গত বছর একনাথ শিন্ডে গোষ্ঠীর কাছে সহকর্মীদের খুইয়েছিলেন, নির্বাচন কমিশন দলীয় নাম 'শিবসেনা' এবং ধনুক ও তীর নির্বাচনী প্রতীকও কেড়ে নেয়। 'আসল' শিবসেনা এবং প্রতিষ্ঠাতা বাল ঠাকরের উত্তরাধিকারের জন্য লড়াই চলাতে উদ্ধব গোষ্ঠী নির্বাচন কমিশনের আদেশের ওপর স্থগিতাদেশ চেয়ে সুপ্রিম কোর্টে আবেদন করেছে।
কমিশনের আদেশ অনুসারে, শিন্ডে গোষ্ঠী এখন নিরঙ্কুশ নিয়ন্ত্রণ প্রতিষ্ঠা করতে শিবসেনা (উদ্ধব) এর অন্তর্গত শাখার সম্পত্তি, কোষাগার এবং যাবতীয় সংগঠনের উপর দাবি করতে পারে। একমাত্র শিবাই সেবা ট্রাস্ট দখল করতে পারবে না শিন্ডে গোষ্ঠী, যার প্রধান থ্যাকারে পরিবারের অনুগত সুভাষ দেশাই। মুম্বাইয়ের একজন আইনজীবী যোগেশ দেশপান্ডের দায়ের করা একটি সাম্প্রতিক অভিযোগ থেকে জানা গেছে যে শিবসেনা ভবন, দলের সদর দপ্তর, শিভাই সেবা ট্রাস্টের মালিকানাধীন, ফলে এগুলোর ওপর নিয়ন্ত্রণ কায়েম করা শিন্ডে গোষ্ঠীর পক্ষে মুশকিল।
মহারাষ্ট্র নবনির্মাণ সেনা (এমএনএস) নেতা সন্দীপ দেশপান্ডের টুইট করা মুম্বাই শহরের সার্ভে রেজিস্টারের নথি অনুসারে, উদ্ধব থ্যাকারে ছাড়াও ট্রাস্টিদের মধ্যে লীলাধর ডাকে, দিবাকর রাওতে, সুভাষ দেশাই, দক্ষিণ মুম্বইয়ের সাংসদ অরবিন্দ সাওয়ান্ত এবং মুম্বাইয়ের প্রাক্তন মেয়র বিশাখা রাউতের মতো প্রবীণ নেতারা রয়েছেন। কয়েক দশক ধরে একটি পাবলিক ট্রাস্টকে রাজনৈতিক কার্যালয় হিসাবে ব্যবহার করা, মহারাষ্ট্র পাবলিক ট্রাস্ট আইনানুসারে অসঙ্গতীপূর্ণ এবং যার জেরে শিব সেনার সম্পত্তির উপর দুই গোষ্ঠীরই দাবি আদায় খুব সহজ হবে না। প্রকৃতপক্ষে, উদ্ধব গোষ্ঠীকে তাদের দাবি অব্যাহত রাখতে যাবতীয় অভিযোগের জবাব দিতে হবে।
অনেক শাখা বা স্থানীয় অফিস, যা শিবসেনার স্নায়ু কেন্দ্র, শিবাই সেবা ট্রাস্টে স্থানান্তরিত হবে।
একইভাবে, দলের মুখপত্র সামনা এবং কার্টুন ম্যাগাজিন মারমিক, যা শিব সেনা প্রতিষ্ঠাতা বাল থ্যাকার শুরু করেছিলেন, কোনও রাজনৈতিক দলের মুখপত্র বা মালিকানাধীন নয়, বরং প্রবোধন প্রকাশন নামে একটি ট্রাস্টের মালিকানাধীন। যার ফলে বর্তমান সংকট থেকে এগুলি সুরক্ষিতই থাকবে।
সেনার সহযোগী সংস্থা যেমন স্থানিয় লোকাধিকার সমিতি এবং ভারতীয় শ্রমিক সেনা ইউনিয়নের আওতায় পড়ে, কোনো রাজনৈতিক সংগঠন নয়। সুতরাং, এগুলির উপর দাবি আলাদাভাবে ইউনিয়ন এবং শ্রম আইনের অধীনে যাচাই করতে হবে।
১৭ ফেব্রুয়ারী, ২০২২-এ শিবসেনা নির্বাচন কমিশনের কাছে দাখিল করা ২০২০-২১-এর বার্ষিক অডিট রিপোর্ট প্রকাশ করেছে যে দলটি অনুদান, সাবস্ক্রিপশন এবং বিভিন্ন প্রকাশনা বিক্রির মাধ্যমে ১৩ কোটি টাকার বেশি আয় করেছে। তবে, একনাথ শিন্ডে স্পষ্ট করেছেন যে উদ্ধব সেনার হাতে থাকা কোনও সম্পত্তির উপর তারা দাবি করবে না।
‘‘যারা সম্পত্তির লোভে উৎফুল্ল হয়েছিল তারা ২০১৯ সালে একটি ভুল পদক্ষেপ নিয়েছিল এবং ভোটারদের সাথে বিশ্বাসঘাতকতা করেছিল। যাইহোক, আমরা দলের সম্পত্তি এবং তহবিলের প্রতি লোভী নই। আমরা বালাসাহেব থ্যাকারের আদর্শকে এগিয়ে নিয়ে যেতে চাই,’’ শিন্ডে বলেছেন।
Comments :0