নাকতলায় ঋত্বিক ঘটকের সিনেমা দেখাতে দেয়নি তৃণমূল। যেই সিনেমা সেদিন প্রদর্শিত হতে দেওয়া হয়নি সেই সিনেমা নিজেদের ফেসবুক পেজ থেকে সম্প্রচার করবে এসএফআই। আজ রাত ৯টায় হবে সম্প্রচার।
সিনেমায় ‘লেনিন’ আছে তাই প্রদর্শনীতে বাধা তৃণমূলের। এরকমই ঘটনা ঘটেছে দক্ষিণ কলকাতার নাকতলা অঞ্চলে। কাকতালীয়ভাবে এসএসি ‘খ্যাত’ মন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায়েরই পাড়ার স্কুল ঐতিহ্যবাহী স্কুল নাকতলা হাইস্কুলে তৃণমূলী হুমকির জেরে বন্ধ হয় সিনেমা প্রদর্শন।
‘নাকতলা সেতু সাংস্কৃতিক সংস্থা’ সামাজিক-সাংস্কৃতিক সংগঠন, যারা সারা বছর সাংস্কৃতিক কর্মকান্ডের সাথে যুক্ত থাকে। সবগুলোতেই অঞ্চলের মানুষের যোগাযোগ থাকে।
এই বছর ঋত্বিক ঘটকের জন্মশতবার্ষিকীতে সংগঠনের পক্ষ থেকে, ১০ ফেব্রুয়ারী, ঋত্বিক মেমোরিয়াল ট্রাস্টের সহযোগে, নাকতলা হাই স্কুলে, তাঁর দুটি ছবি ‘কোমল গান্ধার’ ও ‘আমার লেনিন’ প্রদর্শনের ব্যবস্থা কর হয়। বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষকের থেকে যথাযথভাবে অনুমতিও নেওয়া হয়। তবে প্রদত্ত চিঠিতে কী কী ছবি দেখানো হবে তার উল্লেখ ছিল না, যদিও প্রচারের ব্যানার, লিফলেট ও বিভিন্ন সমাজ-মাধ্যমে এই দুটি ছবির নাম উল্লেখ ছিল। স্কুলের সমস্ত শিক্ষকদেরও এই প্রদর্শনে উপস্থিত থাকার জন্য আমন্ত্রণ জানান উদ্যোক্তারা।
এরপরে, অভিযোগ, গত ৫ ফেব্রুয়ারী স্কুলের প্রধান শিক্ষক হঠাৎ বেঁকে বসেন। তিনি জানান ‘কতিপয় ব্যক্তি তাঁকে বলে গেছেন যে চিত্র- প্রদর্শনী হলে বিদ্যালয়ে ভাঙচুর হবে, তাদের আপত্তি বিশেষ করে ‘আমার লেনিন’- এর বিরুদ্ধে’। তিনি এও বলেন যে, তিনি ‘মনে করেছিলেন যে, চলচ্চিত্র সম্পর্কে আলোচনা হবে, সেজন্য তিনি অনুমতি দিয়েছেন’। তিনি আরও বলেন যে, ব্যানারে যে চলচ্চিত্রের নাম উল্লিখিত হয়েছে, তা তিনি জানতেন না, আপত্তিকারীদের দেখানো মোবাইলের ছবি থেকে জেনেছেন, নামগুলো তাঁকে জানালে ভালো হতো। স্কুলে তিনি চিত্র-প্রদর্শন অনুষ্ঠানটি না করার জন্য বলেন।
এরপরে তাকে অনুরোধ করা হয় যদি ‘আমার লেনিন’ না দেখিয়ে শুধুমাত্র ‘কোমল গান্ধার’ ছবিটি দেখালে অনুমতি মিলবে কিনা। তিনি জানান, কোন প্রদর্শনই করা যাবে না।
এরপর স্থানীয় ক্লাব বহ্নি -র শরণাপন্ন হলে তারাও প্রথমে বলেন যে, তাঁদের উপরও চাপ আছে, ‘আমার লেনিন’ ছাড়া অন্য ছবির প্রদর্শন করা যেতে পারে, পরে তাঁরা পিছিয়ে আসেন, জানান যে, তাঁদের পক্ষে কোনো ছবিই প্রদর্শনের অনুমতি দেওয়া সম্ভব নয়।
ফলে সংগঠনের তরফে প্রদর্শন আপাতত স্থগিত রাখার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়, জানিয়েছেন সংগঠকরা।
এসএফআই রাজ্য সম্পাদক দেবাঞ্জন দে বলেন, তৃণমূল ওদের যা কাজ তাই করেছে। একটা সুস্থ সমাজ গড়ার লক্ষ্যে আমরা লড়াই করছি সেই লক্ষ্যে আমরা অবিচল থাকব।
Comments :0