খবরের শিরোনামে এবার বাদুড়িয়া। আক্রান্ত তৃণমূলের বসিরহাট সাংগঠনিক জেলার নেত্রী। অভিযোগের তীর দলেরই পঞ্চায়েত উপপ্রধানের বিরুদ্ধে। ঘটনার পর পরই বাদুড়িয়া থানায় উপপ্রধানের বিরুদ্ধে অভিযোগ জানিয়েছেন আক্রান্ত তৃণমূল নেত্রী। মঙ্গলবার ঘটনা জানাজানি হতেই শোরগোল পড়ে গেছে বাদুড়িয়া জুড়ে। সাম্প্রতিক সময়ে রাজ্যের বিভিন্ন প্রান্তে তৃণমূলের হাতে খুন আক্রান্ত হচ্ছেন তৃণমূলের সাংগঠনিক প্রশাসনিক স্তরের নেতা নেত্রীরা। ক্রমান্বয়ে দীর্ঘ হচ্ছে তালিকা। সোমবার রাতে ঘটে যাওয়া ঘটনাও চলে এলো সেই তালিকায়।
এমনিতেই বাদুড়িয়ায় তৃণমূল গোষ্ঠীদ্বন্দ্বে দীর্ণ। জানা গিয়েছে, সোমবার রাতে বাড়ি ফেরার সময় বসিরহাট সাংগঠনিক জেলার সাধারণ সম্পাদিকা আক্রান্ত হন। তার শ্লীলতাহানি করা হয়, এমনকি তার দেহরক্ষীদেরও মারধর এবং গাড়ি ভাঙচুর করা হয় বলে অভিযোগ।
পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে ইতিমধ্যে বাদুড়িয়া থানায় লিখিত অভিযোগ দায়ের হয়েছে। ঘটনাটি ঘটে বাদুড়িয়ার শিমুলিয়া এলাকার।
তৃণমূলের বসিরহাট সাংগঠনিক জেলার সাধারণ সম্পাদিকা সিরিয়া পারভিন। তিনি অভিযোগে জানিয়েছেন তার গাড়ির সামনে একটি বাচ্চা চলে আসে। তিনি গাড়ি থামিয়ে বাড়ির লোকজনদের বলেন এভাবে রাস্তায় বাচ্চাদের ছেড়ে দিলে যখন তখন বিপদ ঘটে যেতে পারে। ঘটনাস্থলে তখন সেখানে উপস্থিত ছিলেন তৃণমূল কংগ্রেস পরিচালিত যশাইকাটি আটঘরা গ্রাম পঞ্চায়েতের উপপ্রধান তারিক হাসান। তৃণমূল নেত্রীর এহেন কথায় উত্তেজিত হয়ে পড়ে স্হানীয় লোকজন।তারা গাড়ি আটকে ঘিরে ধরে গাড়ি ভাংচুর করে। তাকে গাড়ি থেকে টেনে বের করে চড় মারে।তার শ্লীলতাহানি করা হয়। তৃণমূল নেত্রীর কথায় সবটাই পূর্ব পরিকল্পনা করে উপপ্রধান এই ঘটনাটি ঘটিয়েছেন।
তারিক হাসান আবার তৃণমূলের বাদুড়িয়া উত্তর ব্লকের সভাপতি বুরহানুল মুকাদ্দীন ওরফে লিটনের ঘনিষ্ঠ বলেই পরিচিত।
যদিও এই বিষয়ে যার বিরুদ্ধে অভিযোগ সেই যশাইকাটি আটঘরা গ্রাম পঞ্চায়েতের উপপ্রধান তারিক হাসান বলেন, আমার বিরুদ্ধে যে অভিযোগ উনি করেছেন সেটা পুরোটাই মিথ্যে। তার কারণ উনিও আমাদের দলেরই একজন নেত্রী। আমিও দলের একজন সৈনিক। আমি কেন ওনার উপরে এরকমভাবে আক্রমণ করবো।পাশাপাশি এটাও বলেন যে,তিনি খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে যান সমস্যার সমাধান করতে। তখন সেখানে বাদুড়িয়া থানার পুলিশ ছিল।তাদেরই সামনে সব ঘটেছে।অতএব পুলিশি সব সবকিছু জানে এবং তারাই বলতে পারবে। সিরিয়া পারভীন আমার নামে মিথ্যা অপবাদ দিচ্ছেন।
উল্লেখ্য ,এই সিরিয়া পারভীন একসময় বিজেপি করতো। ২০২৪ সালে যখন সন্দেশখালি উত্তাল সেই সময় বিজেপির রাজ্য সভাপতি সুকান্ত মজুমদারের সাথে টাকিতে পুলিশের গায়ের উপর উঠে পুলিশের সঙ্গে ধস্তাধস্তি করতে দেখা গিয়েছিল এই সিরিয়া পারভীনকে। তারপর সুকান্ত মজুমদার গাড়ির বনেটের উপর পড়ে যান এবং অসুস্থ হয়ে পড়লে পরবর্তীতে তাকে বসিরহাট হাসপাতাল এবং পরে কলকাতায় বেসরকারি হাসপাতালে চিকিৎসার পর তিনি সুস্থ হন। এই ঘটনার কয়েক মাস পরে অর্থাৎ লোকসভা ভোটের ঠিক আগে সিরিয়া পারভীন তৃণমূলে যোগ দেয়।
Comments :0