Teacher recruitment movement

রাজ্যের নীতিতেই ধ্বংস হচ্ছে স্কুল, ক্ষোভ মঞ্চের

রাজ্য কলকাতা

ssc recruitment bengali news অবস্থান মঞ্চে রাহুল অরুণোদয় বন্দোপাধ্যায়

সরকার শিক্ষক নিয়োগ করছে না। তার প্রভাব পড়ছে পঠন পাঠনে। অভিভাবকরা বাধ্য হয়ে পড়ুয়াদের ভর্তি করছেন বেসরকারী স্কুলে। পড়ুয়া কমছে সরকারি স্কুলে। উল্টোদিকে পড়ুয়া কমার অজুহাতকে সামনে রেখেই ৮ হাজার সরকারি স্কুলে তালা ঝোলানোর বন্দোবস্ত করেছে রাজ্য সরকার। মঙ্গলবার এই মর্মে ক্ষোভ জানাল ওয়েস্ট বেঙ্গল নিউ এসএসসি-এসএলএসটি গ্রুপ সি/ডি একতা মঞ্চ। এদিন তাঁদের অবস্থান মঞ্চে এসে সংহতি জানালেন অভিনেতা রাহুল অরুণোদয় বন্দোপাধ্যায়।

অবিলম্বে স্কুল সার্ভিস কমিশনের মাধ্যমে শিক্ষক নিয়োগের দাবিতে সরব হয়েছেন স্কুল সার্ভিস কমিশনের চাকরিপ্রার্থীরা। সেই দাবিতে  মঞ্চ গড়ে ৩০ দিন ধরে শহীদ মিনার এবং মাতঙ্গিনী হাজরার মূর্তির মাঝামাঝি জায়গায় অবস্থান চালাচ্ছেন তাঁরা।

অবস্থানে বসার আগে ৩ বছর ধরে ধারাবাহিক ভাবে আন্দোলন করেছেন চাকরিপ্রার্থীরা। কিন্তু তারপরেও স্কুল সার্ভিস কমিশন কিংবা সরকারের তরফে কোনও হেলদোল নজরে আসেনি। বরং এসএসসি চেয়ারম্যান একাধিকবার তাঁদের নিয়োগের মিথ্যা আশ্বাস দিয়েছেন। ২০২১ নির্বাচনের আগে মমতা ব্যানার্জিও তাঁদের নিয়োগের আশ্বাস দিয়েছিলেন। কিন্তু কোনও ক্ষেত্রেই কাজের কাজ কিছু হয়নি।

এর পরবর্তীতে মঞ্চের তরফে অবস্থানে বসার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। কিন্তু রাজ্য প্রশাসনের তরফে তাঁদের বাধা দেওয়া হয়। অবশেষে কলকাতা হাইকোর্টের হস্তক্ষেপে অবস্থানে বাসর অনুমতি মেলে।

মঞ্চের তরফে জানানো হয়েছে, ২০১১ সালের পরে মাত্র ১ বার স্কুল সার্ভিস কমিশনের মাধ্যমে শিক্ষক নিয়োগ হয়েছে রাজ্যে। কিন্তু সেখানেও দুর্নীতির অভিযোগ ওঠায় নিয়োগ প্রক্রিয়া স্থগিত হয়ে যায়। অপরদিকে দীর্ঘদিন নিয়োগ না হওয়ায়, স্কুল শিক্ষা দপ্তরের অধীনে শূন্যপদের সংখ্যা ৩ লক্ষ ছাড়িয়ে। এর মধ্যে প্রাথমিক, উচ্চ প্রাথমিক এবং নবম-দশম ও একাদশ-দ্বাদশে শূন্যপদের সংখ্যা ১ লক্ষেরও বেশি।

অবস্থানকারীরা জানাচ্ছেন, রাজ্যে ৭৪ হাজার সরকারি বিদ্যালয় রয়েছে। তার মধ্যে ৮ হাজার  বিদ্যালয়ে পড়ুয়ার সংখ্যা ৩০’র কম। সরকারি পরিসংখ্যান এই কথা বললেও বাস্তবে এই ধরণের স্কুলের সংখ্যা ১৪ হাজারের মতো। অর্থাৎ রাজ্যের ২৫ শতাংশের কাছে স্কুলে পর্যাপ্ত পরিমাণে পড়ুয়া নেই। ১৯৭৭ সাল থেকে ২০১১ সাল অবধি রাজ্যের বামফ্রন্ট সরকার ৩৫ হাজার স্কুল তৈরি করেছিল। বর্তমান সরকার বিগত ১২ বছরে প্রায় ১৪ হাজারের কাছে স্কুলে তালা ঝোলানোর পরিস্থিতি তৈরি করেছে।

আন্দোলনকারীদের তরফে তারিকুল আনওয়ার জানিয়েছেন, সরকার শিক্ষক নিয়োগ করছে না। অধিকাংশ স্কুলে অঙ্ক, বিজ্ঞান কিংবা ইংরেজির মতো বিষয়ে কোনও শিক্ষক নেই। বাধ্য হয়ে পড়ুয়াদের অন্যত্র, বিশেষ করে বেসরকারি স্কুলে ভর্তি করাচ্ছেন অভিভাবকরা। সরকার এই সমস্যার সমাধান না করে তথ্যের কারচুপি করছে। পড়ুয়া সংখ্যার ঘাটতি দেখিয়ে স্কুল বন্ধ করতে চাইছে। অথচ সরকারের ভুল সিদ্ধান্তের ফলেই স্কুলে স্কুলে পড়ুয়া সংখ্যার ঘাটতি তৈরি হয়েছে।

রাহুল অরুণোদয় বন্দোপাধ্যায় বলেন, ৭ বছর ধরে স্কুলে নিয়োগ নেই। শিক্ষক শূন্য পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে রাজ্যে। মাধ্যমিকে বিপুল সংখ্যক পড়ুয়া কমেছে এইবার। এই দুরবস্থা কাটাতে গোটা ব্যবস্থার পরিবর্তন দরকার।

Comments :0

Login to leave a comment