আবারও এক পরিযায়ী শ্রমিকের মৃত্যু হল ভিন রাজ্যে। সামান্য সুইপারের কাজ করতে গিয়ে এই মৃত্যু কিছুতেই মানতে পারছেন না পরিবারের লোকেরা। ঘটনা পূর্ব মেদিনীপুর জেলার। মহিষাদলের বাসিন্দা ওই পরিযায়ী শ্রমিকের মৃত্যু হয়েছে গুজরাটে। মৃতের নাম সুব্রত দাস(৩৭)। বাড়ি মহিষাদলের গড়কমলপুর পঞ্চায়েতের মধ্যহিংলি এলাকায়। পরিবার সূত্রে জানা গেছে ছমাস আগে তিনি সুইপারের কাজ পেয়ে গুজরাটে যান। রবিবার সকাল সাড়ে ৬টা নাগাদ সুব্রতর পরিবারের কাছে তাঁর মৃত্যু সংবাদ আসে। যে সংস্থায় তিনি কাজ করতেন তার ম্যানেজার ফোন করে মৃত্যু সংবাদ দেন।
শনিবার রাতে সুব্রতকে ফোনে না পেয়ে তাঁর স্ত্রী উদ্বিগ্ন হয়ে এক সহকর্মীকে ফোন করেন। ওই সহকর্মী রাত সাড়ে ৯টা নাগাদ সুব্রতর কর্মস্থলে গিয়ে দেখেন তিনি গভীর ঘুমে আচ্ছন্ন। তার আগে ৮টা নাগাদ সুব্রত অসুস্থ বোধ করায় তাঁকে ওই কোম্পানির এক চিকিৎসক প্রাথমিক চিকিৎসা করেন। সঙ্গে সঙ্গে স্থানীয় একটি হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। তাঁকে আইসিইউতে তৎক্ষনাৎ ভর্তি করা হয়। পরে সকালে ওই পরিযায়ী শ্রমিকের মৃত্যু সংবাদ আসে। প্রথমে কোম্পানির তরফে দেহ মহিষাদলে পাঠানোর জন্য ৭০-৮০ হাজার টাকার কথা বলা হয়েছিল। পরে তারা দিনভর যোগাযোগ বন্ধ করে দেয়। পরে বিকেল নাগাদ পরিবারকে নিজেদের খরচে গুজরাট থেকে দেহ নিয়ে আসতে বলে। এজন্য বিরাট খরচ হবে। পরিবার জানিয়েছে, এত টাকা খরচ করার সামর্থ তাদের নেই। ফলে ওই পরিযায়ী শ্রমিকের দেহ বাড়ি ফেরানো নিয়ে টানাপোড়েন শুরু হয়েছে। গুজরাটের ওই সংস্থা জানিয়েছে, তারা চারদিনের জন্য মর্গ ভাড়া নিয়েছে। তারপর দেহ না নিয়ে এলে ওখানেই সৎকার করে দেবে। কিন্তু পরিযায়ী শ্রমিকের পরিবারের অবস্থা খুবই খারাপ। এই পরিস্থিতিতে প্রশাসনের দ্বারস্থ হয়েছে পরিবারের লোকজন। বিধায়ক ও সাংসদকে বিষয়টি জানানো হয়েছে পরিবারের তরফে বলে বলেন পরিবারের লোকেরা।
মৃত পরিযায়ী শ্রমিকের স্ত্রী সুনিতা দাস বলেন, আমি জানতে পারি আমার স্বামীর পেটে ব্যথা হয়েছে বলে শুয়ে আছে। পরে কোম্পানির ম্যানেজার ফোনে বলে হাসপাতালে ভর্তি আছে স্যালাইন দেওয়া হয়েছে এখন কিছু বলা যাবে না। সকাল বেলা আবারও ফোন করে বলা হয় যে আমার স্বামী মারা গেছে। কিভাবে মারা গেল তার কারণ আমরা জানতে পারিনি। আমাদেরকে জানানো হয়নি।" তিনি আরও বলেন এখানে তো সবসময় কাজ হয় না। বাঁচতে হবে তো। বাইরে গেলে একটু বেশি টাকা রোজগার হবে সেই আশায় গিয়েছিল। এখন আমরা কি করব কিভাবে সংসার চলবে?"
Comments :0