Migrant Worker Death

ফের ভিন রাজ্যে কাজে গিয়ে পরিযায়ী শ্রমিকের মৃত্যু, ফিরল দেহ

রাজ্য

মাত্র ৮দিনের মধ্যে দুই পরিযায়ী শ্রমিকের কফিনবন্দী দেহ ফিরলো মাথাভাঙায়! গত ৬ জুলাই হায়দ্রাবাদে নির্নিয়মান বহুতলে কাজ করতে গিয়ে মাথায় লোহার পাইপ পড়ে মারা গিয়েছিলেন কুশল দাস। মাথাভাঙা শহরের প্রমোদ নগরের বাসিন্দা কুশল দাস নামে ওই  যুবকের প্রাণহীন দেহ ফিরেছিল ৯ জুলাই।
১৩ জুলাই ২২ বছরের পরিযায়ী শ্রমিকের মৃত্যু হল ভুটানে। নির্নিয়মান বাড়ির কাজ চলছিল ভুটানে। শনিবার সেই বাড়ির একাংশ ধসে ভেঙ্গে পড়ে। টানা বৃষ্টির কারণে ভুটানে কিছুদিন ধরেই ধস নামছিল। সেই ধসের জেরেই নির্নীয়মান বাড়ির একাংশ ভেঙ্গে পড়ে। আর তাতেই চার শ্রমিক চাপা পড়ে যায়। তিনজনকে সহকর্মীরা ও ভুটানের উদ্ধারবাহিনী গুরুতর জখম অবস্থায় উদ্ধার করতে সক্ষম হলেও ২২ বছরের সৌরভ বর্মনের নিথর দেহ ধস সরিয়ে উদ্ধার হয়। পরে হাসপাতালে চিকিৎসকেরা তাঁকে মৃত বলে ঘোষণা করেন। গুরুতর জখম অন্য তিনজনের চিকিৎসা চলছে ভুটানের হাসপাতালে। জখম তিনজনও কোচবিহার জেলার বাসিন্দা।
সোমবার সৌরভের কফিনবন্দী মৃতদেহ নিয়ে তাঁর কাকা মাথাভাঙা-২ ব্লকের লতাপাতার বাড়িতে ফিরেছেন। মৃত যুবকের বাবা কৈলাশ বর্মন এদিন বলেন, ‘‘মাত্র ৯ দিন আগে ঠিকাদারের সাথে আমার ছেলে ভুটানে কাজে গিয়েছিল। সামান্য জমিতে সংসার চালানো কঠিন হয়ে পড়েছে। এক প্রকার বাধ্য হয়েই ও ভুটানে কাজ করতে গেয়েছিল। আমার এক ভাই ওই কোম্পানীতেই কাজ করে তাই ওকে বাধা দিই নি। ছেলেকে হারিয়ে দিশেহারা বাবা। মৃত যুবকের মা সবিতা বর্মন নিজের তরতাজা ছেলের এই অস্বাভাবিক মৃত্যুর খবরে অসুস্থ হয়ে পড়েছেন। কিছুক্ষন পর পরই জ্ঞান হারাচ্ছেন তিনি।
যুবকের কাকা প্রসেনজিত বর্মন বলেন, ‘‘আমার সাথেই ভাইপো কাজ করতো। ঘটনার দিন বেলা আড়াইটে নাগাদ আমরা এক সাথে বসে দুপুরের খাবার খেয়েছি। তখনও আন্দাজ করতে পারি নি এরকম মর্মান্তিক ঘটনা ঘটবে।
আমি একই বিল্ডিংয়ের অন্য দিকে কাজ করছিলাম। বিকেল ৪ টা নাগাদ হঠাৎ হৈচৈ শুনে সবাই নিচে নেমে প্রত্যক্ষদর্শী অন্য শ্রমিকদের থেকে জানতে পারি আমার ভাইপো যেদিকে কাজ করছিল সেইদিকে বিল্ডিংয়ের একটা অংশ ধসে ভেঙ্গে পড়েছে। ওই দিকে বিল্ডিংয়ের ঠিক নিচে আমার ভাইপো সহ ৪ জন শ্রমিক দাঁড়িয়েছিল কাজের জন্য। ওরা প্রত্যেকেই নাকি চাপা পড়েছে। সব শ্রমিকেরা মিলে উদ্ধার কাজে হাত লাগাই। আসে ভুটানের উদ্ধারকর্মীরাও। তিনজনকে জখম অবস্থায় উদ্ধার করা গেলেও ভাইপোর প্রাণহীন দেহ উদ্ধার হয়। এরপর ময়নাতদন্ত ও প্রশাসনের নিয়ম কানুন শেষ করে ভাইপোর কফিন বন্দী দেহ নিয়ে বাড়ি ফিরলাম।

Comments :0

Login to leave a comment