লাগাতার লড়াইয়ের ফসল পেলেন চা বাগানের শ্রমিকরা। পাঁচদিন আলোচনার পর চা বাগান শ্রমিকরা ১৯ শতাংশ বোনাস আদায় করতে সক্ষম হলেন। বুধবার চা শ্রমিক সংগঠনসূহের জয়েন্ট ফোরামের পক্ষ থেকে মেটেলী ব্লকের বাতাবাড়ী চা বাগানে ঐক্যবদ্ধ আন্দোলনের জন্য শ্রমিকদের ধন্যবাদ জানানো হয়।
তরাই-ডুয়ার্সের প্রায় ৬০টি বাগানে ফয়সালা হয়নি। যে দু'টি মালিক সংগঠন বৈঠকে তাদের সদস্যরা চালায় এই ৬০টি বাগান।
টি অ্যাসোসিয়েশন অব ইন্ডিয়া কলকাতায় সংবাদসংস্থা পিটিআই’কে বলেছে যে ১৯ শতাংশ বোনাসের দাবি মেনে নেওয়া হয়েছে। ডুয়ার্স এবং তরাইয়ে ২০২২-২৩ অর্থবর্ষে এই হারে বোনাস দেওয়া হবে। তবে দার্জিলিঙে চা মালিকরা ৮.৩৩ শতাংশের বেশি বোনাস দিতে রাজি নয়। ২০২১-২২ অর্থবর্ষে ২০ শতাংশ বোনাস আদায় করেছিলেন চা শ্রমিকরা।
গত কয়েক সপ্তাহ ধরে লাগাতার ২০ শতাংশ বোনাসের দাবিতে উত্তরবঙ্গের পরপর চা বাগানে আন্দোলন চালিয়ে গিয়েছেন চা শ্রমিকরা। দার্জিলিঙ বাদে উত্তরবঙ্গে চালু চা বাগানের সংখ্যা ১৩৫। বাগান কর্তৃপক্ষের সংগঠন টি অ্যাসোসিয়েশন অব ইন্ডিয়ার সেক্রেটারি জেনারেল প্রবীর ভট্টাচার্য পিটিআই’কে বলেছেন, মালিকপক্ষ এবং শ্রমিক সংগঠনগুলি বোনাসের এই হারে সহমত হয়েছে।
চেউলীবাড়ি চা বাগানে শ্রমিকরা এদিনই কাজ বন্ধ করে ২০ শতাংশ বোনাসের দাবিতে আমবাড়ি জলপাইগুড়ির রাস্তায় পথ অবরোধ করেন।
চা শ্রমিকদের জয়েন্ট ফোরামের পক্ষ থেকে চা বাগান মজদুর ইউনিয়নের কর্ণবাহাদুর লামা,সিতলাল ওঁরাও ও বিটিডব্লুইউ’র পক্ষে রাজকুমার পাশোয়ান মেটেলী ব্লকের বাতাবাড়ী চা বাগানে বক্তব্য রাখেন। তাঁরা শ্রমিকদের বলেন যে আপনাদের লাগাতার আন্দোলনের জন্য ১৯ শতাংশ বোনাস আদায় করতে পেরেছেন। তবে এখনও লড়াই বাকি আছে। জমির পাট্টা ও ন্যূনতম মজুরির লড়াই চালিয়ে যেতে হবে।
জলপাইগুড়ি জেলার রাজগঞ্জ ব্লকের বাগডোগরা সংলগ্ন এলাকায় চেউলীবাড়ি চা বাগানের শ্রমিকেরা সকাল থেকে শুরু করেন পথ অবরোধ, বিক্ষোভ। হাজির হয় বেলাকোবা ফাঁড়ির পুলিশ। লাল পতাকা হাতে সিআইটিইউ নেতা ও শ্রমিকদের দাবি, যতক্ষণ পর্যন্ত ২০ শতাংশ বোনাস না দেওয়া হবে ততক্ষণ পর্যন্ত চলবে তাঁদের এই আন্দোলন।
গত ৩ অক্টোবর তারিখ থেকে বোনাসের দাবিতে গেট মিটিং প্রতিদিন চলেছে ১০ অক্টোবর পর্যন্ত। চার দফা বৈঠকেও বোনাসের সিদ্ধান্ত না হওয়ার পর মঙ্গলবারের সভায় আইটিপিএ অংশগ্রহণ করেনি। চেউলীবাড়ি চা বাগানের মালিক আইটিপিএ’র সদস্য। এজন্য শ্রমিকদের মধ্যে ক্ষোভ তৈরি হয়।
বুধবার সকালে আন্দোলনের নেতৃত্বে ছিলেন সিআইটিইউ নেতা অনুকূল বর্মন, খরেন রায়, নিত্য রায়। অবরোধ চলকালীন রাজগঞ্জ থানা ও আমবাড়ি পুলিশ ফাঁড়ির পুলিশ প্রশাসনের পক্ষে শ্রমিক ইউনিয়নের নেতৃত্বের সঙ্গে আলোচনা করে বিষয় টি নিয়ে উচ্চতর কতৃপক্ষের সঙ্গে আলোচনা করে দাবিগুলো সুরাহার আশ্বাস দিলে অবরোধ তুলে নেওয়া হয়। নেতৃবৃন্দ বলেন দাবি আদায় না হলে শ্রমিকদের আন্দোলন চলবে।
Comments :0