফলে সেই ম্যাচ মাঠেই ফেলে আসতে হয় ক্লেইটন সিলভাদের। কিন্তু জেসন কামিংস, টম আলড্রেড সমৃদ্ধ বাগান আক্রমণ ভাগের দক্ষতা এদিন সফল হল ম্যাচ জিতে ফিরতে।
একইসঙ্গে চাপের মুখে বিশাল কাইথের অনবদ্য আত্মবিশ্বাসও ভরসা যোগাবে বাগান থিঙ্কট্যাঙ্ককে।
২৭ তারিখ যুবভারতীতে ডুরান্ডের সেমিফাইনাল খেলবে মোহনবাগান। প্রতিপক্ষ ডুরান্ডের শেষ কোয়ার্টার ফাইনালে কেরালা-বেঙ্গালুরু ম্যাচের জয়ী দল।
Comments :0